পবিত্র মাহে রমজানের গুরুত্ব ও ফযিলত

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার।আর এজন্যই আমরা তার প্রশংসা করি।তার নিকট সাহায্য,ক্ষমা,প্রার্থনা এবং সর্বদা তারই উপর ভরসা রাখি।আমরা মহান প্রভুর নিকট আশ্রয় কামনা করছি।আমাদের নফসের অন্যায় আচরণ এবং খারাপ আমলের অনিষ্ট হতে।বস্তুতঃ মহান আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারেনা।

হে মুসলিম ভ্রাতাগণ!
বরকতময় আল্লাহ রমজান মাসের সীমাহীন বরকত দ্বারা আপনাদেরকে সৌভাগ্যশীল করুন!আপনারা যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে মাহে রমজানের হকসমূহ আদায় করুন,আর হতভাগাদের দলভুক্ত হবেন না।জেনে রাখুন মাহে রমজানের ফজিলত মহান রমজানের শানে বহু আয়াত ও হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ-হে ঈমানদারগণ!তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরয করা হয়েছে,যেমনিভাবে রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পারো।
(সূরা বাকারা-১৮৩)।

অপর আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ-রমজান মাস হলো সে মাস,যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন,মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্য পথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ,আর ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী রূপে।

কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে সে এ মাসের রোজা রাখবে,আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকে সেই অন্যদিনে ইহার গণনা পূরণ করবে।
(সূরা বাকারা-১৮৫)।

হাদিস শরীফে রমজানের গুরুত্ব ও ফযিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে,হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-বর্ণিত,রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-যখন রমজান মাসের প্রথম রাত আসে শয়তান ও অবাধ্য জ্বিন সকলকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়।
দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয়,উহার কোন দরজা খোলা হয় না এবং বেহেশতের দরজা সমূহ খোলা হয়। উহার কোন দরজাই বন্ধ করা হয় না।

এ মাসে এক আহবানকারী আহবান করতে থাকে।
হে ভালোর অন্বেষণকারী অগ্রসর হও,হে মন্দের অন্বেষণকারী থেমে যাও,আল্লাহ তা’আলা এ মাসে বহু ব্যক্তিকে দোযখ হতে মুক্তি দেন আর এটা প্রত্যেক রাতেই হয়ে থাকে-(তিরমিজি)।

হযরত সালমান ফারসী (রাঃ)-হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসূল (সাঃ)-শাবান মাসের শেষ তারিখে আমাদের মাঝে ভাষণ দিলেন এবং বললেনঃ-হে মানব মন্ডলী!

তোমাদের প্রতি ছায়া বিস্তার করছে একটি মহান মাস, মোবারক মাস,এমন মাস যাতে একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ,আল্লাহ তায়ালা রমজানের রোজা তোমাদের জন্য করেছেন ফরজ এবং রমজানের রাতে নামাজ পড়া তোমাদের জন্য করেছেন নফল।

যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল কাজ করবে,সে ঐ ব্যক্তির সমান হল,যে অন্য মাসে মাসে একটি ফরজ আদায় করল।
আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরয আদায় করল,সে ঐ ব্যক্তির সমান হল যে অন্য মাসে ৭০-টি ফরজ আদায় করল।
রমজান সবরের মাস,আর ধৈর্য্যের সাওয়াব হলো বেহেশত।
রমজান সহানুভূতি প্রদর্শনের মাস।

এটা সে মাস যাতে মুমিনের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
যে কেউ এ মাসে কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে,তার জন্য তার গুনাহসমূহের কাফফারা হবে এবং দোযখের আগুন হতে মুক্তির কারণ হবে।তাছাড়া তার সওয়াব হবে সেই রোযাদার ব্যক্তির সমান অথচ রোযাদারের সওয়াব কম হবেনা-(বায়হাকী)।

পরিশেষে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট বিতাড়িত শয়তান হতে আশ্রয় চেয়ে প্রার্থণা করছি হে প্রভু!আমাদেরকে পবিত্র মাহে রমজানের রোযা রাখার তৌফিক দান করুন,এবং ভয়ংকর দিনে এই রোযাকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী হিসেবে কবুল করুন।
আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক : মোঃ রফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থীঃ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়।