ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ করা উচিত

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রি. ২০ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৫ মুহররম ১৪৪২ হিজরি, শুক্রবার

সম্পাদকীয়

সবশেষে ভোক্তারাই ভুক্তভোগী হয়। সেটা দামে হোক, ওজনেই হোক অথবা মেয়াদোত্তীর্ণের দিকেই হোক। সবক্ষেত্রে ভোক্তাদের উপরই চাপটা চলে আসে। আর ভোক্তারা বিশ্বাস করেই দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করে নিয়ে এবং ভোগ করে। প্রত্যক্ষ কিম্বা পরোক্ষভাবে ক্ষতির শিকারও ভোক্তারাই হয়ে থাকে। আর এক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষই সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত ও তদন্ত করা উচিত। প্রিয় সময়ে ‘দোহারের কার্তিকপুরে তিন মিস্টি ব্যবসায়ীসহ ১৮ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ড’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা অনেক চাঞ্চল্যকর বিষয় জানতে পারলাম।

প্রকাশি সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ২০০৯ এর কয়েকটি ধারায় তিনটি মিষ্টান্ন ভান্ডারকে ওজনে কারচুপি ও অস্বাস্থকর পরিবেশে মিষ্টি বানানোর দায়ে জরিমানা করা হয়। কাজটি যথার্থ হয়েছে। ওজনে চারচুপি হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক। অথচ এ বিষয়ে ক্রেতারা মোটেও সচেতন নন। প্রতি কেজিতে যদি ক্রেতাকে ৫০ গ্রাম করেও ঠকানো হয় তাহলে ক্রেতার কাছ বিক্রেতা প্রচুর টাকা গোপনে হাতিয়ে নিচ্ছে।

আর ক্রেতা দীর্ঘদিন ঠকেই যাচ্ছে। এসব বিষয়ে ক্রেতাদের আরো সচেতন হওয়া দরকার। অনেক আত্মসম্মানের ভয়ে এসব বিষয়ে চিন্তাও করে না, তারা মনে করে ওজনে সামান্য একটু কম হলে সমস্যা নেই, ওটা দোকানদার একটু করেই থাকে, অথবা এই সামান্যতে কিছু যায় আসবে না-ইত্যাদি ভেবে তারা দোকানদারদের কিছু বলে না। কিম্বা কোনোভাবেই ক্রেতারা পরীক্ষা করেও দেখে না যে এখানে ওজন ঠিক আছে কিনা।

তাছাড়া আরেকটা বিষয় আমরা দেখি যে, চকচকে সুন্দর দামী গ্লাসের ভেতরে মিষ্টি রাখা থাকে। দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। কিন্তু এসব মিষ্টি যেখানে বানানো হয়, সেখানকার বানানোর পরিবেশ অত্যন্ত জঘন্য ও নোংরা ধরনের। সেটা ক্রেতাদের পক্ষে যাচাই করা সম্ভব হয় না। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে সে জায়গাও দেখা দরকার। তাহলে বিক্রেতারা নিজেরা সচেতন থাকবে এবং পরিস্কারভাবে জিনিসপত্র তৈরি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

অবশ্য বিক্রেতাদের এসব বিষয়ে মানবিক হওয়া দরকার। ভোক্তাদের কথা সবার আগে ভাবা উচিত। খাওয়ার জন্যে যে জিনিস তৈরি করা হবে তা যেন পরিস্কার জায়গায় তৈরি করা হয়। তাদের এটা চিন্তা করা উচিত যে, সততা সবার উপরে। এর উপর আর কোনো কথা থাকতে পারে না। ক্রেতা বিশ্বাস করেই তার দোকান থেকে ভালো মনে করে জিনিস ক্রয় করে নিয়ে যায় সুতরাং সেক্ষেত্রে কেনো তাদের সাথে অন্যায় করা হবে।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জেনেছি, বিভিন্ন মিষ্টির দোকানকে বিভিন্ন টাকার অঙ্কে জরিমানা করা হয়েছে। যা ওই সব মিষ্টি দোকানদারদের জন্যে অত্যন্ত লজ্জাজনক। এরপরও যদি তারা সচেতন না হয় তাহলে সেসব দোকানগুলো সীলগালা করে দেয়া উচিত বলে সর্বজন মনে করে।

তাছাড়া করোনার সময়ে যারা মাস্ক ব্যবহার করেনি তাদেরকেও শাস্তি দেয়া হয়েছে। মোটর সাইকেল আরোহরীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও মোটর সাইকেল এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না দেখাতে পারায় এবং হেলমেট ব্যবহার না করার দরুণও ১৮ টি মামলা করা হয়েছে। সেদিন মোট ২১৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো। আমাদের মনে হয় এরপর থেকে সেখানকার সকলেই মাস্ক ব্যবহার করবে, মোটর সাইকেল আরোহীরা হেলমেট ব্যবহার করার পাশাপাশি কাগজপত্র সাথে রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রি. ২০ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৫ মুহররম ১৪৪২ হিজরি, শুক্রবার