পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উজানের ঢলে পানিবন্দী ১২ হাজার মানুষ, ১০ গ্রাম প্লাবিত

জাকারিয়া জাহিদ, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উজানের ঢলে স্বাভাবিকের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালুয়া ইউনিয়নের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুই/তিনদফা জোয়ারে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ১২ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে কয়েকশো হেক্টর ফসলী জমি। ভেসে গেছে বেশ কিছু ঘের ও পুকুরের মাছ। এতে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তাই ভাঙা বেড়িবাঁধ পুন:নির্মান কিংবা মেরামতের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।

সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ ধরে স্বাভাবিকেরে চেয়ে আন্ধারমানিক, তেতুলিয়া ও রাবনাবাদ নদীর পানি ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই/তিনদফা জোয়ারে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়া, চর চান্দুপাড়া, পশরবুনিয়া, মুন্সিপাড়া, গাজীর খাল, মঞ্জুপাড়া, হাসনাপাড়া, চারিপারা, চৌধুরীপাড়া ও বানাতীপাড়া গ্রাম প­াবিত হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে এসব গ্রামের ১২ হাজার মানুষ। অনেক স্থানে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। প্রতি বছর এ মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এসব এলাকার মানুষ। বার বার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্না ধরেও দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছেনা এসব মানুষের।

লালুয়া ইউনিয়নের চর বানাতি এলাকার বাসীন্দা সোহরাব হাওলাদার জানান, ৬ বছর আগে এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। প্রতি বছরই কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। এবছরও ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্ভোগের কোনও শেষ নাই।

ঐএলাকার আরেকজন চাষী ফজলে হোসেন মিয়া জানায়, অনেকবারই জনপ্রতিনিধিদের কাছে শুধু এই বেড়িবাঁধটি নির্মানের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কেউই সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেননি। আমরা ত্রান চাইনা শুধু বাধটা নির্মানের দাবি জানাই।

লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়নের ১২ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বহুবার প্রশাসনের কাছে বেড়িবাঁধ নির্মানের অনুরোধ জানিয়েছি, কিন্তুকাজে আসছেনা। সরকারের কাছে জোর অনুরোধ জানাই যাতে আমাদেও এ বেড়িবাঁধটি নির্মান করে দেয়া হয়।

পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানান, মূলত: ভারতের পাহাড়ী ঢল এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিভিন্ন নদ-নদীর পানির উচ্চতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৃষ্টি কমলে পানিও কিছু কমবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক গনমাধ্যমকে বলেন, লালুয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনেকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। বানভাসী মানুষকে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ সহায়তা করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।