মোঃ রফিকুল ইসলাম (রানা), শিক্ষার্থীঃ-ইসলামি আরবি বিশ্বিবদ্যালয়
।আল্লাহ তায়ালার জন্যই সমস্ত প্রশংসা,আমরা তারই প্রশংসা করি,তারই নিকট সাহায্য চাই,তারই নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করি,সর্বদা তারই উপর বিশ্বাস ও ভরসা রাখি।
হে মুসলিম জাতি!
বরকতময় আল্লাহ রমজান মাসের সীমাহীন বরকত দ্বারা আপনাদেরকে সৌভাগ্যশীল করুন!আপনারা যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে মাহে রমজানের হকসমূহ আদায় করুন!আর হতভাগাদের দলভুক্ত হবেন না।জেনে রাখুন মাহে রমজানের ফজিলত মহান।রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলতে বহু আয়াত ও হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
পবিত্র মাহে রমজান সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ-রমজান মাস হলো সে মাস,
যাতে নাযিল করা হয়েছে পবিত্র কুরআন,মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্য পথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ,আর ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী রূপে।কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে,সে এ মাসের রোজা রাখবে,আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকে,
সে অন্যদিনে গণনা (কাফফারা)পূরণ করবে।
(সূরা বাকারা-১৮৫)।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণিত,তিনি বলেন
রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-যখন রমজান মাসের প্রথম রাত আসে,শয়তান ও অবাধ্য জ্বিন সকলকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়,দোযখের দরজা সমূহ বন্ধ করা হয়,উহার কোন দরজাই খোলা হয় না এবং বেহেশতের দরজা সমূহ খোলা হয়,
উহার কোন দরজাই বন্ধ করা হয় না।
এ মাসে এক আহ্বানকারী আহ্বান করতে থাকে
হে ভালোর অন্বেষণকারী!অগ্রসর হও,
হে মন্দির অন্বেষণকারী!থেমে যাও।আল্লাহ তায়ালা এ মাসে বহু ব্যক্তিকে দোযখ হাতে মুক্তি দেন আর এটা প্রত্যেক রাতেই হয়ে থাকে।
(তিরমিজি)।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণিত,তিনি বলেন
রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-যে কেউ ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের নিয়তে রমজানের রোজা রাখবে,
তার পূর্ববর্তী ছগিরা গুনাহসমূহ মাফ করা হবে।
এবং যে ঈমানের সাথে সাওয়াবের নিয়তে রমজান মাসে রাত ইবাদতে(নামাজ)-এ কাটাবে তার পূর্বের গুনাহ সমূহ মাফ করা হবে।আর যে ঈমানের সাথে সাওয়াবের নিয়তে কদরের রাত ইবাদতে কাটাবে তার পূর্বকৃত গুনাহসমূহ মাফ করা হবে।
(বোখারী-মুসলিম)।
হযরত সালমান ফারসী (রাঃ)-হতে বর্ণিত,তিনি বলেন
রাসূল (সাঃ)-একবার শা’বান মাসের শেষ তারিখে আমাদের মাঝে ভাষণ দিলেন এবং বললেনঃ-হে মানবজাতি!তোমাদের প্রতি ছায়া বিস্তার করছে একটি মহান মাস,মোবারক মাস,এমন মাস যাতে একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ।
আল্লাহ রমজানের রোজা তোমাদের জন্য করেছেন ফরজ এবং রমজানের রাতে নামাজ পড়া তোমাদের জন্য করেছেন নফল।যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল কাজ করবে সে ঐ ব্যক্তির সমান হলো যে অন্য মাসে মাসে একটি ফরজ আদায় করল।
আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল,
সে ঐ ব্যক্তির সম্মান হল যে অন্য মাসে ৭০ টি ফরজ আদায় করল।রমজান মাস ধৈর্য্যের মাস,আর ধৈর্য্যের সওয়াব হলো বেহেশত।রমজান সহানুভূতি প্রদর্শনের মাস।এটা সে মাস যাতে মুমিনের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
যে কেউ এ মাসে কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে তার জন্য তার গুনাহ সমূহ কাফফারা হবে এবং দোযখের আগুন হতে মুক্তির কারন হবে।তাছাড়া তার সওয়াব হবে সেই রোজদার ব্যক্তির সমান।
অথচ রোজদারের সওয়াব কম হবে না।
(বায়হাকী)।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণিত,তিনি বলেন
রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেনঃ-আমার উম্মতকে মাফ করা হয় রমজান মাসের শেষ রাতে।জিজ্ঞেস করা হলো ইয়া রাসূলুল্লাহ উহা কি শবে কদর?
রাসূল (সাঃ)-বললেনঃ-না,বরং প্রত্যেক কর্মচারীকে তার বেতন দেওয়া হয় যখন সে তার কাজ শেষ করে।
(আহমদ)
পবিত্র মাহে রমজানের বরকত এবং মহাগ্রন্থ আল কুরআনুল কারীমের বরকত,আল্লাহ আমাদেরকে সবাইকে দান করুন।বিতাড়িত শয়তানের প্ররোচনা হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
আল্লাহুম্মা আমিন।