চার টুকরো করা হলো গৃহবধূকে

সম্পাদকীয় …

ইদানিং ভয়াবহ হারে খুন, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমরা এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন দুঃখজনক ঘটনাগুলো শুনতে শুনতে আমাদের মানসিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। একটা অসুস্থ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চারিদিকে। মানুষ মানুষকে ক্ষতি করতে মোটেও কুণ্ঠাবোধ করছে না। জঘন্য ঘটনাগুলো আমাদেরকে শুধু কাঁদায়; আর হাসি আমাদের মন থেকে কেড়ে নেয়। মধ্যযুগের বর্বরতা বুঝি আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে-এমন একটা ভীতিকর সময়ে আমরা চলছি।

প্রিয় সময়ে ‘নোয়াখালীতে এবার চার টুকরো করা হলো গৃহবধূকে’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিতে আমরা জানতে পারলাম কতোটা মর্মান্তিক একটা ঘটনা ঘটে গেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। এসব ঘটনা শুনলে মনে হয়, মানুষের মধ্য থেকে শিক্ষা, নৈতিকতা হারিয়ে গেছে। মানুষের বোধশক্তির মৃত্যু ঘটেছে। বিবেক অবশ হয়ে গেছে; তাই নীতিবর্জিত কাজ করতে মোটেও পিছপা হচ্ছে না। ক্রোধের বশবর্তী হয়ে যখন যেটা করতে মন চাইছে সেটাই করে মনে প্রশান্তি লাভ করার চেষ্টা করছে। আদতে এসবে কোনো শান্তি আসে না। প্রতিশোধপরায়ণতা, হিংসা, রাগ, ক্ষোভ মানুষের মনুষ্যত্ব বিলীন হতে চলেছে।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা ভুলে যায়নি মানুষ। অথচ তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার জেলার সুবর্ণচরে আরেক নারী নূর জাহান বেগম (৪২) নামে এক গৃহবধূকে চার টুকরো করে কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। কী ভয়ঙ্কর সব ঘটনা আমাদের শুনতে হচ্ছে, দেখতে হচ্ছে!

এসব ঘটনা পাড়া প্রতিবেশীর শিশুরা, নতুন প্রজন্মের মানুষ জেনে শুনে তাদের মনের প্রতিক্রিয়া, অনুভূতি কেমন হতে পারে-সেটা অনুমান করা বড়ই কঠিন। তাছাড়া তাদের মধ্যে কী প্রভাব পড়বে সেটাও সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, গত ‘বুধবার (৭ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর জাহাজমারা গ্রামের প্রভিটা ফিডের পেছনের একটি ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নূর জাহান বেগম উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল বারেকের স্ত্রী।’ ঐ নারীর চার টুকরো করা হলেও ওই গৃহবধূর মরদেহের দুই টুকরো (মাথা আর কোমরের অংশ) উদ্ধার করা হয়েছে। তবে শরীরের বুক ও পায়ের অংশ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনাকে আমরা নিন্দা জানাই। সুশীল সমাজ কোনোভাবেই এমন দুঃখজনক ঘটনা মেনে নিতে পারে না। স্বাধীন এ দেশের মানুষ কোনোভাবেই এমন ঘটনাকে গ্রহণ করতে পারে না। সকলের মধ্যেই এ ঘটনার জন্যে নিন্দার ঝড় উঠুক। আমরা চাই এ ঘটনার নেপথ্যের কাহিনী খুঁজে বের করা হোক। এ বিষয়ে প্রশাসনকেই এগিয়ে আসতে হবে। খতিয়ে দেখা হোক এমন বীভৎস ঘটনার মূল কারণ কী হতে পারে! তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

১৫ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ৩০ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৭ সফর ১৪৪২ হিজরি, বৃহস্পতিবার