মনপুরায় লঞ্চ ঘাটে পল্টন না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ, হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ 

রাকিবুল হাসান, মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি  :
ভোলার মনপুরা একটি দূর্গম উপজেলা। একমাত্র নৌ পথ পারাপারের মাধ্যম। প্রতিদিন শত-শত পর্যটক ও যাত্রী মনপুরা থেকে রাজধানী ঢাকা আসা যাওয়া করে।প্রতিদিন ঢাকা থেকে দুইটি লঞ্চ মনপুরায় আসেন ও ছেড়ে যান।লঞ্চ দুইটি মনপুরা রামনেওয়াজ ঘাটে নোঙ্গর করেন। অথচ নেই স্থায়ী পল্টুন।

এতে বিশ্রামের স্থান, গণশৌচাগারসহ অন্যান্য সুবিধা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় ঘাটে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের।ফলে স্থায়ী পল্টনের সুযোগ-সুবিধা না থাকায় হাজার হাজার যাত্রীকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।কিন্তু লঞ্চঘাটে টার্মিনাল বা পল্টন না থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরজমিনে রামনেওয়াজ লঞ্চঘাট গিয়ে দেখা যায়, ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ গুলো এই ঘাটে নদীর পাড়ে এসে নোঙ্গর করে। কাঠের সিঁড়ি লাগিয়ে যাত্রী উঠানামা ও মালামাল লোড আনলোড করতে দেখা যায়। চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাত্রীরা নদীর পাড়ে এসে লঞ্চে উঠার সময় অনেক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।নেই যাত্রী ছাউনিও,তীব্র রোদে অপেক্ষা করে লঞ্চে উঠতে হয় যাত্রীদের।রাস্তার পাশে গাছের নিচে বসে অপেক্ষা করতে হয় লঞ্চের জন্য। যথা সময় আসতে পারেন না নব্যসংক্টের কারণে।তবে বিআইডব্লিউটির লঞ্চ ঘাট ইজারা দিয়ে রাজস্ব আদায় করলেও লঞ্চঘাটে কোন পল্টন দেওয়া হয়নি।

উপজেলার অনেক মুমূর্ষ রোগী ও গর্ভবতী নারীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য আসলে পল্টন না থাকায় তারা খুব কষ্টে লঞ্চে উঠতে হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী ও যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন,মনপুরা উপজেলা ৪টি ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কর্ম ব্যবসা ও চিকিৎসা সেবার জন্য ঢাকায় আসা যাওয়া করেন।

রামনেওয়াজ লঞ্চঘাটে কোন ধরনের পল্টন না থাকায় লঞ্চগুলো নদীর পাড়ে এসে নোঙ্গর করার কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে বন্য নিয়ন্ত্রন বাঁধ। এছাড়া লঞ্চে কাঠের সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় যাত্রীরা অনেক দুর্ঘটনা শিকার হন। অতি দ্রুত নৌপথে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে এই ঘাটে পল্টন বা টার্মিনাল দেওয়ার জোর দাবি জানান সচেতন মহল।

এক যাত্রী বলেন, এই ঘাটে নেই টার্মিনাল বা পল্টুন ও যাত্রীছাউনি নেই, পাবলিক টয়লেট। যার ফলে আমাদের কোথাও যাতায়াত করতে দুর্ভোগে পড়তে হয়।

আরেক যাত্রী বলেন, লঞ্চ যদি ছাড়তে দেরি হয় অথবা কেউ যদি লঞ্চের ধরতে না পারে পরবর্তী লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করার জন্য কোনো বিশ্রামাগার নেই। এটা খুবই দুঃখজনক একটা ব্যাপার। যাত্রীদের দুর্ভোগের চিন্তা করে কর্তৃপক্ষের উচিত এই সমস্যা তাড়াতাড়ি সমাধান করা।

মনপুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেলিনা আক্তার চৌধুরী জানান, ঘাটে পল্টন না থাকায় লঞ্চগুলো সরাসরি বাঁধের ওপর ভিড়ছে। এতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রামনেওয়াজ ঘাটে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া পন্টুন আগের স্থানে স্থাপনের জন্য বলা হলেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।এতে দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রন বেড়িবাঁধ ।

এ ব্যাপারে ভোলা বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, নতুন পন্টুনটি রামনেওয়াজ ঘাট থেকে অনেক দূরে স্থাপন করায় লঞ্চগুলো নতুন ঘাটে ভিড়তে সমস্যা হচ্ছে। তাই লঞ্চগুলো পুরনো ঘাটে ভিড়ছে। পুরনো ঘাটে পন্টুন স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।