এক সাংবাদিক ধরতে ৪০ জনের বাহিনী, বিশাল ব্যাপার : হাইকোর্ট

প্রিয় সময় ডেস্ক :

কুড়িগ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দণ্ড দেয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে আদালত বলেছেন, ‘একজন সাংবাদিককে ধরতে মধ্যরাতে তার বাসায় ৪০ জনের বাহিনী গেল, এত বিশাল ব্যাপার!’

এ বিষয়ে দায়ের করা রিটের আংশিক শুনানিতে রোববার (১৫ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রশিদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

এদিকে, ওই সাংবাদিককে সাজা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের আদেশ সোমবার (১৬ মার্চ) দেবেন হাইকোর্ট। তখন অধিক শুনানি হবে।

দণ্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি। তাকে সাজা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রোববার হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী ইশরাত হোসেন। দুপুরে রিটের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন- ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য।

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে আগামীকালের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায়ের কপি, সাজা ভ্রাম্যমাণ আদালত না কি টাস্কফোর্স দিয়েছে এবং মধ্যরাতে এভাবে কারও বাসায় যাওয়ার এখতিয়ার আছে কি-না প্রভৃতি তথ্য জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে, ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ কে দিয়েছে, সেটির কোনো লিখিত তথ্য আছে কি-না তাও জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট।

সকালে দায়ের হওয়া ওই রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে বিবাদী করা হয়। এছাড়া ওই সাংবাদিককে সাজা দেয়ার ঘটনায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে হাইকোর্টে তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

রিটে ফৌজদারি কার্যবিধি, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সংবিধানের ৩১, ৩২, ৩৫ এবং ৩৬ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে। তার বাসা থেকে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই সাংবাদিককে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান। যদিও জামিন পেয়েছেন ওই সাংবাদিক।

এদিকে, ডিসি সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।