মানুষ মানুষের জন্যে!

সম্পাদকীয় …

শীতের তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। শীতের সাথে লড়তে হবে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আর তাই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে মানবতা জেগে উঠেছে বেশ কিছু সংস্থার। শীতের হাত থেকে দরিদ্র মানুষগুলোকে বাঁচাতে উষ্ণতা বিলিয়ে দিতে মানুষ মানুষের পাশে রয়েছে। জেঁকে বসেছে শীত, আর তাই শীতার্তদের উষ্ণতায় প্রয়োজন গরম কামড়। কনকনে হিমেল হাওয়া ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং মানুষের অসহায়ত্বকে প্রকট করে তোলে।

তাই শীতার্ত হতদরিদ্র মানুষের প্রতি সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তশালী ব্যক্তিদের সাহায্য ও সহানুভূতির হাত সম্প্রসারিত করে তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র বিতরণ করে তাদের পাশে এসে দাঁডানো দরকার। নিঃস্বার্থভাবে শীতার্ত মানুষের সাহায্য ও সেবা করাই মানবতার সেবা। সামর্থবান ব্যক্তিরা উষ্ণতা বিলাতে দাঁড়িয়েছে, অবশ্যই এটাকে দান হিসেবে নেয়ার চেয়ে মানুষের জন্যে মানুষের মানবিক সহায়তা বলতেই হবে। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বিলিয়ে দেয়াই হলো মানবতা! অসহায় মানুষকে দুর্দিনে সাহায্য, সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মানসিকতায় এগিয়ে আসা প্রতিটি সামর্থবান মানুষেরই উচিত।

সকলের ক্ষমতা বা সামর্থ এক রকম হয় না। কেউ অর্থিকভাবে স্বচ্ছল; আবার কেউ দারিদ্রতার মাঝে লড়াই করে বেঁচে আছে। আর যারা দারিদ্রতার সাথে লড়াই করছে জীবনভর তাদের অভাব নিত্যসঙ্গী। শীত অথবা গরমের কষ্ট সহনীয় হয়ে যায়, হতেই হয় পরিস্থিতির কারণে। কিন্তু যদি তা’ সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন অন্যের মুখাপেক্ষী হতে হয়।

ইদানিং শীতের প্রকোপ বেশি দেখা দিচ্ছে। তাই দরিদ্রদের এই শীতের সাথে লড়াই করা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। তাদের শরীর কাঁপন বেড়ে যাচ্ছে, চারিদিকে দরিদ্র মানুষগুলো শীতে কষ্ট পাচ্ছে। তাদের এই দারিদ্রতা দেখে কারো কারো মনও কেঁদে উঠে। মানুষ মনুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে-আর তাই সহানুভূতির ভালোবাসায় এগিয়ে এসেছে সেসব দরিদ্রদের সাহায্যের জন্যে।

প্রিয় সময়ে ‘শিবচরে সেবা কল্যাণ সোসাইটির শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ২০২১ শুরু’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, সেবা কল্যাণ সোসাইটির উদ্যোগে “শীত বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি -২০২১” এর আওতায় প্রায় ১০০০ (এক হাজার) অসহায় মানুষের ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছে। এবার সংস্থাটি বন্যা ও নদী ভাঙ্গন কবলিত অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ও দুঃস্থ মানুষকে কম্বল বিতরণ করেছে।

আমরা মনে করি, সমাজের অথবান বা স্বচ্ছল মানুষের জন্যে শীতকাল আনন্দ অথবা খুশির বার্তা হলেও দেশের দরিদ্র মানুষের জন্যে বেদনার হয়। হাঁড় কাঁপানো শীতের কষ্ট সইতে না পেরে কেউ কেউ মারাও যায়। তাছাড়া শীতজনিত রোগ ছায়ার মতো দরিদ্রদের পিছু ছুটে বেড়ায়। আর এসব রোগ থেকে রক্ষা পেতেও চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। সুতরাং জাতি-ধর্ম-বর্ণ, দলমত-নির্বিশেষে সমাজের ধনাঢ্য ও বিত্তবান ব্যক্তিদের শীতার্ত মানুষের পাশে অবশ্যই দাঁড়ানো প্রশংসার।

আমরা জানি যে, প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে শীতের তীব্রতায় দুস্থ, নিঃস্ব, ছিন্নমূল, গরীব, দুঃখী, বস্ত্রাভাবী শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছে। ইদানিং সংবাদ মাধ্যমে আমরা জেনেছি, অনেক প্রতিষ্ঠান শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষের জন্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করছেন। অর্থবান প্রতিটি মানুষেরই পারস্পরিক মানবতাবোধ ও উদার মানসিকতায় এগিয়ে আসা উচিত।