পঞ্চগড়ে অপমানে ক্ষোভে কিশোরের আত্মহত্যা

এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড়ে গ্রাম্য শালিসের নামে মারধরের কারনে অপমান ও খোবে মো: খয়রুল ইসলাম (১৭) নামের এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে।

সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের সোনারবান এলাকার বাশবাড়ি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। খয়রুল ঐ গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সে নিজ ঘরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। শুক্রবার সকালে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন সদর থানা পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক শিশুকে প্রেম নিবেদন করেছিল খয়রুল। এই অপরাধে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বিরুদ্ধে স্থানীয় জামে মসজিদের সামনে গ্রাম্য শালিস ডাকে ওই গ্রামের কিতাব আলী, মো: জাকের আলী, ওসমান আলী, কদম আলী, হাসেন আলী ও দেলওয়ার হোসেন নামের গ্রামের প্রভাবশালীরা।

শরীয়তের বধান বলে তারা শালিসে খয়রুলকে মারধরের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রভাবশালীদের চাপে খয়রুলের বাবা বাধ্য হয়ে ছেলেকে জুতাপেটা এবং বাঁশের কঞ্চি নিক্ষেপ করে।

বিচার শেষে অপমান সহ্য করে বাড়ি ফিরছিল খয়রুল। কিন্তু তখনো থামেনি এই মাতব্বরদের জেদ। প্রভাবশালী দেলোয়ার খয়রুলের গতিরোধ করে পাঁজরে লাথি মারে।

আর বলতে থাকে এই লজ্জার চেয়ে তোর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করাই ভালো। এ কথা শুনে চুপচাপ বাড়ি ফেরে খয়রুল। শালিসের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বাবা আব্দুর রশিদের ফিরতে একটু দেরি হয়। আর এসেই দেখেন ছেলের ঝুলন্ত মরদেহ।

পরিবারের দাবি, খয়রুল পাঁচ বছর বয়সী ওই শিশুকে প্রেম নিবেদন নয় বরং বাড়ির পাশের খালে নেমেছিলো শিশুটি তাকে উঠতে সহযোগীতা করেছে।

তার বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, আমার ছেলে অন্যায় করেনি তারপরও এবারের মত সবার কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়েছিলাম তারা ক্ষমা করেনি।

অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নুরুজ্জামান নুরু বলেন, ‘শালিসি বৈঠকের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।’

পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু আক্কাস আহমদ আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।