পটুয়াখালীর মহিপুরে ৫০ লাখ টাকার সম্পত্তি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ

কুয়াকাটা প্রতিনিধি :

পটুয়াখালীর মৎস্য বন্দর আলিপুরে ছোট বোনের ৫০ লাখ টাকা মুল্যের জমি দখল করে বড় বোনের বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় শালিস ও আদালতের স্থিতিতাদেশ অমান্য করে ভবন নির্মাণে মানা হয়নি বিল্ডিং কোড এবং পরিবেশ আইন। নির্মাণ কাজ বন্ধে পুলিশি সহযোগিতা চেয়েও পাচ্ছেন না লাইলী বেগম এমন অভিযোগ করেছেন ছেলে মোঃ বেল্লাল হোসেন।

দুই বোনের পাশাপাশি দুইটি বিল্ডিং। দুই বিল্ডিংয়ের মাঝখানে একটি মাত্র দেয়াল। রাখা হয়নি কোন ফাঁকা জায়গা। এ নিয়ে দুই পরিবারের বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেছে। এক বোন আরেক বোনের শত্রুতে পরিনত হয়েছে। স্থানীয় শালিশ মিমাংশায় কোন ফয়সালা না হলে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি।

দুই বোনে ৩০ শতাংশ জমি ক্রয় করে। এর মধ্যে লাইলী বেগমের সাড়ে ১৬ শতক এবং আয়েশা বেগমের সাড়ে ১৩ শতক। কিন্তু সেখানে বড় বোন আয়েশা বেগম দুই শতক জমি বেশী দখলে নিয়ে জোরপূর্বক ভবন নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ লাইলী বেগমের। ভবন নির্মাণে আদালত কর্তৃক স্থিতাবস্থা জারি করলেও তা মানছে না বোন আয়েশা বেগম ও তার ছেলেরা। এ নিয়ে দুই বোনের সন্তানদের মাঝে বড় ধরনের সংঘর্ষের সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয়রা।

জানাগেছে, পটুয়াখালীর মৎস্য বন্দর আলিপুর বাজারের থ্রি পয়েন্টে রহিম মুসুল্লির মেয়ে লাইলী বেগম গত কয়েক বছর আগে একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে। সেখানে স্বামী সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছিল। বছর দু’য়েক আগে বড় বোন আয়েশা বেগম পাশাপাশি একতলা অপর একটি ভবন নির্মাণ করে। যার এক পাশে দেয়াল থাকলেও অপর পাশে কোন দেয়াল না দিয়ে বোনের বিল্ডিংয়ের দেয়াল ব্যবহার করা হয়েছে।

এনিয়ে গত দুই তিন বছর দুই বোনের পরিবারের মাঝে কয়েকবার বৈঠক শেষে অতিরিক্ত অংশ ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বোন আয়েশা বেগম ও তার স্বামী সন্তানরা। দুই পরিবারের উপস্থিতে এনিয়ে দুই বোনের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তিও হয়। চলতি বছরের মাঝামাঝি আয়েশা বেগম রোয়েদাদ অমান্য করে দ্বিতীয় তলায় নির্মাণ কাজ শুরু করে। লাইলী বেগমের ছেলে বেল্লাল হোসেন থানায় অভিযোগ করে। পুলিশি সহায়তা না পেয়ে আদালতের স্বরনাপন্ন হয়। আদালত গত ১ নভেম্বর ২০২৩ অস্থায়ী স্থিতিতাবস্থা জারি করেন।

লাইলী বেগমের ছেলে মোঃ বেল্লাল হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, তার খালাতো ভাইয়েরা প্রায় ৫০ লাখ টাকা মুল্যের জমি দখল করে নিয়ে গেছে। দখলকৃত জমিতে জোরপূর্বক বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য বললে মামলাসহ জীবন নাশের হুমকী দেয়। চাঁদাবাজির একটি মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তার নামে। বেল্লাল অভিযোগ করেন, মহিপুর থানায় শ্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে সহযোগিতা চাইলে নানা অযুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যান তারা। উল্টো তারা প্রতিপক্ষ কে ছাদ ঢালাইয়ে সহযোগিতার অভিযোগ তুলেন বেল্লাল।

তবে আয়েশা বেগমের বড় ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন ভবন নির্মাণে লাইলী বেগমের দেয়াল ব্যবহারের কথা স্বীকার করে বলেন, আদালতে মামলা করা হয়েছে আদালতেই বুঝ করা হবে।

এবিষয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা লাইলী বেগমের জমি দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, এরা উভয়ই আত্মীয় স্বজন। লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুলতান মুসুল্লির নিকট আত্মীয়। তাকে বিষয়টি মিমাংসা করে দেবার জন্য বললেও তিনি কর্নপাত করছে না।

এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ওসি মোঃ ফেরদৌস আলম বলেন, এরা উভয়ই পরস্পর আত্মীয়। আদালতের স্থিতিতাবস্থার কাগজ পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। যাতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে।