পঞ্চগড়ের বোদায় নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতদেহ উদ্ধার ৬৭, নিখোঁজ ২০

এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় তৃতীয় দিনে আরও ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ের বিভিন্ন নদী থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে জেলা প্রশাসনের জরুরি তথ্য কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৬৭ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১০ জন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বলেন, এখন পযর্ন্ত ৬৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আজ সকাল থেকে ১৭ জনের লাশ পাওয়া গেছে। উদ্ধার করা তিন লাশের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। শনাক্তের কাজ চলছে। নিখোঁজ বাকিদের উদ্ধারে কাজ চলছে।

এর আগে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আড়াইটার ঘাটে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে মহালয়া দেখতে আউলিয়া ঘাট থেকে নৌকায় বদশ্বেরী ঘাটে যাচ্ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীর প্রায় শতাধিক মানুষ। নৌকাটি ছাড়ার শুরুতেই দুলতে থাকে। এক পর্যায়ে দুলতে দুলতে নদীতে গিয়ে ডুবে যায়।

মৃতরা হলেন- হাশেম আলী (৭০), শ্যামলী রানী (১৪), লক্ষ্মী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৩), প্রিয়ন্ত (২.৫), রুপালি ওরফে খুকি রানী (৩৫), প্রমিলা রানী (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানী (৬০), ফাল্গুনী (৪৫), প্রমিলা দেবী, জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), তারা রানী (২৫), সানেকা রানী (৬০), সফলতা রানী (৪০), বিলাশ চন্দ্র (৪৫), শ্যামলী রানী ওরফে শিমুলি (৩৫), উষশী (৮), তনুশ্রী (৫), শ্রেয়সী, প্রিয়ন্তী (৮), সনেকা রানী (৬০), ব্রজেন্দ্র নাথ (৫৫), ঝর্ণা রানী (৪৫), দীপ বাবু (১০), সূচিত্রা (২২), কবিতা রানী (৫০), বেজ্যে বালা (৫০), দিপশিখা রানী (১০), সুব্রত (২), জগদীশ (৩৫), যতি মিম্রয় (১৫), গেন্দা রানী, কনিকা রানী, সুমিত্রা রানী, আদুরী (৫০), পুষ্পা রানী, প্রতিমা রানী (৫০), সূর্যনাথ বর্মন (১২), হরিকেশর বর্মন (৪৫), নিখিল চন্দ্র (৬০), সুশীল চন্দ্র (৬৫), যুথি রানী (০১), রাজমোহন অধিকারী (৬৫), রুপালী রানী (৩৮), প্রদীপ রায় (৩০), পারুল রানী (৩২), প্রতিমা রানী (৩৯), শৈলবালা, সনেকা (৫৫), হরিকিশোর (৪৫), শিল্টু বর্মন (৩২), মহেন চন্দ্র (৩০), ভূমিকা রায় পূজা (১৫), আঁখি রানী (১৫), সুমি রানী (৩৮), পলাশ চন্দ্র বর্মন (১৭), ধৃতি রানী দাস (১০) ও সজিব রায় (১০)। বাকি তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

মৃতদের মধ্যে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৪৪ জন, দেবীগঞ্জের ১৭ জন, আটোয়ারীর ২ জন ও ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ জন পঞ্চগড় সদর ১ জন রয়েছেন। ৬৭ জনের মধ্যে নারী ৩০ জন এবং পুরুষ ১৭ জন। বাকি ২০টি শিশু রয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এমপি, জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।