ফরিদগঞ্জে আগুণ বাহিনীর তান্ডবে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ : আটক ১২

ফরিদগঞ্জ সংবাদদাতা :

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দুই দল মাদক কারবারির আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এদের মদ্যে একটি দল ফরিদগেঞ্জর ও অপরটি পাশ^বর্তী উপজেলা হাইমচরের। সংবাদপেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হাইমচর এলাকার কথিত আগুণ বাহিনী লোকজন পুলিশবাহী একটি সিএনজি অটোরিক্সা ভাংচুর করে। এই ব্যাপারে সিএনজি অটোরিক্সা চালক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে ১২জনকে আটক করেছে। ঘটনাটি রোববার(৩১ জুলাই) বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার চরদু:খিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের বিশকাটালি গ্রামে ঘটে।

আটককৃতরা হলো: ফরিদগঞ্জের বিশকাটালি গ্রামের কাদির বেপারী (৩৯), মোঃ সোহাগ (১৯), রাকিব খন্দকার(২১), মোঃ আল আমিন(২৫), মাসুদ মোল্লা(৪০), মোঃ কবির হোসেন(৩৭), ফজলে রাব্বি (২০), চরদু:খিয়া গ্রামের মোঃ আহসান হাবিব মিঠু (২০),হাইমচর উপজেলার চরকৃষ্ণপুর গ্রামের জাহিদ হাসান প্রঃ রিফাত(১৯), চরভাংগা গ্রামের মোঃ ফুয়াদ আলম পাটওয়ারী(২৮), রাসেল গাজী(৩৫), পশ্চিম চর কৃষ্ণপুর গ্রামের মোঃ আতাউর রহমান সুজন(২৬), জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদু:খিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের বিশকাটালী এলাকায় রোববার(৩১ জুলাই) মাদকসেবী দু‘গ্রæপের আদ্যিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় আগুন বাহিনীর হামলায় ১০টি বসত ঘর ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে শতবর্ষী ফাতেমা বেগমসহ অন্তত ৮/১০জন আহত হয়েছে। তাছাড়া ৩টি খড়ের গাদায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের মধ্যে মো: বোরহান উদ্দিন, তহমিনা, ফাতেমা বেগম জানান, রোববার বিকালে হাইমচর এলাকার (আগুন বাহিনী নামে পরিচিত ) আলআমিন, জয় ও আরিফের সাথে ফরিদগঞ্জ এলাকার তানজিল ও রাজনের মারামারি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন সন্ধ্যায় হাইমচরের আল-আমিন ও জয়ের নেতৃত্বে আগুন বাহিনীর প্রায় শতাধিক যুবক ফরিদগঞ্জের বিশ কাটালী গ্রামের বেপারী বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তান্ডব চালিয়ে কমপক্ষে ১০টি বসত ঘর কুপিয়ে ভাংচুর করাসহ ৩টি খড়ের গাদায় আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া। এসময় তাদের হামলা ঠেকাতে ও হামলার শিকার হয়ে শতবর্ষী এক বৃদ্ধাসহ অন্তত ৮/১০জন আহত হয়। এ সময় নারী-পুরুষ আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশের সামনেই ভাংচুর করে, এ সময় পুলিশ আতœরক্ষার্থে সরে পড়লে পুলিশের ব্যবহৃত সিএনজিটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।

পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে এলাকাটি পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে। একই বাড়ির মেজর আ: খালেদের বসত ঘরও ভাংচুর শিকার হয়। মেজর আ: খালেদের অনুরোধে ফরিদগঞ্জ ও হাইমচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে ।

এ বিষয়ে চরদু:খিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: শাহাজাহান বিএসসি জানান, সৃষ্ট ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবী করছি। তাছাড়া কোন নিরপরাধী ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়। তিনি আরোও জানান, হামলার কারণে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। হয়রানি থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য পুরুষদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ সত্যিকারের দোষীদের গ্রেফতার করুক, তবে নি:দোষ ব্যাক্তিরা যেন হয়রানির শিকার না হয়।

এ বিষয়ে থানার অফিসার ইন চার্জ মো: শহীদ হোসেন জানান, মাদক কারবারি দু’গ্রæপের আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। সিএনজি অটোরিক্সা ভাংচুরের ঘটনায় চালক রাকিব হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামী করে মামলা করেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করেছে। তাদের সোমবার (১ আগস্ট) বিকালে হামলাকারী ও হামলার শিকার কোন পক্ষই থানায় লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।