ফরিদগঞ্জে জমি থেকে উচ্ছেদে অসহায় পরিবারের উপর মিথ্যা মামলা

ফরিদগঞ্জ সংবাদদাতা :

জমি থেকে উচ্ছেদ করতে অসহায় পরিবারের বিরুদ্ধে ১৪৫ ধারায় জমির দখল বিষয়ে আদালতে মামলা করে প্রভাবশালীরা। আদালতে জমির দখল বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন উপজেলা ভুমি অফিসকে। সেই অনুযায়ী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো: আবু বকর ছিদ্দিক পর পর তিন দফা তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের দখলে সম্পত্তি রয়েছে বলে নিশ্চিত করে আসেন। কিন্তু সরেজমিন প্রাপ্ত রিপোর্টকে পাশ কাটিয়ে কাগজ-কলমে উল্টো রিপোর্ট প্রদান করায় নিজেদের ভুমি থেকে উচ্ছেদের আশংকা করছেন অসহায় পরিবারটি। সোমবার(২৬ সেপ্টেম্বর) দিন পর্যন্ত অসহায় শেখ ফরিদের পরিবার তার পিতার ক্রয় সূত্রে মালিক সম্পত্তির উপর বসবাস ও চাষাবাদ করতে দেখা যায়। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রুপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তুমপুরে।

সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মৃত জয়নাল আবেদিনের তিন ছেলে রুস্তমপুর মৌজায় ৪৮.৬২শতক পিতার ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে ভোগ দখলে রয়েছেন। বাড়িতে তিন ভাইয়ের তিনটি ঘর রয়েছে। এছাড়া বাড়ির পশ্চিম পাশে^ ডোবায় মাছ চাষ ও উপরের অংশে সবজি চাষ করে আসছেন তারা।

জয়নাল আবেদিনের ছেলে ফরিদ মৃধা জানান, তাদের প্রতিবেশি প্রভাবশালী ঢাকা মুগদা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন বাহার ও তার ভাই মোজাম্মেল হোসেন বাবু তাদের সম্পত্তির মূল্য বাড়াতে তাদের তিন ভাই যথাক্রমে ফয়েজ আহমেদ মৃধা, ফরিদ মৃধা ও সোহাগ মৃধা কে নানা ভাবে হয়রানি শুরু করে। একাধিকবার প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় হামলা করে তাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করে। চলতি বছরের ১৩ মে রুস্তুমপুর বাজারে জনসম্মুখ্যে ফয়েজ আহমেদ মৃধা, ফরিদ মৃধাকে বেধড়ক মারধর করে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার কারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বাধ্য হয়।

ফরিদ মৃধা জানান, ক্ষমতাবান প্রভাবশালীরা মারধরসহ অনৈতিক ভাবে জমি দখল করতে না পেরে কৌশলের আশ্রয় নেয়। নিজেরা মামলার বাদী না হয়ে তাদের আরেক প্রতিবেশী জনৈক দেলোয়ার হোসেনকে দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে, আমাদের জমিটি তাদের দখলে নেয়ার পাঁয়তারা শুরু করে। ১৪৫ ধারায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করার জন্য আদালত উপজেলা ভুমি অফিসকে নিদের্শনা দেয়। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ তাদের কৌশল হিসেবে ভুমি অফিসকে ম্যানেজ করে তাদের পক্ষে সম্পত্তির মিথ্যা দখল দেখিয়ে রিপোর্ট করিয়ে নেয়। অথচ আমরা আজ পর্যন্ত সেই ভুমিতে বসাবস করছি।

সরেজমিন গেলে মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন জানান, জয়নাল আবেদিনের সন্তানরা যে জমিতে বর্তমানে ভোগদখলে রয়েছে, তা আমরা পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্য। এইজন্য মামলা করেছি। তারা ক্রয় সূত্রে যতুটুকু মালিক তার চেয়ে বেশি দখলে রয়েছে।

স্থানীয় মুন্না, আব্দুল জলিলসহ বেশ কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই জয়নাল আবেদিনের সন্তানরা এই সম্পত্তির উপর বসবাস করছে। কিন্তু গত প্রায় দুইবছর ধরে দুই প্রতিবেশির মধ্যে মামলা হামলা চলছে।