নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই মেঘনায় ইলিশ ধরার ধুম!

মো. হৃদয় হোসেন রায়পুর প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে যেন ইলিশ ধরার ধুম পড়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিনই জেলেরা দলবদ্ধ হয়ে নদীতে যাচ্ছেন। প্রশাসনের জোরালো তদারকির অভাব ও উপকূলীয় এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মদদে নদীতে অবাধে ইলিশ ধরছেন জেলেরা। এতে ইলিশ রক্ষায় সরকারের কর্মসূচি ভেস্তে যেতে বসেছে।

এদিকে জেলার বিভিন্ন গ্রামে ভ্যান ও রিকশাযোগে জেলেদের ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে জাটকা থেকে মা ইলিশও রয়েছে। তুলনামূলক কম দাম হওয়ায় ক্রেতারাও কিনে নিচ্ছেন।

অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসনের দায়সারা অভিযানে গত ১২ দিনে ৫৭ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ৮২৫ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। আটক জেলেদের জরিমানা ও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে আটক জেলেদের দাবি, কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় বাধ্য হয়ে তারা নদীতে মাছ ধরতে যান।

gif maker

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের সমসেরাবাদ, লামচরী, শাকচর, চররুহিতা, রায়পুরের বামনী, সাগরদি, শিবপুর, দেনায়েতপুর, কমলনগরের কালকিনি, চরমার্টিন, চরলরেঞ্চ, রামগতির সবুজগ্রাম ও আলেকজান্ডারসহ বিভিন্ন গ্রামে ফেরি করে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত রিকশা ও ভ্যানযোগে জেলেরা মাছ বিক্রি করেন। প্রকাশ্যে এ ইলিশ বেচাকেনা চললেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের যেন নজর নেই। রামগতির জারিরদোনা খাল, বাতিরখাল, কমলনগরের মতিরহাট, কালকিনি, সদরের চররমনি, করাতিরহাট, রায়পুরের চরকাছিয়াসহ মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় মাছ ধরা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের অভয়াশ্রম হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা মাছ ধরতে যাচ্ছেন। ২৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) বিকেল পর্যন্ত মৎস্য প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও কোস্টগার্ডের অভিযানে ৫৭ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। বাকিদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এ সময় ৮ লাখ ২০ হাজার মিটার জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। জালগুলোর বাজার মূল্য আনুমানিক ২১ লাখ টাকা। অভিযান চালিয়ে ৮২৫ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো জেলার বিভিন্ন এতিমখানা ও অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়।