রায়পুরে রাস্তা বন্ধের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

মোঃ হৃদয় হোসেন, রায়পুর প্রতিনিধি : :

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এল কে এইচ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তা বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাকরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে বিদ্যালয় সংলগ্ন মোল্লারহাট-লক্ষ্মীপুর বেড়িবাঁধ সড়কে তাঁরা মানববন্ধন করে এ দাবি জানায়। ওই সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির লোকজনসহ প্রায় ৫ শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

এল কে এইচ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ১৯৯৩ সনে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই সময় থেকেই যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা ব্যবহার হয়ে আসছে। ৭/৮ বছর আগে ওই রাস্তায় সরকারিভাবে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ইটের সলিং করে দেওয়া হয়। করোনা মহামারির সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে জনৈক রাসেল রাস্তা সংলগ্ন তাঁর জমিটি বালু দ্বারা ভরাট করে উন্নয়ন করতে গিয়ে বিদ্যালয়ের রাস্তার ইট তুলে সেটিও উঁচু করে নেন। নিজের জমিতে কাজ করতে গেলে লোক দিয়ে আবারো রাস্তার সলিং করে দেবেন বললেও প্রতিশ্রুতি দেন। এখন তিনি তা অস্বীকার করে রাস্তাটি নিজের দাবি করে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন। আমরা বাঁধা দেওয়ায় উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে নানান মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। সড়কের মুখে প্রায় ৩০ বছর ধরে টানানো আমাদের সাইনবোর্ডটি এখনো সেখানে দাঁড়ানো রয়েছে।

অভিভাক ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মোঃ বাবুল মোল্লা বলেন, প্রতিষ্ঠানটি চরাঞ্চল এলাকার একমাত্র উচ্চ শিক্ষার মাধ্যম। এখানে আমাদের সন্তানরাই পড়ালেখা করে। প্রায় ৩০ বছর ধরেই এ রাস্তা দিয়ে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চলাচল করে আসছেন। জমি দাম বাড়ায় রাসেল বিদ্যালয়ের রাস্তাটি দখল করার অপচেষ্টা করছে। আমাদের জীবন থাকতে আমরা প্রতিষ্ঠানের কোনো ক্ষতি হতে দেবো না।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করার কারণ নিয়ে কথা হয় শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম, শান্তা আক্তার, উম্মে কুলসুম, সোহেল হোসেন, শাহনেওয়াজ সৌরভ, জিহাদ হোসেন, হাসান আল বান্নার সঙ্গে। তারা বলেন, করোনার আগেও আমরা নিয়মিত এই রাস্তা দিয়েই বিদ্যালয়ের প্রবেশ ও বের হতাম। নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করার কথা বলে এভাবে আমাদের রাস্তাটি দখল করে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে জেনে আমরা ব্যথিত। প্রতিষ্ঠানটি আামাদের চরাঞ্চলের গর্ব। আমরা চাই আমাদের বিদ্যালয়ের রাস্তাটি সচল থাকুক। কোনো চাপ বা হুমকি আমাদেরকে বিদ্যালয়ের স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারবেন না। আমরা আমাদের রাস্তা সচল দেখতে চাই।

অভিযুক্ত মোঃ রাসেল বলেন, বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো রাস্তা না থাকায় এতোদিন আমার জমিতে রাস্তা করে তারা যাতায়াত করছিল। এখন পাশেই সরকারি পাকা রাস্তা হয়েছে। এজন্য আমি আমার জমিতে থাকা রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছি। তাঁরা আমার জমি থেকে গাছ ও ফসল নষ্ট করে সেখানে ইট বিছিয়ে দিয়েছে। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক জোরপূর্বক আমার জমিটি দখল করে রেখেছেন।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মনির হোসেন মোল্লা বলেন, বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে রাস্তাটি করা হয়েছে। পাশের জমির উন্নয়ন করতে গিয়ে অভিযুক্ত রাসেল ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের রাস্তাটি ভরাট করে নেয়। ওই সময় তিনি নিজের কাজের সাথে রাস্তাটি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। এখন কারো ইন্ধনে রাস্তাটি বন্ধ করার অপচেষ্টা করছেন। এলাকা আমাদের, প্রতিষ্ঠানও আমাদের। আমার জীবন থাকতে কেউ প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়- এমন কাজ করতে পারবেন না। এজন্য আমাকে যদি মামলার আসামীও হতে হয়, আমি হবো।