দোহারে সেতু নির্মাণ কাজ স্থগিত করায় এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার দোহার উপজেলায় পদ্মা নদীর শাখা খালের উপরে বটিয়া-রাধানগর এলাকায় নির্মাণাধীন সেতু নির্মাণের কাজ একটি কুচক্রি মহল স্থগিত করেছে বলে বিক্ষোভ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে স্থানীয় জনগণ।

শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বটিয়া-রাধানগর এলাকায় পদ্মা নদীর শাখা খালের উপরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকাতে খালের দু’পারের হাজারো মানুষ একত্রিত হয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এসময়ে তারা জানান, তাদের দীর্ঘ ৪০ বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়ন স্থগিত হয়ে গেছে। তাদের দাবি দ্রুত এই সেতু নির্মাণের কাজ চালু করা হোক।

জানা যায়, উপজেলার পৌরসভা সংলগ্ন বটিয়া-রাধানগর এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে পদ্মা নদীর শাখা খালের উপর ৪৮ মিটার আরসিসি ব্রিজ নির্মাণাধীন রয়েছে। যার প্রাক্কলিত ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জ্যোতি ট্রেডার্স। সেতুটির প্রায় ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে জানান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জ্যোতি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. সালাহ উদ্দিন।

খালের দু’পাড়ের স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, এই সেতু নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের জনপথ উন্নত হচ্ছে। কিন্তু অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ দিন ধরে এ অঞ্চলে বাল্কহেড ও ট্রলার ব্যবহার করে এ খালে নিয়মিত চলাচল করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। তার ধারাবাহিকতায় বালু ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার লোভে সেতু নির্মাণের কারণে অবৈধ নৌ-যান চলাচলে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় তারা সেতু নির্মাণের ত্রুটি তুলে ধরে কৌশলে সেতু নির্মাণ প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের কাজ স্থগিত করতে চাপ সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, সারাদেশে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খালে পানির উচ্চতা কিছুদিনের জন্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে এ খালে অবৈধ বালু বহনকারী নৌ-যান চলাচলে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। এ অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে উপজেলার সাথে সরাসরি যোগাযোগ সহজ হবে। পাশাপাশি হাসপাতাল, জয়পাড়া হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা ও মৃত ব্যক্তির লাশ বহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ সেতুটি।

এ বিষয়ে এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক মো. সেলিম মিয়া জানান, এ খালে আরও অন্য চারটি সেতুগুলোর সঙ্গে পারিপার্শ্বিকতা উচ্চতা, গভীরতা ও নৌ-যান চলাচলে উপযোগী যাচাই-বাছাই করেই সেতুটির নকশা করা হয়েছে। তাছাড়াও এই সেতুটির উচ্চতা বৃদ্ধি করলে সেতুতে চলাচলকারী যানবাহনের উঠা-নামা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। জায়গা স্বল্পতা থাকার কারণে সেতুর এপ্রোচের পাশের মসজিদ ও ব্যক্তিগত স্থাপনা বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে এটা বিবেচনা করেই আমরা বর্তমান সেতুটির নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি।

দোহার উপজেলা প্রকৌশলী হানিফ মোহাম্মদ মুর্শেদী জানান, সেতুর দু’পাশে এপ্রোচ সড়কের জায়গা না থাকায় মূল অংশ উঁচু করা যাচ্ছে না। তবে বৈধ নৌ-যান চলাচল করতে পারবে। বর্তমানে সেতুটির কাজ স্থগিত রাখতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা উঠেপড়ে লেগেছে। সম্প্রতি জয়পাড়ার পুরাতন বড় বিজ্রের নিচ দিয়ে বালু বহনকারী বাল্কহেড নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রিজের মূল খুটিতে ধাক্কা দিলে সেখানে গভীর ফাঁটলের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে মাহমুদপুর ইউনিয়নের ধলু খাঁর ব্রিজটি একই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণাধীন রয়েছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমি চাই সেতুটি নির্মিত হোক। সেতুটি নির্মাণ হলে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ ৪০ বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। সেতুটির উচ্চতা বাড়ানো যায় কি না সে বিষয়ে আমি প্রকৌশলীদের সঙ্গে নিয়ে সেতুটি পরিদর্শন করেছি।

আরো পড়ুন : শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায়

আরো পড়ুন : মেহ প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের কার্যকরী সমাধানসমূহ

আরো পড়ুন : পাইলস রোগে করণীয়

আরো পড়ুন : জেনে নিন দীর্ঘক্ষণ মিলনের ঔষধ

আরো পড়ুন : একজিমা হলে কী করবেন?