প্রচারবিমুখ নিভৃতচারী কবি-লেখক-গবেষক-আলোচক জিএম মুছা

রেজাউল করিম রোমেল :

জিএম মুছা মূলত একজন আইনজীবী হলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিরলসভাবে নীরবে-নিভৃতে আইন পেশার পাশাপাশি রাজনীতি ও সাহিত্যের সেবা সহ সাহিত্যচর্চা করে যাচ্ছেন।

সাহিত্যের সব শাখায় তার রয়েছে সরব উপস্থিতির ছোঁয়া। কবিতা ছড়া, গল্প, গান, প্রবন্ধ, গবেষণা ও শিশুদের নিয়ে গল্প ছড়া কবিতা লিখে যাচ্ছেন। সাহিত্যের সকল শাখায় তার যে সৃষ্টিশীল লেখা তার মধ্যে আমরা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট, কালপাত্র ভেদে মা, মাটি ও মানুষের, নগর ও যুগ যন্ত্রণা, প্রেম-ভালোবাসা, ফুল-পাখি, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপ রস গন্ধ সমাজ-সংসার দেশ দেশের মা মাটি মানুষের ভালোবাসা, দেশপ্রেমিকসহ নানা উপাখ্যান। ভিন্ন ভিন্ন গল্প, চিত্রকল্প, নানান রঙের ছবি উপমা-উৎপ্রেক্ষা, লক্ষণীয় দেশ ও দেশের যুবসমাজকে সামনে এগিয়ে নেয়ার উৎসাহ-উদ্দীপনার ও প্রকৃষ্ট সব মেসেজ দেখতে পাই তার লেখার মধ্যে।

সাহিত্যের সকল শাখায় যার ছোঁয়া আছে, সেই প্রচারবিমুখ নিভৃতচারী কবি লেখক, জিএম মুছা লিখে যাচ্ছেন নবীন-প্রবীণ কবি লেখকদের সঙ্গে সমানতালে কবিতা- ছড়া- গল্প -গান, প্রবন্ধ, সাহিত্যের নানা অনুষঙ্গ।

বিগত ২৪ জানুয়ারি ২০২২ তার ৫৭ তম জন্মদিন ছিলো। ভেবেছিলাম যে কবি ও লেখক জিএম এম মুছাকে নিয়ে কিছু লিখব। সেই উদ্দেশ্যে আমার এই সামান্য প্রয়াস।

কবির পুরো নাম জি এম আবু মুছা; সাহিত্যজগতে পরিচিতি লাভ করেছেন জিএম মুছা নামে। ১৯৬৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সাতক্ষীরা জেলার, শ্যামনগর থানার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের রাজা প্রতাপাদিত্যের স্মৃতিবিজড়িত ইতিহাসখ্যাত রাজধানী ধুমঘাট গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

পিতা মরহুম ডাক্তার জিএম আবু এছাহাক ও মাতা মরহুম আলফা খাতুনের সাত সন্তানের মধ্যে তিনিই সকলের বড়। এল-এলবি পাস করে আইন ব্যবসাকে পেশা হিসাবে বেছে নিয়ে বর্তমানে, ১৮৮-৩ নিউ রামকৃষ্ণ সড়ক রায়পাড়া ,কোতোয়ালি- যশোরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

কর্মজীবনে শত ব্যস্ততার মাঝেও সাহিত্য জগতে তিনি সাবলীলভাবে বিচরণ করে যাচ্ছেন।বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের সাথে জড়িত আছেন। তিনি সাবেক সহসভাপতি জেলা আইনজীবী সমিতি যশোর, যশোর জেলা জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে যশোর জেলা পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক, এবং আন্তর্জাতিক গাঙচিল সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ এর আজীবন সদস্য এবং যশোর জেলা শাখার সম্মানিত সভাপতি, আজীবন সদস্য মাইকেল মধুসূদন ফাউন্ডেশন ও ইনস্টিটিউট যশোর, সভাপতি ভৈরব সাহিত্য চর্চা কেন্দ্র, সহ-সভাপতি যশোর সাহিত্য কেন্দ্র, উপদেষ্টা নজরুল সাহিত্য পরিষদ ও মুক্তেশ্বরী সাহিত্য নিকেতন, যশোর উদ্যোক্তা সদস্য সাহিত্যরত্ন আর,ফ,ম আব্দুর রশিদ সাহিত্যরত্ন ফাউন্ডেশন , আইন উপদেষ্টা সাপ্তাহিক স্মৃতি পত্রিকা যশোর । সদস্য যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা জাতীয় পার্টি, শিল্পকলা একাডেমী ও চাঁদের হাট যশোর।

