সারাদেশে নভেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ৫৮৬টি! নিহত ৬৪৩, আহত ৮২৬

মো. সোহেল কিরণ

চলতি বছরের নভেম্বর মাসে সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কে ৫৮৬টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৬৪৩জন নিহত হয় এবং আহত হয় অন্তত ৮২৬জন। সে সাথে রেলপথে ৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়। অন্যদিকে নৌ-পথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত সহ ৭জন নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। সড়ক, রেল ও নৌ পথে সম্মিলিতভাবে ৬৬৮টি দুর্ঘটনায় ৭০৯ জন নিহত ও ৮৪০ জন আহত হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে আরো বলা হয় এইমাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত নভেম্বর মাসে দুর্ঘটনার ৬০.৫৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৭.৪৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে (হাইওয়ে), ৪.৯৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৬৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.১৭ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১.১৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়। এসব ঘটনায় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২৮৪ জন চালক, ৮৭ জন পথচারী, ৮৫ জন নারী, ৮৯ জন শিশু, ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৪ জন শিক্ষার্থী, ২৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে এনএসআই ১২ জন, পুলিশ সদস্য ১জন, সেনা সদস্য ৯জন। এছাড়াও শিক্ষক ১জন, আইনজীবী ২জন, প্রকৌশলী ১জন মুক্তিযোদ্ধা ২জন, চিকিৎসক এবং সাংবাদিক ৭জন জনের তথ্য পাওয়া গেছে।

যার মধ্যে নিহত হয়েছেন ২২৫জন চালক, ৮৪জন পথচারী, ৫৯জন নারী, ৫৭জন শিশু, ২৩জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৯জন শিক্ষার্থী, ১৬জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ৯জন শিক্ষক-শিক্ষিকা, ৫জন সাংবাদিক, ২জন চিকিৎসক ও ১জন এনএসআই সদস্য।

এইমাসের সংগঠিত দুর্ঘটনার ৩০.৪৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫.৩৭ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১.৮১ শতাংশ বাস, ১৩.৮৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৯.৫০ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৬.৭২ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস এবং ২.৬৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সড়কে দুর্ঘটনায় ৫৯.৮৯ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৭.৫৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১১.২৬ শতাংশ খাদে পড়ে, ৯.৮৯ শতাংশ বিবিধ কারনে, ১.১৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং ০.১৭ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে সংগঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বিপদজনক অভারটেকিং, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, ছোট যানবাহন ক্রমশ বৃদ্ধি, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেইন না থাকায় ইজিবাইক, রিক্সা, অটোরিক্সা বিভিন্ন ফিডার সড়ক থেকে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে নেমে আসার ফলে এসব ছোট যানবাহন দুরপাল্লার বাস ও প্রাইভেট কারের গতির কমিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া, গুরুত্বপূর্ণ জংশনে, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজ গুলোতে যানজট তৈরি করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে।