মানুষরূপী এসব অজ্ঞান পার্টি শকুনদের নির্মূল করতে হবে

সম্পাদকীয়

আমরা প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে শুনে আসছি অজ্ঞান পার্টি বা মলম পাটির খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষজন। বিশেষ সময়ে: যেমন-ঈদ, পুজা, পহেলা বৈশাখীর দিনগুলোতেই সাধারণত এসব ঘটনা বেশি ঘটে থাকে।

মানুষ এ সময়ে যাতায়াত করে টাকা-পয়সা নিয়ে, আর এ সুযোগকেই কাজে লাগায় তারা।এ সময় ঐ পার্টিগুলোর তৎপরতা বেড়ে যায়। শহরের বাস-লঞ্চ-ট্রেন টার্মিনালসহ জনাকীর্ণ স্থানে ছদ্মাবেশ ধারণ করে ওঁৎ পেতে থাকে এসব পার্টির লোকজন। ওরা খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে চেতনানাশক ওষুধ। এসব কিনে কেউ খেলেই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।

আর তখন সাথে থাকা সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে যায় ওরা। কোনো কোনো সময় চেতনানাশক ওষুধের পরিমাণ বেড়ে গেলে মারাও যায়। অথবা শোনা যায় যে, অজ্ঞান পার্টির শিকারদের কেউ কেউ স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারে না। এসব অজ্ঞান পার্টির লোকজন খুবই সক্রিয় থাকে। তাদের চতুরতা বোঝাই যায় না। মানুষ এ সময়ে যাতায়াত করে টাকা-পয়সা নিয়ে, আর এ সুযোগকেই কাজে লাগায় তারা।

বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে জানা যায় যে, এসব পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া মানুষজন অত্যন্ত সহজ-সরল হয়। তবে কখনো কখনো বুদ্ধিমান বা মেধাবী ব্যক্তিরাও এসব পার্টির খপ্পরে পড়েছেন এমন ঘটনার অভাব নেই।

প্রিয় সময়ে ‘রূপগঞ্জে মলমপার্টির খপ্পরে পড়ে ৫ লাখ টাকা খোয়ালেন ২ ব্যবসায়ী’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি দুঃখজনক ঘটনাটি। নিশ্চয়ই দুই কাপড় ব্যবসায়ী অন্তত অনেকগুলো টাকা রক্ষায় অত্যন্ত সতর্কই ছিলো।

অথচ তাদের সতর্কতা উপেক্ষিত হয়েছে চতুর শকুনদের কাছে। ওরা টার্গেট করে রেখেছে দুইজনকেই। আর সুযোগ বুঝে তারা আক্রমণ করেছে তাদের নিজস্ব কৌশলে। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানা যায় যে, ‘রূপগঞ্জের বান্টি এলাকায় পৌছালে একই বাসে থাকা অজ্ঞাত মলম পার্টির সদস্যরা কৌশলে তাদেরকে অজ্ঞান করে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে ওই বাস থেকে তাদেরকে গাউসিয়া মার্কেটের সামনে ফেলে যায়। স্থানীয়রা তাদের অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করে। এসময় তাদের সঙ্গে থাকা দুইটি স্মার্ট ফোন কে বা কারা নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের জ্ঞান ফেরেনি।’

এসব অজ্ঞান পার্টি সংঘবদ্ধভাবে বিচরণ করে। কখনও ক্রেতার বেশে, কখনও যাত্রীবেশে মানুষকে টার্গেট করে। সুতরাং আমরা মনে করি, এসব ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে অপরিচিত কারও দেয়া খাবার না খাওয়াই সবচেয়ে বেশি ভালো। যাত্রাপথের দূরত্ব বেশি হলে টিফিন বক্সে করে বাড়ি থেকে তৈরি খাবার নিয়ে আসলে এসব ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

আমরা আরো মনে করি, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া দেয়া উচিত। তারা যেন কোনোভাবেই ফাঁকফোকর দিয়ে আদালত থেকে অতি সহজে ছাড়া পেয়ে না যায়।বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নেয়া দরকার। অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া ব্যক্তিদের অবস্থা এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে এই পার্টি নির্মূলে সরকারকে কঠোর হতে হবে। মানুষরূপী এসব অজ্ঞান পার্টি শকুনদের নির্মূল করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।