হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বি’দা, প্রায় অর্ধলক্ষ মুসল্লির সমাগম

মো.মজিবুর রহমান রনি ও জহিরুল ইসলাম জয় :

পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার মুসলমানদের বৃহত্তম জুমাআতুল বে’দা নামাজ উদযাপনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের খ্যাতি বহু পুরনো।
ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারও হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে একসাথে লক্ষাধিক মুসল্লী জুম’আতুল বে’দা’র নামাজ আদায় করেছে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রখর রোদ ও প্রচণ্ড তাপমাত্রা উপেক্ষা করে শুক্রবার জুম’আতুল বে’দা উপলক্ষে আশে পাশের জেলা, উপজেলা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লকডাউন উপেক্ষা করে অধ্যলক্ষ মানুষ এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসে। সকাল ১১টার মধ্যেই বিশাল মসজিদের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে মসজিদ কর্তৃপক্ষ মসজিদের মাঠ, আহমাদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ও ভবন, জামেয়া আহমাদীয়া কওমী মাদ্রাসা ভবন, হাজীগঞ্জ টাওয়ার, রজনীগন্ধ্যা মার্কেট, হাজীগঞ্জ প্লাজা, বিজনেস পার্ক, প্রাইম ব্যাংক ভবন, সাবেক পৌরসভার উপরে বিশাল জামায়াতের আয়োজন করা হয়। এ সব ভবন সাড়ে ১২টার মধ্যেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। জুময়ার নামাজের আযানের পর বয়ান পেশ করেন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি আবদুর রউফ।

দুপুর ১টায় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহা সড়ক স্টেশন রোডের সম্মুখ থেকে শুরু করে পূর্ব বাজারস্থ বড় ব্রীজ পর্যন্ত মুসল্লীদের নামাজের কাতার ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলা-চল বন্ধ হয়ে যায়। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে মুসুল্লীগন, মাঠ ও মহাসড়কে নামাজ আদায় করে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং বৈশ্বিক মহামারী থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করেন মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব আলহাজ¦ মুফতি আব্দুর রউফ। মোনাজাতের সময় আমিন আমিন ধ্বনীতে আকাশ-বাতাস মূখরিত হয়ে উঠে। এ সময় আল্লাহর দরবারে পানা’হ চেয়ে জুম’আতুল বে’দা’র মোনাজাতে মুসুল্লীদের কান্নায় আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে উঠে।

জেলাবাসীর গৌরব হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের বৃহৎ এ জামায়াতে হাজীগঞ্জ থানা প্রশাসন, পৌর পরিষদ, হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসী সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসে। বিশেষত, হাজীগঞ্জ বাজার হকার ও যানজট মুক্ত রাখা, বাজার পরিষ্কার রাখা, দূর-দূরান্তের মুসল্লীদের জন্য অস্থায়ীভাবে অযুর ব্যবস্থা করে দেয়া ইত্যাদি ছিল উল্লেখযোগ্য।

জুম’আতুল বিদা’র জামায়াতের প্রস্তুতি ও জুম’আতুল বিদা’র জামায়াত প্রসঙ্গে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মোতাওয়াল্লী (ভারপ্রাপ্ত) প্রিন্স শাকিল আহমেদ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ- প্রখর রোদ উপেক্ষা করে বিশাল জামায়াতে নামাজ আদায় করেছি। অন্যান্য বছরের চেয়েও এবার বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে জুম’আতুল বে’দা’র নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত মুসল্লীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি।

তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে নামাজ আদায়ে আমাদেরকে হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ বাহিনী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় সংস্থাসমূহ পর্যাপ্ত সহযোগীতা প্রদান করেছে। আমি তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং ভবিষ্যতেও তাদের এমন সহযোগীতা প্রত্যাশা করছি।