রাজবাড়ীতে দুধের সর নিয়ে ঝগড়া, গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ!

সেহরিতে দুধের সর খাওয়া নিয়ে শুরু হওয়া কথাকাটাকাটির জেরে সুরাইয়া তমিসরা নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে স্বামী শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের চর শ্যামনগর গ্রামে নির্মম এই ঘটনা ঘটে।

নিহত সুরাইয়া রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় ভবানীপুর গ্রামের দেওয়ান মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। তার তাইবা নামে ৪ বছর বয়সী একটি মেয়েসন্তান রয়েছে।

এ ঘটনায় বুধবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন গৃহবধূ তমিসরার বড়ভাই দেওয়ান মো. সৌরভ। মামলার আসামিরা হলেন- সুরাইয়ার স্বামী মশিউর রহমান মিটুল, দেবর নাইম মণ্ডল, জা সাদিয়া বেগম, ভাশুর হাতেম মণ্ডল ও শাশুড়ি সাহেরা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন।

দেওয়ান মো. সৌরভ গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৪ সালে চর শ্যামনগর গ্রামের সাহা মণ্ডলের ছেলে মশিউর রহমান মিটুলের সঙ্গে আমার বোন সুরাইয়া সুলতানা তমিসরার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মিটুল ও তার মা এবং ভাই-ভাবিরা যে কোনো সামান্য বিষয় নিয়ে আমার বোনের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাত। বিষয়গুলো আমার বোন বাড়িতে এসে আমাদের কাছে বলত।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে আমার বোনের স্বামী মিটুল আমার বাবার কাছে ফোন করে জানায় আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছে। আমরা দ্রুত মিটুলদের বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার বোনের লাশ বারান্দায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। গলায় ফাঁস নেওয়ার কোনো চিহ্ন নেই। আমার বোনের থুতনিতে, নাকে, ঘাড়ে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

সৌরভ আরও বলেন, এরপর আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পারি যে, সোমবার দিবাগত রাতে সেহরিতে দুধের সর খাওয়া নিয়ে আমার বোনের সঙ্গে তার শাশুড়ি সাহেরা বেগমের কথাকাটাকাটি হয়। কথাকাটাকাটির বিষয়টি সাহেরা বেগম তার ছেলে মিটুল, নাইম, হাতেম ও ছেলের বউ সাদিয়াসহ পরিবারের অন্য লোকদের জানায়। একপর্যায়ে তারা সবাই মিলে আমার বোনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। মঙ্গলবার ভোররাতে হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন দিকে নেওয়ার জন্য তারা আমার বোন গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে নাটক সাজায়।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরপর আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় যে সুরাইয়াকে হত্যা করা হয়েছে। নাইমসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।