জাকারিয়া জাহিদ,কুয়াকাটা প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীর মহিপুরে অবৈধভাবে জমি জবর দখলে নিতে মিথ্যা মামলা দিয়ে অসহায় এক পরিবারকে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সম্প্রতি মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের মুসুল্লীয়াবাদ এলাকায়।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, জমি জবর দখলের ষড়যন্ত্রে কাওসার মুসুল্লী নামের এক চাটুকর শিক্ষক কলাপাড়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সি,আর ১২৬৪/২২ ও ১১৪৮/২১ দু‘টি মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিবেশী নুর আলতাফ, নুরুল হক ও আ: ছালাম তিনজনকে আসামী করে তাদের রেকর্ডীয় ও দখলীয় চলাচলের রাস্তা দখলে নেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। দায়েরকৃত মামলায় সঠিক কোন প্রমাণাদি উপস্থাপন করতে না পারায় বিজ্ঞ আদালত সি,আর ১১৪৮/২১, মামলাটি ইতোমধ্যে খারিজ করে দিয়েছেন এবং সি,আর ১২৬৪/২২ মামলাটি চলমান রয়েছে।
ভুক্তভোগী নুরুল হক জানান, তাদের পরিবার ও কাওসার মুসুল্লী একই এলাকার বাসিন্দা ও প্রতিবেশী বিধায় তাদের উভয়ের একই এলাকায় জমি রয়েছে। সে মোতাবেক জে,এল ৩৪নং দক্ষিণ লতাচাপলী মৌজার এস,এ ৮৬৬ ও বি,এস ১৪৪নং খতিয়ানের ৩০৪ ও ৩১১ নং দাগের মধ্যে ভুক্তভোগীদের দলিল ও শুদ্ধ রেকর্ড মূলে ৯০ শতাংশ জমি রয়েছে। উক্ত জমি তারা দীর্ঘ ৪০ থেকে ৫০ বছর যাবত বাড়ি ঘর করে ভোগ দখল করে আসছে। তবে একই খতিয়ানে প্রতিপক্ষ ওই কাওসার মুসুল্লী সহ অন্যান্য আরও অনেকের জমি রয়েছে এবং তাদের যার যতটুকু জমি রয়েছে কাগজ পত্রানুযায়ী তারা সে অনুযায়ী জমি ভোগ দখল করে আসছে।
তিনি আরও জানান, প্রতিপক্ষ কাওসার মুসুল্লী তাদের রেকর্ডীয় ও ভোগ দখলীয় জমির মধ্য থেকে ৯ থেকে ১০ শতাংশ জমি জবর দখল করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। একপর্যায় কাওসার মুসুল্লী ওই জমি দখল করতে জমির মালিকানা নুর আলতাফদের স্বীকার করে নতুন কৌশল অবলম্বন করে প্রতিবেশী তাদের কাছ থেকে ০৯ শতাংশ জমি ক্রয় করার শর্তে বায়না বাবদ টাকা দিয়েছে এবং দলিল দিচ্ছেনা দাবী করে সি,আর ১২৬৪/২২, মিথ্যা এই মামলাটি দায়ের করেন।
অপরদিকে সি,আর ১২৬৪/২২, মামলাটি সরেজমিনে তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালত কলাপাড়া উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসারকে দায়িত্ব প্রদান করেন। পরিসংখ্যান অফিসার দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে সরেজমিনে তদন্তের জন্য এসে প্রতিপক্ষের মানিত স্বাক্ষী অর্থ্যাৎ তার পরিবারের লোকদের স্বাক্ষী গ্রহণ করেন। পাশাপশি উপস্থিত স্থানীয় একাধিক লোকের স্বাক্ষী নিয়েছেন কিন্তু স্থানীয় লোকের স্বাক্ষী নেয়া সত্বেও প্রতিপক্ষের মানিত স্বজনদের স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য মোতাবেক প্রতিবেদন দাখিল করেছেন বলে তারা সঠিক বিচার পেতে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
সরেজমিনে গেলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মজিবুর রহমান মুসুল্লী, স্থানীয় গন্যমান্য আ: লতিফ মুসুল্লী, ইউনুছ মুসুল্লী, কালাম মুসুল্লী, শাহ আলম মুসুল্লী, কুদ্দুস মুসুল্লী, মুসা মুসুল্লী সহ এলাকার ৩০-৩৫জন উপস্থিতিদের মধ্যে কেহ স্বাক্ষ্য প্রদান করেনী যে, কাওসার মুসুল্লী ওই জমিতে বায়না করেছে বা বায়না বাবদ টাকা দিয়েছে। এর আদৌ কোন সত্যতা পাওয়া যায়নী।
এ বিষয় কাওসার মুসুল্লীর কাছে বায়না টাকা প্রদানের লিখিত কোন প্রমাণাদি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রমাণ যেখানে দেখানোর প্রয়োজন, সেখানে দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে লতাচাপলী ইউনিয়নের সাবেক বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান আ: আজিজ মুসুল্লী বলেন, কাওসার মুসুল্লী অন্যায়ভাবে গরীব নিরিহ ওই পরিবারটিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে শুধু হয়রানী করছে। ওই পরিবারটির চলাচলের জমির মধ্য থেকে অবৈধভাবে জমি জবর দখলে নিতে এসব মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।
এবিষয় লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ন মিথ্যা, কাওসার মুসুল্লী একজন শিক্ষক হলেও সে হচ্ছে প্রতারক, সে অন্যায়ভাবে গরীব অসহায় পরিবারের প্রতি অন্যায় আত্যাচার চালাচ্ছেন। জমির কোন বায়না হয় নাই এবং কোন টাকা পয়সা লেন দেন হয় নাই, এর আদৌ কোন প্রমাণ বা সত্যতা নেই। তাই ভুক্তভোগী ওই পরিবারটি কাওসার মুসুল্লীর নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সৃ দৃষ্টি কামনা করছেন।