নিঃসঙ্গতার অভিশাপ : ক্ষুদীরাম দাস

অবজ্ঞার তীব্রতায় দিনগুলো ঝলসে যায়,
সম্পর্কের রক্তনালীতে জমে যায় নির্লিপ্ততা।
ভালোবাসা যেন মরুপ্রান্তের মরীচিকা,
কাছে গেলেই মিলিয়ে যায় দিগন্তের ধোঁয়ায়।

জানি, সে অবহেলা করেÑ
তবু আমি তার অনুপস্থিত স্পন্দনে আশ্রয় খুঁজি।
আত্মমর্যাদা ভিক্ষার থালায় ঢেলে দিই,
শুধু টিকে থাকার অদম্য প্রয়োজনে।

তার দৃষ্টিতে আমি অচেনা ধূলিকণা,
অথচ আমার দৃষ্টিতে সে অস্তিত্বের দেবালয়।
ব্যথার পরিধি যতই প্রসারিত হোক,
ততই আমি আঁকড়ে ধরি তার ছায়ামূর্তি।

বোঝি, সে বোঝে নাÑ
আবার বোঝে, তবু না বোঝার অভিনয় করে।
সেই অভিনয়ে আমি পরাজিত নই,
বরং একাকীত্বের কারাগারে বন্দি।

আমার পিঠে নেই কোনো আত্মীয়তার হাত,
নেই উৎসবের নিমন্ত্রণ, নেই খোঁজ নেওয়া।
তাই অবহেলাও হয়ে ওঠে সঙ্গী,
নির্দয়তাও যেন অভ্যস্ত আলিঙ্গন।

প্রতিদিন সম্পর্কের মৃতদেহ বহন করি,
মমতার শোকযাত্রা একাই সম্পন্ন করি।
কারও আহŸান নেই, নেই কোনো সান্ত¡না,
কেবল নীরবতার কণ্ঠে গোপন আর্তনাদ।

স্ত্রীর আত্মীয়রা দূরের নক্ষত্রসম,
তাদের আলো আসে না আমার গৃহে।
তাই ছায়ার সঙ্গে সংলাপ গড়ে তুলি,
নিজেরই প্রতিধ্বনিকে সঙ্গী বানাই।

ভালোবাসা নয়, এটি এক প্রকার বেঁচে থাকা,
আত্মসমর্পণের দীর্ঘ অনুশাসন।
তবু মনের গভীরে ক্ষীণ এক আশ্বাসÑ
হয়তো কোনোদিন সে ফিরে তাকাবে।

কিন্তু প্রতিদিন সূর্য ওঠে একই নিষ্ঠুরতায়,
সম্পর্কের কফিনে জমে যায় অবহেলার ধুলো।
আমি তবু পরিস্কার করি, পরের দিনের আশায়,
যেন পুনর্জন্ম ঘটে নিস্তব্ধ ভালোবাসার।

এ জীবন কোনো গীত নয়, কোনো গল্প নয়,
এটি নীরবতার অক্ষরে লেখা ইতিহাস।
যেখানে অবহেলাই একমাত্র উত্তরাধিকার,
আর একাকীত্বÑআমার চিরস্থায়ী নাম।

প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

 

ডায়াবেট্সি হলে কি করবেন?

শেয়ার করুন
প্রিয় সময় ও চাঁদপুর রিপোর্ট মিডিয়া লিমিটেড

You might like

About the Author: priyoshomoy