আগামী বাজেটে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ চাই

সালাউদ্দিন মোল্লা :

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বে ধনী দরিদ্র সব দেশকেই ফেলে দিয়েছে জীবন – জীবিকার কঠিন বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে। বৈশ্বিক যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি, জীবনযাত্রা, সামাজিকতা, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বক্ষেত্রে এক অদৃশ্য ভাইরাস আজ তছনছ করে ফেলেছে দেশের অর্থনীতি । এই বাস্তবতায় আগামী বাজেট প্রনয়ণ সরকারের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর গত কয়েক বছরে থাকা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিতে হবে।

তাছাড়া ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী, পেশাজীবী ও শ্রমিক এবং প্রান্তিক চাষীদের কর্মহীন হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেটে কর্মসংস্থান, শিল্প ও কৃষি খাতে উৎপাদন, সার্ভিস সেক্টর সচল করাসহ দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে গতি সঞ্চার করার মত উপাদান থাকতে হবে। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক সৃজনশীল উদ্ভাবন এবং গার্মেন্টসসহ ব্যবসাবান্ধব পরিস্থিতির উন্নতি করা ও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করে জনগণের রক্ষা করাই সরকারের জরুরি করনীয়। আগামী বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনিক দক্ষতা ও মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

প্রবৃদ্ধি কি হবে সেটা এখন ভাবার বিষয় নয়, এখন মূল ভাবনার বিষয় হচ্ছে মানুষের জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করে বৃহত্তর অর্থনীতির স্বার্থে কিভাবে বৈশ্বিক মন্দা কাটিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অর্থনীতির গতি ফেরাতে পন্যের চাহিদা ও যোগানের সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক রাখতে হবে। বৈশ্বিক মন্দার কারনে বর্তমানে চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে (১) শিক্ষা ব্যবস্থাপনা (২) স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা (৩) কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের ব্যবস্থাপনা (৪) জরুরি সেবা নিশ্চিতকরন (৫) রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্য ব্যাবস্থাপনা (৬) আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতা (৭) আইন শৃঙ্খলা ও সার্বিক সমন্বয় উল্লেখিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।

আগামী বাজেটে যে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে তা হচ্ছে কোথায় অর্থ খরচ করা হবে আর সেই অর্থ আসবে কোথায় থেকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত করের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তাছাড়া, মুল্য সংযোজন কর, আমদানি শুল্ক, আয়কর, সম্পূরক শুল্কের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। আগামী বাজেটে দেশের শিক্ষা ও কৃষি খাতের জন্য ভর্তুকি বাড়াতে হবে। বাজেটে সবচেয়ে বেশি নজর রাখতে হবে শিক্ষা খাত এই খাতেও সর্বোচ্চ ভর্তুকি রাখতে হবে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক সংকটের মধ্যে অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থ প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্য আগামী বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখতে হবে।

বাজেট নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যাবস্থা করতে হবে। বাজেটে সরকারি অপচয় রোধ করতে হবে। আগামী বাজেটে সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও গবেষণা, বেকারত্ব ভাতা, পেনশন ভাতা, শিশু প্রতিপালন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, অবসর ভাতা, আবাসন সহায়তা, স্বাস্থ্য ভাতার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে। বাজেটে সবুজ শিল্পায়ন ও গ্রামীন অর্থনীতি উদ্ভাবন সমন্বিত শিল্পায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্য ইকুইটি ম্যাচিং তহবিল গঠন করা যেতে পারে। বৈশ্বিক মন্দার কারণে অর্থনীতি সংকোচিত হওয়ায় আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর কমবে, ফলে রাজস্ব কমে যাবে, এই পরিস্থিতিতে অর্থসংস্থানের জন্য বিভিন্ন উৎস সমন্বয়ে সমন্বিত কৌশল নিতে হবে।

প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে, বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি চার্জ ভর্তুকি বাদ দিতে হবে। সরকারের অতিরিক্ত জনবল ইত্যাদি বিষয়ে ব্যয় কমাতে হবে।

দ্বিতীয়ত, সহজে কর আদায়ের খাতগুলি বের করতে হবে, যেমন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন পন্থায় কর ফাঁকি দেয় তাই ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল সক্রিয় করে কর আদায় বাড়ানো যেতে পারে। তাছাড়া দেশি কোম্পানিগুলোকে যে কর সুবিধা দেওয়া হয় তা পুননিরীক্ষা দরকার।

তৃতীয়ত, দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উৎস থেকে বিদেশি অনুদান বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। চতুর্থত, র্দীর্ঘমেয়াদি কম সুদের হার ও গ্রেস পিরিয়ড সম্পন্ন বিদেশি ঋন নিতে হবে। পঞ্চমত, অভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে ব্যাংক খাত হতে আর ঋণ নেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের অর্থের জোগান দিতে হবে।

লেখক পরিচিতি : সহকারী পরিচালক ( অর্থ), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রকাশিত :  মঙ্গল বার,  ০৭  মে ২০২৪

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন