রোগী নিয়ে এতো ভোগান্তি কেনো?

প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট ২০২০ খ্রিস্টাব্দ, ০৩ ভাদ্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৭ জ্বিলহজ্ব ১৪৪১ হিজরি, মঙ্গলবার

সম্পাদকীয়

এমন একটা সময় আসে যখন এসব প্রশ্ন মানুষের মনে ভিড় করে। যদিও এমন প্রশ্ন উঠা হাসপাতালে থাকা রোগী ও নার্সদের জন্যে অত্যন্ত দুঃখজনক; লজ্জাজনক তো বটেই। কারণ, তারা মানবিক দায়িত্ব পালন করেন। মানুষের জীবন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু যখন মানুষের জীবন নিয়ে খেলার মতো খেলা শুরু করেন তখন রোগীদের কষ্টের সীমা থাকে না। আর তখনই এমন প্রশ্নের জন্ম হয় যে, ‘রোগী নয়ে এতো ভোগান্তি কেনো?’

গত ১৭ আগস্ট প্রিয় সময়ে প্রকাশিত ‘ডাক্তারের দেখা পাওয়া কঠিন শিশু হাসপাতালে’ শিরোনামে এমনই একটি দুঃখজনক বিবৃতি আমরা পাঠক সমাজ দেখতে পেলাম। এসব হওয়া মোটেও ভালো বিষয় নয়। কারণ, জীবনে অসুস্থ হয়নি এমন মানুষ নাই। তখন তার ও তার আত্মীয়স্বজনদের কতোটা দৌঁড়াতে হয় না সেটা শুধু তারাই জানে। আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে একজন শিশুর বাবার করুণ পরিস্থিতির কথা জানতে পারলাম। শিশু সায়মার জ¦র ও পেটব্যথা। কিন্তু তাকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটতে হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার কথাটিও অত্যন্ত দুঃখজনক।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আরো জানতে পারলাম যে, ‘যাদের লোকজন আছে তারা একটু চিকিৎসা পেলেও যাদের কেউ নেই তাদের চিকিৎসাও নেই।’ কিন্তু এমন স্বজনপ্রীতি হওয়া মোটেও বাঞ্চনীয় নয়। যদি সে রকম হয় তাহলে যারা অপরিচিত তাদের ভোগান্তি নিত্যদিন লেগেই থাকবে; আর তারা যাবে কোথায়? একদিকে করোনার কারণে ডাক্তারের দেখা পাওয়া কঠিন। অন্যদিকে নার্সরাও ভালো আচরণ করে না। আবার অনেক শিশুকে ভর্তি করেই রেখে দেয়া হয়েছে; কিন্তুতেমন চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি হলো, ‘মরার উপর খড়ার ঘা’ এর মতো পরিস্থিতি! রোগী ও রোগীর অভিভাবকরা এ অবস্থায় অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কী বা করতে পারে? এই করোনাকালে যদি ডাক্তার অনেক দূরে থেকে শিশুদের দেখে চিকিৎসা দেন, আর দূর থেকে টর্চ লাইট মেরে শিশুর মুখের ভিতর দেখেন, এতে করে ডাক্তার কিছুই বুঝবেন বলে মনে হয় না। এমন পরিস্থিতি দেখে অনেক অভিভাবক তাদের শিশুদের নিয়ে চলে যান। বর্তমান পরিস্থিতি চরম ভোগান্তির একটা পর্যায় চলছে। কারণ, করোনায় ডাক্তার দেখানো যেমন সমস্যা; তেমনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগী ও রোগীর অভিভাবকদের।

আমাদের কথা হলো, রোগী নিয়ে মজা করা অমানবিক! যদি কোনো রোগী ও রোগীর পরিবারকে এভাবে দিনের পর দিন ভোগান্তি পোহাতে হয় এবং হাসপাতালে গিয়ে ভালো ব্যবহার না পায় তাহলে তাকে কেনো অমানবিক বলা যাবে না? সুতরাং মানবিক দিন বিবেচনা করে রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার করা হোক-আমরা এমনই প্রত্যাশা করি। আমরা আরো প্রত্যাশা করছি যে, রোগীরা যাতে প্রশান্তির সাথে চিকিৎসাসেবা পেতে পারে সেদিক যতœশীল হওয়া উচিত।