সম্পাদকীয় …
ধর্ষণ রোধে কঠোর আইন চাই
কিছু কথা শুনতে ভালো শোনায় না, বলতেও ভালো লাগে না, মনের ব্যথা ও দু:খে বিস্মিত হতে হয়! কেননা এসব কথা শুনলে ঘৃণা জন্মে মনের অজান্তেই। মুখ লুকানোরও জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না কিছু কিছু মানুষের নোংরা কার্যক্রমে। থুথু দিতে ইচ্ছে করে সেসব মানুষের মুখে! ছি! ছি! ছি! চারিদিকে যেন ধ্বনিত হয় অনবরত। চারিদিকে আলোচনা সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় হতেই থাকে দীর্ঘদিন। এসব নিয়ে লিখতেও গা শিউরে উঠে!
তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। প্রিয় সময়ে ‘চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে নিজ কন্যাকে ধর্ষণ, বাবা গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রকাশিত ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণিত একটি ঘটনা। ভাবতেই অবাক লাগে, একজন বাবা কিভাবে, কোন রুচিতে নিজের কন্যাকে ধর্ষণ করতে পারে! কিন্তু এমনই ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীর সম্ভ্রমহানি ও নির্যাতনের খবর ভাইরাল হয়েছে। ওই নারীকে দু’বছর পূর্বে কতিপয় সন্ত্রাসী ধর্ষণ করে এরপর তাকে এক মাস পূর্বের নির্মম নির্যাতনের ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল করে দেয়। সারাদেশে এ নিয়ে মানুষের প্রতিবাদ বিক্ষোভ। অবশেষে পালের গোদা দেলোয়ারসহ ক’জনকে গ্রেপ্তার। এছাড়াও সিলেটের এমসি কলেজের বর্বরোচিতভাবে গৃহবধূ ধর্ষণ মানুষকে বেশ নাড়া দিয়েছে।
আমাদের কথা হলো, যদি এমনই হয়; তাহলে মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়? যেখানে মেয়েদের সর্বশেষ নিরাপত্তার আশ্রয়, ভরসার জায়গা, সেটাইতো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি একটি মেয়ের জন্যে হয়ে গেলো! আমাদের সমাজে যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে মেয়েরা কাকে বিশ^াস করবে? কার উপর নির্ভর করে তারা বেঁচে থাকবে? মেয়েদের জন্যে এমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে, তাদের নিজেদের রক্ষার জন্যে সবসময় একটি অস্ত্র রেখে দিতে হবে। অন্যথায় তারা কোনোভাবেই যেন নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না।
আমরা ভাবছি, বর্তমানে মেয়েটির মানসিক অবস্থাটা কী দাঁড়ালো! তার এখন বর্তমানে আশ্রয় কোথায় হবে! অথবা সেই সমাজের মানুষের চিন্তাটাই বা কী হচ্ছে? অথবা মেয়েটির সাথে জড়িত আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব তাদের মানসিক অবস্থাটা কেমন হচ্ছে। মেয়েটি তো এখন কারো কাছেই মুখ দেখাতে পারছে না। সমাজ তাকে হয়তো সেভাবে গ্রহণও করতে পারবে না। কেননা এ ধরনের মেয়েকে বিয়ে দিতে গেলেও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেহেতু তার জঘন্য ঘটনার কথা চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে, সেহেতু তার বন্দনাম কোনোভাবেই লুকানো সম্ভব নয়। অতএব, নিজের সম্মান একটি মেয়ে কীভাবে রক্ষা করতে পারবে (?), যেখানে তার নিজেরই বাবা তাকে এভাবে নষ্ট করলো!
আলোচনার বিষয় যে, যেদিন আমাদের দেশের পিতারা তাদের আদরের কন্যাকে জড়িয়ে ধরে আদর করছে, পবিত্র ভালোবাসা তাদের জন্যে বিলিয়ে দিচ্ছে, সেদিনই রুচিহীন, নির্লজ্জ এক বাবা তার নিজেরই কন্যাকে নির্যাতন করেছে! এ ধরনের মানুষ ‘বাবা’, ‘পিতা’ নামের কলঙ্ক! এই ঘটনা যারা যারা জেনেছে সকলেই স্তব্ধ হয়ে গেছে। তাদের মনের আনন্দ নিভে গেছে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের চিন্তাধারায়! নির্লজ্জ! নির্লজ্জ ধ্বনিতে চারিদিকে ঘৃণা জেগে উঠেছে।
তাই সারাদেশে বর্তমানে চলছে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘৃণায় ভাসছে সারাদেশ।
আমরা কতোটা অসহায় ও শক্তিহীন যে, মেয়েদের নিরাপত্তা নিজের ঘরেও আমরা দিতে পারি না।
আমরা আশা করবো, এ ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত সেই ধর্ষকদের কোনোভাবেই শাস্তি হাত থেকে রক্ষা করা উচিত হবে না। যে বা যারাই এ ঘৃণিত ও লজ্জাজনক জঘন্য আচরণ করেছে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়া উচিত!
আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না
০৭ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ২২ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৯ সফর ১৪৪২ হিজরি, বুধবার
