ইসলামে ক্রোধ-অহংকার ও লৌকিকতা পরিহারযোগ্য

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার। আর এজন্যই আমরা তার প্রশংসা করি। তার নিকট সাহায্য, ক্ষমা,প্রার্থনা এবং সর্বদা তারই উপর ভরসা রাখি। আমরা মহান প্রভুর নিকট আশ্রয় কামনা করছি। আমাদের নফসের অন্যায় আচরণ এবং খারাপ আমলের অনিষ্ট হতে। বস্তুতঃ-মহান আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারেনা।

আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন পৃথবীতে এমন কেউ নেই যে তাকে হেদায়েত করবে। সুতরাং আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত কোন উপস্য নেই, তিনি একক এবং তার কোন শরিক নেই। আমরা আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-আল্লাহর বান্দা এবং প্রিয় রাসূল। মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে সুসংবাদদাতা ভীতি প্রদর্শক, আল্লাহ তায়ালার প্রতি আহবানকারী ও আলো দানকারী প্রদীপ রূপে সত্য ইসলামসহ প্রেরণ করেছেন।

মহান আল্লাহর বান্দাগন! বরকতময় আল্লাহ আপনাদের প্রতি রহমত দান করুক। আপনারা আল্লাহ ওয়ালা লোকদের চরিত্রে চরিত্রবান হোন,শয়তানের চরিত্রে না। কারন,শয়তান আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত ও অভিশপ্ত।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ- হে ইবলিশ!তুমি জান্নাত থেকে বের হয়ে যাও,তুমি অভিশপ্ত। সুতরাং আপনাদের আমল সমূহ একনিষ্টভাবে আল্লাহর জন্যই করে নিন,এবং নিন্দিত অভ্যাস সমূহ যেমনঃ-রাগ,লৌকিকতা ও অহংকার ইত্যাদি হতে স্বীয় আত্মাকে পবিত্র করুন। এ সমস্ত সবকিছু অভিশপ্ত শয়তানের অভ্যাস। সুতরাং এসব থেকে নিজেদের কে পবিত্র রাখা আবশ্যক।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ- সফল সে ব্যক্তি,যিনি স্বীয় আত্মাকে পবিত্র করিছে এবং ব্যর্থ ঐ ব্যক্তি যে নিজ আত্মাকে কলুষিত করেছে। হে মুমিনগণ আপনারা জেনে রাখুন নিশ্চয় ক্রোধ,অহংকার ও লৌকিকতা এগুলো বিধ্বংসী চরিত্র। এ সংক্রান্ত অনেক হাদীস রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণীত তিনি বলেন,রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেছেনঃ- বল প্রয়োগে কাউকে পরাভূত করলেই বীর হওয়া যায়না,প্রকৃত বীর হলো সে,যে কীনা স্বীয় রাগ কে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।
(বুখারী-মুসলিম)।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)-হতে বর্ণীত তিনি বলেন,রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেছেনঃ- যার অন্তরে বিন্দুপরিমাণ অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবেনা। একথা শুনে এক সাহাবী রাসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর রাসূল!
এক ব্যক্তি সর্বদা পছন্দ করে যে তার জামা-কাপড় ও জুতা সুন্দর থাকুক,একথা শুনে রাসূল (সাঃ)বলেন নিশ্চয় আল্লাহ নিজে সুন্দর ও তিনি সুন্দর কে পছন্দ করেন।অহংকার হলো সত্যকে উপেক্ষা করা ও মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা।
(মুসলিম)।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-হতে বর্ণীত তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ)-ইরশাদ করেছেনঃ-শেষ যামানায় মানুষ দ্বীনের বিনিময়ে দুনিয়া কে খুজবে! মানুষের দৃষ্টিতে বিনয়ীভাব প্রকাশের জন্য মেষ-দুম্বার চামড়ার ন্যায় ভ্যাস ভূষা সাজ-সজ্জা ত্যাগ করবে।
তাদের মূখের ভাষা হবে চিনির মতোই মিষ্টি। অথচ তাদের অন্তর হবে বাঘের মতো হিংস্র! আল্লাহ তায়ালা এদের সম্পর্কে বলেনঃ-
তারা কি আমায় ধোকা দিতে চায় নাকী আমার উপর ধৃষ্টতা পোষণ করছে??? আমি আমার ক্বসম করে বলছি,আমি তাদের উপর তাদের মধ্য হতে এমন বিপদ দিব,যা দেখে তাদের মধ্যকার বিচক্ষণ ও বুদ্ধীমান লোকেরাও দিশেহারা হয়ে যাবে!
(তিরমীযী)

পরিশেষে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে কুরআনের বরকত দান করুন। বিতাড়িত শয়তানের অনিষ্ট হতে আল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা করছি।

লেখক পরিচিতি :  মোঃ-রফিকুল ইসলাম।
কসবা,ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
শিক্ষার্থীঃ-ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়।

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না

০৯ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ২৪ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২১ সফর ১৪৪২ হিজরি, শুক্রবার