সুনামগঞ্জে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম, অনশনে চার কৃষক

জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ :

সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে অনশন করছেন চার কৃষক। মঙ্গলবার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনশনে বসেন তারা।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা নাইন্দার হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়মের প্রতিবাদে উপজেলার সাজেরগাঁও এলাকার আব্দুর নূর (৭০), আব্দুল জলিল (৬০), হাজি আব্দুল জলিল (৫৫) ও আব্দুল রউফ (৫০) অনশনে বসেন।

http://picasion.com/
জানা যায়, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নাইন্দার হাওরের পিআইসি ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২ প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে না করা এবং নতুন বাঁধ তৈরি না করে পুরোনো বাঁধের ওপর মাটি ফেলে দায়সারাভাবে কাজ করা এবং ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে সোনালি ফসল তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে অনশনে বসেন চার কৃষক। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনকে অনিয়মের বিষয়ে অনেকবার জানানো হলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো রকমের পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

অনশনে বসা কৃষক আব্দুল রউফ বলেন, নাইন্দার হাওরে আমাদের ফসল আছে। কিন্তু এবার আমাদের ভয়, বাঁধের কাজ সঠিকভাবে না করায় ফসল সব পানির নিচে চলে যাবে। আমরা চাই বাঁধের কাজ সঠিকভাবে করা হোক। যদি ফসল যায় তাহলে ছেলে-বউ নিয়ে পথে বসা লাগব।

 

অপর কৃষক হাজি আব্দুল জলিল বলেন, জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাঁধের কাজে অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নাইন্দার হাওরে নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষও হয়নি। যে কাজ হচ্ছে, সম্পূর্ণ হরিলুট হচ্ছে। পুরোনো বাঁধের ওপর মাটি ফেলা হচ্ছে, রাস্তা করা হচ্ছে যা পানি আসলেই ভেঙে যাবে।

এদিকে দোয়ারাবাজার কৃষকদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, বাঁধে বাঁধে দুর্নীতি হচ্ছে। সরকারের টাকা পিআইসি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক লুটে নিয়ে যাচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ হয়নি প্রশাসনের কারণে। যদি এবার ফসলহানি হয় তাহলে দায় কিন্তু উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদেরই নিতে হবে। আমরা কৃষকদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করলাম।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা তাদের দেয়া অভিযোগপত্রটি দেখে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।