আমি নিজেই আইনের ছাত্র তার সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে আইন চর্চা করে যাচ্ছি, অনেক কাছ থেকে তাকে যতটুকু জেনেছি একজন সাদা মনের মানুষ একজন সামাজিক মানুষ, ভালো কবি ও লেখক একজন দেশ দরদী মানুষ, তার সম্মাননার ঝুলিতে সম্মাননা সংখ্যা ১১টির অধিক, প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা আট থেকে নয় খানা তার মধ্যে
( ১) নিশুতি রাতের প্রেম (উপন্যাস -২০০৩)
( ২) অতৃপ্ত ঘুম (কাব্যগ্রন্থ- ২০০৫)
(৩) গহীন অরণ্যে (ছোটগল্প ২০০৮) ( ৪) বিজ্ঞান বিষয়ে জানা অজানা তথ্য (সম্পাদনা গ্রন্থ ২০০৩)
(৫) বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কারঃ (সম্পাদনা গ্রন্থ ২০০৪)
(৬) বিজ্ঞানের বিচিত্র তথ্য আবিষ্কার
(সম্পাদনা গ্রন্থ ২০০৪)
৭) কিশোর নজরুল (জীবনী গ্রন্থ ২০২২)
৮) দুষ্টু বাঘের সাজা ( শিশু কিশোর গল্প ২০২২)
৯) রহস্যে ঘেরা ভুতুড়ে পুতুল( শিশু কিশোর গল্প ২০২২)

সহ ২০ থেকে ২৫ খানা যৌথ গ্রন্থ ও আছে।
লিখে যাচ্ছেন ভারত-বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা সহ, স্থানীয় ও জাতীয় পত্র পত্রিকায়।

সর্বশেষ ২০২২ সালে প্রফিশিয়েন্সি একটি জীবনীগ্রন্থ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কে নিয়ে, লিখেছেন ‘কিশোর নজরুল’ অনেক তথ্যমূলক, বইটি একুশে মেলায়( প্রান্ত প্রকাশন ৩৬ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০) থেকে প্রকাশিত হয়েছে, বই মেলায় তার বিক্রি ভালো ,বর্তমানে সময়ে কবি জিএম মুছা শিশু-কিশোরদের নিয়ে লিখছেন ছড়া ,শিশুতোষ গল্প, গান ও কবিতা, তাছাড়াও আগামীতে তার ইচ্ছা আছে ইতিমধ্যে তিনি পাণ্ডুলিপি তৈরি করে ও ফেলেছেন।
১) শিশু-কিশোরদের দেশি-বিদেশি বিচিত্র গল্প
২) একটি প্রবন্ধ গ্রন্থ ।
(৩) একটি কাব্যগ্রন্থ।
(৪) ছোটদের সাত বীরশ্রেষ্ঠ।
(৫) দেশ-বিদেশের বিচিত্র গল্প ( শিশুতোষ)

মার জানামতে কবি ও লেখক জিএম মুছা,র সৃষ্টির ঝুলিতে মজুদ আছে, অপ্রকাশিত একটি উপন্যাস ছোটগল্প ৫০ টিরও অধিক, প্রবন্ধ ২০/২৫ থেকে টি, শিশুতোষ গল্প প্রায় ৫০ টি, ছড়া প্রায় ৫০/৬০ টি গান ও আছে শ খানে, কবিতা প্রায় দেড়শ থেকে দুইশ,র মতো। সৃষ্টিশীল কবি ও লেখক জিএম মুছা একজন সদালাপী সহজ-সরল প্রানবন্ত সাদা মনের ভালো মানুষ, সাহিত্যিক ও কবি বান্ধব, সমালোচনা নয় আলোচক হিসাবে তিনি অনেকখানি দক্ষ, সকল কবি সাহিত্যিক, শিল্পী সাংস্কৃতিক ব্যক্তি কর্মীদের সঙ্গে তার রয়েছে সুন্দরও সুসম্পর্ক, আইন পেশায় একজন দক্ষ আইনজীবী, একজন সমাজ সচেতন সামাজিক দক্ষ সংগঠক, শব্দ সৈনিক ,সফল পিতা, সফল কবি, গল্পকার বলা চলে, আমাদের মতো অনেক অনুজ কবি লেখকদের তিনি লেখালেখিতে অনেক উৎসাহ অনুপ্রেরণা জুগিয়ে থাকেন এবং তাদের কে স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছেন, কাছে টানেন সবসময়, ছোটখাটো সকল সমস্যা সমাধানের তার প্রানবন্ত চেষ্টা তিনি খুবই আন্তরিক ভাবে সবকিছু দেখেন।

তার ৫৭ তম জন্মদিনে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভালোবাসা ও অভিনন্দন এবং তার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি, তাঁর উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি তার জন্য দোয়া ও ভালোবাসা রশদের ঝুলি অবারিত সেই অবারিত ঝুলির উদ্ধৃতি দিয়েই আজকের মত এখানেই ইতি টানতে চাই,

‘স্বামী-সন্তান স্বজনহারা নিঃসঙ্গ জীবনের/ বুকের চাপা ব্যথা বেদনার জলসাঘরে/ নিদারুণ নিষ্ঠুরতা হৃদয়ের হাহাকার /স্বজনহারা কষ্টগুলো ব্যাথা রাগিনী হয়ে /ঝড় তোলে নীরবে নিভৃতে /কাঁদে মানবতা হয় / হৃদয়ের রক্তক্ষরণ।
(ফিরে যেতে হয়) কবিতা থেকে নেয়া অংশবিশেষ।।

লেখক :
কন্ঠশিল্পী, কবি ছড়াকার ও গল্পকার

জিমেইল: rkromel85@gmail.com