মনপুরায় ৫০ কেজি ওজনের কচ্ছপ উদ্ধার মেঘনা নদীতে অবমুক্ত

মনপুরা প্রতিনিধি :

প্রকৃতির নিয়মানুসারে চলছে কচ্ছপের ডিম পাড়ার মওসুম। এ কারণে দ্বীপ উপকূল জুড়ে বেড়েছে সামুদ্রিক কচ্ছপের বিচরণ। সচেতনতা বাড়ায় জেলেদের জালে আটকা পড়ে কাছিমের মৃত্যুর হারও কমেছে অনেক।

ভোলার মনপুরা উপজেলায় বালুর চরে আটকে থাকা অবস্থায় ৫০ কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির একটি অলিভ রিডল সি (জলপাইরঙা) নামের জীবন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। গত ৩ দিন আগে একই প্রজাতির ৪০ কেজি ওজনের আরেকটি সামুদ্রিক কচ্ছপ উদ্ধার করে মেঘনায় অবমুক্ত করেছিলেন বন বিভাগ। এই পযন্ত ২১ দিনের ব্যবধানে মনপুরা থেকে ৩টি জলপাইরঙা সামুদ্রিক মা কচ্ছপ উদ্ধার করে নদী অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানান মনপুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম ।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১০ টা উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড ঈশ্বরগঞ্জ এর পূর্ব দিকে মেঘনা নদীর তীরবর্তী চর থেকে কচ্ছপটি উদ্ধার করে রামনেওয়াজ বিট এর কর্মকর্তারা । পরে উপজেলার ২ নং হাজির হাট ইউনিয়নের চর জামশেদ, জংলার খালের পার্শ্ববর্তী মেঘনা নদীতে সুস্থ্য অবস্থায় কচ্ছপটি অবমুক্ত করা হয় ।

মনপুরা জেলে আবুল কাশেম জানান,আগে জেলেদের জালে কচ্ছপ আটকা পড়লে জেলেরা লাঠি দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলতেন ।এখন জালে আটকা পড়া কচ্ছপ সাবধানতার সঙ্গে ছেড়ে দেয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন বিভাগের রামনেওয়াজ বিট কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম মিলন । তিনি জানান, মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া জোয়ারের পানির সাথে ঈশ্বরগঞ্জ এর পূর্ব দিকে একটি বালুর চরে আটকা পরে ।পরে সকালে একদল জেলে দেখতে পেয়ে মুঠোফোনে জানালে শীত কে উপেক্ষা করে বালুর চর থেকে এই কচ্ছপটি উদ্ধার করা হয় । সম্পূর্ণ সুস্থ ও অক্ষত থাকায় চর জামশেদ এলাকায় মেঘনা নদীতে স্থানীয় জন সাধারণের উপস্থিতে অবমুক্ত করা হয়েছে ।

মনপুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, রামনেওয়াজ বিটের বন কর্মীরা যে কচ্ছপটি উদ্ধার করেছেন সেটি হল জলপাইরঙা সামুদ্রিক কচ্ছপ।মনপুরা থেকে বিচ্ছিন বালুর চর থেকে উদ্ধার করে মনপুরার চর জামশেদ, জংলার খালের পার্শ্ববর্তী বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবমুক্ত করা হয়েছে।

ভোলা বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, দেশের ভৌগোলিক সীমায় বঙ্গোপসাগরে কচ্ছপ বিচরণ করে।উপকৃল বিস্তৃত সমুদ্র সৈকতের বালুচরে এরা ডিম পাড়তে আসে। শীতকাল থেকে বর্ষার শুরু পর্যন্ত কচ্ছপের ডিম পাড়ার সময়।

তার মতে, সৈকত এলাকায় শব্দদূষণ, জেনারেটর চালানো ও যানবাহনের আনাগোনা বেড়ে গেলে মা কচ্ছপ উপকূলে ডিম পাড়তে আসতে ভরসা পায় না।মনপুরা উপকৃল নিরাপদ মনে করায় তারা বারবার বালুর চরে আসে ডিম দিতে। গত ২১ দিনে মনপুরা থেকে বালুর চরে আটকা পড়ায় ৩টি কচ্ছপ বন বিভাগ উদ্ধার করে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অবমুক্ত করেন । তবে কচ্ছপ গুলোকে নিরাপদে ডিম দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে ।