সময়ে চেনা যায়

কথিকা : ক্ষুদীরাম দাস

আমরা সময়কে মোটেও অস্বীকার করতে পারি না। কেননা সময় আমাদের পরিচালনা করে। আমাদের দিকনির্দেশনা দেয়। আর সেই সহয় হলো পরিস্থিতির সময়। এর সাথে অবশ্য যথেষ্ট স্বার্থ জড়িত। সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে। আর সময় সময় দ্বারা আমরা সকলেই নিযন্ত্রিত। সময়তে সবকিছুই বদলে যায়, বদলে যায় মানুষের মন ও চাহিদা, বদলে যায় সবকিছুই।

যেমন-দশ বছর আগেও যার সাথে ভাব ছিলো; এখন তার সাথে সেই রকম ভাব নেই, সে কাছে থেকেও দূরে। হতে পারে সময়ে তার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেক উন্নত হয়েছে-সে আর আপনাকে আগের মতো গুরুত্বই দিলো না। আপনাকে সে মোটেও চিনলো না-এমন হতে পারে।

আর এটাকে যদি স্বাভাবিক না নিতে পারি, তাহলে আমাদের কষ্টটা অনেক বেড়ে যাবে। আবার দেখা যায় নিজের কলিজার টুকরো ছেলেটা বিয়ে করলো, তখন তার আসল রূপ মা বাবার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়, এটাও একটা সময়। অথবা নিজের মেয়েটি যখন পা রেখেছে তার তার চাহিদা ও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার পরিস্থিতির কারণে সেও বদলে গেছে। স্ত্রী যখন অসুস্থতায় ভোগে তখন তার স্বামীর ভূমিকা কতটুকু থাকে সেটা সেই সময় পরিস্কার বোঝা যায়।

অপরদিকে স্ত্রীর আসল রূপ স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় স্বামীর যখন দারিদ্রতা চলে আসে, অথবা পরিস্থিতির কারণে অভাব শুরু হয়, তখন স্ত্রীর আসল পরিচয় পরিস্কার হয়ে যায়। আবার মনে হতে পারে বন্ধুর চেয়ে আপন বুঝি আর কেউ নেই, কিন্তু বিপদ আসলে বন্ধুরও পরিচয়টা সেই সময় বোঝা যায়। আমরা অবশ্যই দুই বন্ধুর গল্পটি মনে রেখেছি। বনের পথ ধরে হাঁটছিলো, তখন ভাল্কু দেখে গাছে উঠতে পারা বন্ধুটি গাছে উঠে গেলো, অথচ নিজের বন্ধুর কথা মোটেও চিন্তা করলো না। সেভাবে আপন ভাইকেও সরল মুহূর্ত অথবা কঠিন মুহূর্তেও চেনা যায়। তাছাড়া প্রতিটি মানুষই যখন বার্ধক্যে চলে যাবে, তখন সন্তানকেও সে চিনতে পারবে,-কিন্তু মনে দুঃখ থাকলেও কাউকে বলতে পারবে না।