মনপুরা প্রশাসনের দু’টি পদ খালি, জনগণের দুর্ভোগ

মনপুরা প্রতিনিধি।
ভোলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শূন্য থাকা দুর্ভোগ পড়েছে স্থানীয় জনগণ। এ অবস্থায় ব্যাহত হচ্ছে দাপ্তরিক কার্যক্রম। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সঠিকভাবে তদারকি হচ্ছে না উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। ইউএনও না থাকায় প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন আশীষ কুমার দাস। বদলিজনিত কারণে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কর্মস্থল থেকে বিদায় নিয়ে অন্যত্র যোগদান করেন। তারপর থেকে তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে কাউকে ওই পদে পদায়ন করা হয়নি।

জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে উপজেলায় ৩৪টি দপ্তর রয়েছে। ইউএনও না থাকায় এসব দপ্তরের বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। তদারকি না থাকায় বেশিরভাগ দপ্তরের অফিস তালাবদ্ধ দেখা গেছে দিনের পর দিন। এতে ব্যাহত হচ্ছে এসব দপ্তরের কর্মকাণ্ড।

এছাড়াও মনপুরা উপজেলার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন ইউএনও। পদটি শুন্য থাকায় ব্যাহত হচ্ছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।উপজেলা বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ পরিদর্শনের দায়িত্ব থাকলেও ইউএনও না থাকায় সেটিও ঠিকমত হচ্ছে না ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, হঠাৎ স্যারের বদলিতে অফিসের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন কোনো স্যার না আসা পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের অপেক্ষা করার কথা বলা হচ্ছে।

সেবাগ্রহীতা রিপন বলেন, আমার জমির নামপত্তন করার দরকার। নতুন স্যার না আসা পর্যন্ত কাজের কোনো গতি হবে না বলে জানিয়েছেন। ভূমি অফিস ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভূমি অফিসের কাজকর্ম দায়িত্ব পালন করেন সেটাও হচ্ছে না ইউএনও না থাকায়।

এদিকে, মনপুরায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পদটিতে পদায়ন না থাকায় চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান মনপুরার অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। মনপুরা উপজেলাটি নদীমাতৃক হওয়ায় চরফ্যাশন থেকে এসে দাপ্তরিক কাজ করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তাছাড়া উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল থেকে মানুষ এসে সেবা না পেয়ে ফেরত যেতে হচ্ছে প্রতিদিন।

মনপুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন, ইউএনও না থাকায় অনেক ফাইল জমা পড়ে আছে। দাপ্তরিক ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় কিছুটা হলেও ধীর গতিতে কাজ হয়েছে। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে যত দ্রুত সম্ভব উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পদে নতুন কর্মকর্তারা নিয়োগদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

জসসাধারণের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে মনপুরায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান বলেন, দীর্ঘ তিন মাস যাবৎ মনুপরায় ইউএনও পদায়ন নেই। আমি চরফ্যাশন থেকে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে মনপুরায় গিয়ে কাজ করা সত্যি কষ্টসাধ্য। তাছাড়া আমি নিয়মিত না থাকায় মনপুরায় সেবা নিতে এসে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই অতি দ্রুত মনপুরায় ইউএনও পদায়ন করা জরুরি।

এ ব্যাপারে ভোলা জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী জানান, ইউএনও’র অনুপস্থিতিতে জনসেবা ব্যাহত হচ্ছে সত্য। তবে চেষ্টা-তদবির চলমান রয়েছে। আশা করি দ্রুত ইউএনও যোগ দেবেন।