চাঁদপুর শহরে আবারো কিশোর গ্যাংয়ের অপ্রীতিকর ঘটনা!

সম্পাদকীয়

বেশ কিছুদিন আগেও চাঁদপুর শহরে কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এসব কিশোরদের বয়স ১৭ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ এসব ছেলেরা উঠতি বয়সী। এ বয়সে তাদের মনমেজাজ উত্তেজনায় ভরা থাকে। হঠাৎ কোনো ঘটনা ঘটলেই মারাত্মক ঘটনা ঘটে যায় তাদের দ্বারা। এতে শহরে এ বয়সী ছেলেদের নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

চাঁদপুর রিপোর্টে ‘চাঁদপুরে শহরে আবারো কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত ৫’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে মারধরের ঘটনায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। তাদের এতটাই আহত করা হয়েছে যে, তাদেরকে চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে নিতে হয়েছে।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ওরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। যারা একসাথে চলাফেরা করে, বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দেয়। আর হঠাৎই তাদের মধ্যে তুচ্ছ কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায়। তাদের উৎপাতে চাঁদপুর শহরের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

চাঁদপুর শহরটি সংস্কৃতি ও সাহিত্যের শহর। সংস্কৃতি আর সাহিত্য চর্চা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। সুতরাং এখানে এমন ঘটনা আশা করা যায় না। আর যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তারা শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। সংবাদে প্রকাশ যে, ‘১ মার্চ সোমবার বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫ টার মধ্যে চাঁদপুর শহরের আল-আমিন স্কুলের পেছনে এমন হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় চাঁদপুর শহরের মমিনপাড়ার বাসিন্দা আহত আব্দুর রহমানের মা জাহানারা বেগম (৪০) বাদী হয়ে মুরছালিন, রাব্বি, মাসুদ, সৈকত, আশিকুর রহমান, আশিক, পারভেজ, কৌশিক, জাহিদসহ অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে বিবাদী করে চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ করেছে।’

আমরা সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, হামলার সময় ওরা দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করেছিলো। অর্থাৎ এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। কেননা সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘গত দু’ বছর আগে বিবাদী মুরছালিনের সাথে আহত আব্দুর রহমানের সাথে সিনিয়র-জুনিয়র সংক্রান্ত একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই সময় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে ঘটনাটি সমাধান করে দেয়া হলেও পরবর্তীতে বিবাদীগণ প্রায় সময়ই আব্দুর রহমানকে গালমন্দ করতো। ঘটনার দিন আব্দুর রহমানসহ তার বন্ধুরা প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে বিবাদী আব্দুর রহমান ও তার বন্ধুদের আল-আমিন স্কুলের পেছনে নিয়ে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। পরে তাদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আহতদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে এনে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি করে।’

আমরা মনে করি, জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। সেই সাথে এসব বয়সী ছেলেদের নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা উচিত। যে শিক্ষা তাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে পারবে। আর এসব ছেলেদের মা বাবাকেও ছেলেদের বিষয়ে সাবধান করা দরকার। যেন তারা তাদের ছেলেদের পারিবারিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ঘটনা থেকে এটা পরিস্কার যে, যেভাবে এসব ছেলেরা ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে তারা বখাটে হয়ে যাওয়া ছেলে। এখনো সময় আছে তাদেরকে শাসনের মাধ্যমে সঠিক পথে নিয়ে আসা। কেননা এ বয়সী ছেলেরা দেশের সম্পদ। তাদের দিয়ে ভালো কাজ করানো যেতে পারে। সেসব ছেলে ও তাদের পরিবারকে সুশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করতে পারলে তারা সঠিক পথে ফিরে আসতে পারবে।