না.গঞ্জে যুবলীগ নেতার বাবার পিটুনিতে ভাড়াটিয়া বৃদ্ধের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ নেতার বাবার পিটুনিতে সিরাজুল ইসলাম (৬৫) নামে তাদের বাড়ির ভাড়াটে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১২ জুন) বিকেলে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার জামতলা হাজী ব্রাদার্স রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে যুবলীগ নেতার বাবা অভিযুক্ত শাজাহান পলাতক রয়েছেন।

নিহত সিরাজুল ইসলাম মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার আনারপুরি গ্রামের মৃত কালা চাঁনের ছেলে। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাকে নিয়ে জামতলায় জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজের বাবা শাহজাহানের বাড়ির ভাড়াটে বাসিন্দা।

সিরাজুল ইসলামের জামাতা জসিম উদ্দিন জানান, বাড়ির বিদ্যুৎ বিল বাবদ বকেয়া সাড়ে তিন হাজার ছয়শ’ টাকা পরিশোধ না করায় গত বৃহস্পতিবার তার বৃদ্ধ শ্বশুরকে ডেকে নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন বাড়ির মালিক শাহজাহান। এলোপাতাড়ি পিটুনিতে বৃদ্ধ পিঠে, কানে ও বুকের পাঁজরে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ ঘটনার পর বাড়ির মালিক শাজাহান পালিয়ে গেলে স্বজনরা তার শ্বশুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলে তাকে বাসায় নিয়ে গেলে রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। শুক্রবার বিকেলে বাড়িতেই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।

বাড়ির মালিক শাজাহান নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজের বাবা। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি ছেলের রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাবে এলাকায় বেশ দাপটের সাথে চলাফেরা করেন। যে কারণে ভাড়াটে বৃদ্ধের উপর এই নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি এলাকার কেউই। এছাড়া তার ছেলে শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ নিজেও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন প্রিয় সময়কে জানান, বাড়িওয়ালা দ্বারা নির্যাতনের শিকার হওয়া এক ভাড়াটে বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ওসি আরো জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সদরের জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাড়ির মালিক এলোপাথাড়ি ছেলে জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ বিভিন্ন সময়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে বেশ সমালোচিত হয়েছেন। যৌতুকের দাবিতে নিজের চতুর্থ স্ত্রীকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগে ফতুল্লা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজকে। এ ঘটনায় ফয়েজের স্ত্রী আরোহি বাদী হয়ে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বেশ কিছুদিন কারাবাস করে সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পান ফয়েজ। তবে গ্রেফতার হওয়ার পর স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে ধারাবাহিক সংবাদও প্রচার হয়।