আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ভাগ্য বদল করছে আনিছ !

 

আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ভাগ্য বদল করছে মো. আনিছ। ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে হাজীগঞ্জ উপজেলার রামপুর বাজারে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মিছিলে হামলার প্রধান আসামী এবং হোটেলের সিঙ্গারা ভাজার গরম তৈল আওয়ামী লীগের মিছিলে নিক্ষেপ করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আহতকারী সেই আনিছুর রহমান প্রকাশ আনিছ এখন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পূর্বে আনিছ স্থানীয় রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচনে সন্ত্রাসি বাহিনী ব্যবহার করে তার সমর্থিত সদস্যদের বিজয়ী করে ভাগিয়ে নেন রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ।

কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানান, আনিছুর রহমান এক সময় ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ছিল। তার এক আত্মীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সে লেবাস পাল্টিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে যায়।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর পারিবারিক মামলায় তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করে রামপুর বাজারে তার পক্ষে মানববন্ধন করায়।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর পরই শুরু হয় তার রামরাজত্ব। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হয়রানি কথা কথায় এলাকায় হাঙ্গামা শুরু করে এই আনিছ। পাশাপাশি রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার পর ঘটে স্কুলের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা। বিদ্যালয়ের মূল্যবান ৩/৪ লাখা টাকার গাছ পানির দরে বিক্রয় করে দেয় তার লোকের কাছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গাছ বিক্রয়ের ৪ মাস পর গোপনে উপজেলা বন কর্মকর্তা দিয়ে টেন্ডার আহবান করে।

তবে বন কর্মকর্তা মুঠো ফোনে বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে গাছ দেখাতে পারেনি। তারা আমাকে গাছের সাইজ বলেছে, সেই সাইজ অনুযায়ী আমি মূল্য নির্ধারন করেছি।

তিনি বলেন, আমি চেয়েছিলাম গাছের টাকা আত্মসাত করার চেয়েও স্কুল কিছু টাকা যেনো পায়।

তিনি বলেন, নিয়ম হলো গাছ কাটার পূর্বেই টেন্ডার আহবান করতে হবে।

রামপুর স্কুলের এক অভিভাবক জানান, রামপুর স্কুলের ৪০/৫০ বছরের ২০/৩০টি গাছ কি মাত্র ৭০ হাজার টাকায় বিক্রয় হলো। নিশ্চয় এখানে কোন কারণ আছে। কয়েক লক্ষ টাকার গাছ তারা বিক্রয় করে এ টাকা আত্মসাত করেছে।

অপর দিকে রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি টিনসেট ভবন যার আনু: মূল্য হবে প্রায় ৩ লাখ টাকা সেই টিনসেট ভবনটি নামে মাত্র মূল্যে ৯০ হাজার টাক বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে টিনসেট ভবনের ক্রয়দাতার সাথে সভাপতি ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবৈধ চুক্তির মাধ্যমে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার্থীদের জনপ্রতি ৫০০ টাকা, ৯ম শ্রেণির রেজি: ৯’শ টাকা ও ৩১৫জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর ৩ হাজার টাকা করে নেয়া টাকা স্কুল ফান্ডে জমা না রেখে আনিছুর রহমান ব্যক্তিগত ফান্ডে জমা রাখে।
এসব বিষয়ে অভিযোগ এনে এর প্রতিকার চেয়ে এবং আনিছুর রহমানের শাস্তি দাবী করেছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডসহ কয়েক জায়গায় অভিযোগ দায়ের করেছে স্কুলের অভিভাবকরা।

এসব বিষয়ে জানতে আনছুর রহমানের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করলেও সে ফোন রিসিভ করেনি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিলেও টাকা পয়সা আত্মসাতের কথা অস্বিকার করেন।

তিনি বলেন, যা করা হয়েছে আইন মেনেই করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।

উল্লেখ্য, হাজীগঞ্জের মধ্যে বলাখাল জে এন স্কুল এন্ড কলেজের পরেই আয়ের উৎসের দিক থেকে রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান। স্কুলটিতে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার আয় হয়। ফলে বিদ্যালয়ের সভাপতির পদটি একটি লোভনীয় পদ বলে জানান এলাকাবাসি।

সূত্র : নতুনের কথা অনলাইন