যৌনকাজে বেছে নেন গাড়ি, রাত হলেই বিকৃত লালসা মেটাতেন সেই কনস্টেবল

ফেনী প্রতিনিধি :

মাস তিনেক আগে পুলিশের হাতে আটক হন কিশোর হৃদয় (ছদ্মনাম)। তাকে ধরেই একটি হোটেলে নিয়ে যান পুলিশ কনস্টেবল ইউনুস আলী। সেখানে মামলার ভয় দেখিয়ে করেন বলাৎকার। দৃশ্যটি ধারণ করেন মুঠোফোনেও। এরপরই শুরু হয় কনস্টেবল ইউনুসের বিকৃত যৌনাচার।

তল্লাশির নামে হোটেলে নিয়ে বলাৎকারের সেই ভিডিও দেখিয়ে কিশোরকে নিয়মিত বলাৎকার করতেন কনস্টেবল ইউনুস। তবু ক্ষান্ত হননি, কিশোরকে নিজ বাড়িতে নিয়ে তুলে দেন অন্য যুবকদের হাতে। তারাও তাকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, থানায় রাখা পরিত্যক্ত গাড়িতে গড়ে তোলেন বিকৃত যৌনাচারের নিরাপদ জোন। আর রাত হলেই সেখানে চলতো যৌন নির্যাতন। এভাবেই টানা তিন মাস পুলিশ সদস্যের লালসার শিকার হন ভুক্তভোগী কিশোর। অবশেষে পুলিশের জালে আটকা পড়েছেন কনস্টেবল ইউনুস আলী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনী মডেল থানায় কর্মস্থল থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিকেলেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এর আগে, বুধবার কনস্টেবল ইউনুস আলীর নামে থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরের মা।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এক আদেশে ইউনুস আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেন পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন। এছাড়া ওই কিশোরের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে।

এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর তল্লাশির নামে মহিপাল থেকে তাকে আটক করেন ইউনুস আলী। এরপর তাকে পাশের একটি হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রথম দফায় বলাৎকার করেন। সে চিত্র মোবাইলে ধারণ করা করেন ইউনুস।

এ ভিডিও দেখিয়ে নিয়মিত তাকে বলাৎকার করতে থাকেন। এরই মধ্যে ওই কিশোরকে নিয়ে নিজ গ্রামের বাড়ি যান ইউনুস। সেখানে তার অন্য সহযোগীরাও কিশোরকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন। পরে ইউনুসের মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে আসেন কিশোর। বাড়ি ফিরে মোবাইলের সব ভিডিও ডিলিট করে সেটি বিক্রি করে দেন।

এরই মধ্যে কনস্টেবল ইউনুস নিজের মোবাইলের আইএমইআই নম্বর ধরে ক্রেতার কাছে পৌঁছান ও খোঁজ নেন। পরে মহিপালের মোবাইল ক্রেতা ওই কিশোরের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানালে পুরো ঘটনা জানাজানি হয়। কিশোর বাধ্য হয়ে তার পরিবারের কাছে ঘটনা খুলে বলেন। এরপরই বুধবার কনস্টেবল ইউনুসের নামে মামলা করেন ওই কিশোরের মা।

ভুক্তভোগী কিশোর জানান, থানায় রাখা পরিত্যক্ত একটি গাড়ির ভেতর নির্যাতনের আঁতুড়ঘর বানিয়েছেন ইউনুস। সেখানে গভীর রাতে চালানো হতো নির্যাতন।

কিশোরের মায়ের দাবি, ইউনুস আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। একই সঙ্গে তার সহযোগীদেরও আইনের আওতায় আনা হোক।

ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, মামলার এক দিন পরই ওই কনস্টেবলকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই কিশোরকে পুলিশের জিম্মায় নেয়া হয়েছে। আদালতে ২২ ধারায় তার জবানবন্দি নেয়া হবে।

(ডেইলি বাংলাদেশ)