বিকল্প কর্মসংস্থান চান : মনপুরায় মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা বেকার জেলেরা 

রাকিবুল হাসান ,মনপুরা ভোলার সংবাদদাতা ::
মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১লা মার্চ থেকে ৩০শে এপ্রিল দুই মাসের জন্য ভোলার মনপুরা মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

ইলিশ সম্পদ রক্ষায় মনপুরা মেঘনা নদীতে ভোলা ইলিশা হতে চরপিয়াল পর্যন্ত (মেঘনা নদী শাহবাজপুর চ্যানেল  ৯০ কিঃ মিঃ) অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।১লা মার্চ মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে দুইমাস নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে।

মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানাযায়, আগামী দুই মাস মেঘনা  ৯০ কিঃ মিঃ নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধসহ জাটকা ধরা, পরিবহন, বাজারজাত ও মজুত নিষিদ্ধ থাকবে। এই আইন অমান্য করলে উপজেলা প্রসাশন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,মনপুরার চতুর্পাশে মেঘনা নদী।১পাশে ৯০ কিঃ মিঃ সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে জেলেরা নৌকা, জালসহ সব কিছু দুই মাসের জন্য জেলেদের নিদিষ্ট স্থানে রাখছেন।দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকায় এই উপজেলার লক্ষাধিক জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে আছে এসব জেলেরা।

এছাড়া এনজিও কিস্তি পরিশোধ নিয়ে আছে বিপাকে। নিষেধাজ্ঞার সময় তারা অন্য কোনো কাজ করতে না পারায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ তাদের জন্য ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ’ হয়ে দাঁড়ায়। সংসারের খরচ চালিয়ে প্রতি সপ্তাহে কিস্তি পরিশোধ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর এতেই অনেক জেলে বাধ্য হয়ে এ সময় নদীতে মাছ শিকারে নেমে পড়েন।

তারা আরো বলেন, যখন নদীতে মাছ ধরতে পারি তখন আমাদের কিস্তি পরিশোধ করতে কোনো কষ্ট হয় না। কিন্তু যখন অভিযান চলে বা নিষেধাজ্ঞা চলে তখন আমরা কিস্তি দেবো কিভাবে। নিজেদের সংসার চালাইতেই কষ্ট হয়ে যায়।

নিষেধাজ্ঞাকালীন সরকারের বরাদ্দকৃত প্রণোদনার চাল দিয়ে থাকে।চাল হলে কি সংসার চলে?? তাই বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও চালের পরিবর্তে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিবন্ধিত জেলেদের নগদ টাকা দেওয়া হলে তারা উপকৃত হতেন।

উপজেলা জনতা বাজার  মাঝঘাট এলাকার জেলে সিদ্দিক, রফিক,সাদ্দাম বলেন, “যেহেতু দুই মাস তাদের উপার্জন থাকবে না, তাই দ্রুত যেন তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া চাল বিতরণ করা হয়। সেই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময় বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির টাকা আদায় বন্ধ রাখতেও অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন জানান, দুই মাস নিষেধাজ্ঞাকালীন নিবন্ধিত ১০ হাজার ৫৬০ জেলে  রয়েছে এই উপজেলা।তবে এই জেলের জন্য এখনো প্রণোদনার বরাদ্দ হাতে পাই নি।তবে সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হলে। যত দ্রুত সম্ভব উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাথে কথা বলে জেলেদের এসব চাল বিতরণ করবো।