কুমিল্লার বাঙ্গরায় চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও ডাকাতির সপ্তাহের মাথায় ৩ আসামী গ্রেপ্তার

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, কুমিল্লা ব্যুরো: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২

কুমিল্লার মুরাদনগরে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও ডাকাতীর ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ মুরাদনগর উপজেলার গাজীপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন জানান, গত ১৫ সেপ্টম্বর বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাতে বাঙ্গরা বাজার থানাধীন চাপিতলা গ্রামে গণধর্ষণ ও ডাকাতী সংগঠিত হয়েছে মর্মে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। চাঞ্চল্যকর মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্তের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান। এর পরপরই মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস এর নেতৃত্বে তদন্তে নামেন এ মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), দীনেশ চন্দ্র দাশ গুপ্তসহ বাঙ্গরা বাজার থানার অন্যান্য কর্মকর্তারা।

এসময় তারা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তির সহয়তায় আসামীদের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহষ্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে মুরাদনগর উপজেলার গাজীপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় গাজীপুর গ্রামের শিশু মিয়ার ছেলে সজীব মিয়াকে (২৩) গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে ঘটনার সময় লুণ্ঠিত স্মার্টফোনটি উদ্ধার করা হয়। পরে একই গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে মোঃ জাকির হোসেন (৩৭) ও মৃত জীবন মিয়ার ছেলে নাজমুল হাসান টুকু এ টুকনকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। তাদের কাছ থেকে ডাকাতীর কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

গত ২৪ সেপ্টম্বর শনিবার কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা গ্রামের মোঃ আরব আলীর ছেলে কবির হোসেন (৫২) বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৫ সেপ্টম্বর বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাতে তার বাড়ীতে ডাকাতী সংগঠিত হয় এবং গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তিনি অভিযোগ করেন ওই রাতে কবির হোসেন তার স্ত্রী রেহানা বেগম, মেঝো মেয়ে সুমি আক্তার, ছোট মেয়ে ফাতেমা আক্তার এবং তার ছোট ছেলে কামরুল হাসান রনিসহ তাদের বসত ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। গভীর রাতে বসত ঘরের মেঝেতে সিঁধ কেটে ২ জন লোক ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে।

পরে দরজা খুলে আরো ৫/৬ জন লোক মাস্ক পড়া অবস্থায় ঘরে ঢুকে। এসময় তারা স্কচটেপ দিয়ে কবির হোসেন স্ত্রী রেহানা আক্তারের মুখে আটকে দেয় এবং মারধোর করে। পর্যায়ক্রমে তারা ঘরের সবাইকে শারীরিক ভাবে আঘাত করে। স্মার্টফোন, নগন টাকা, পাসপোর্ট লুটে নেয়।

একপর্যায়ে কয়েকজন আসামী কবির হোসেনের মেয়ে সুমি আক্তারকে উলঙ্গ কওে ছবি তুলে এবং ধর্ষণ করে। এসময় এক ধর্ষকের মুখের মাস্ক খুলে গেলে ধর্ষিতা তাকে চিনে ফেলে। সে সম্পর্কে ধর্ষিতার ননদের স্বামী জাকির হোসেন (৩৫)। পাশের টানকী গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে জাকির।

এ ঘটনায় বাঙ্গরা বাজার থানায় ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়। এর ৮(১) এ একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।