সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির স্থাপন করলেন জেলা আওয়ামী লীগ সা’ সম্পাদক ছানু

মোঃ আব্দুল করিম, শেরপুর প্রতিনিধি :

সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাস। জেলা জুড়ে প্রায় লক্ষাধিক হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের বসবাস। এদের সিংহভাগ শেরপুর পৌরসভার বাসিন্দা। শেরপুর সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হিন্দুদের বসতি রয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শেরপুরে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এ উপলক্ষ্যে এই উৎসবকে নির্বিগ্ন এবং আনন্দময় করতে দিনরাত ছুটে চলেছেন শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ছানুয়ার হোসেন ছানু। এবছর পূজা উপলক্ষ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর ২৫০০ মানুষের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গি এবং থ্রি পিছ বিতরণ করেছেন। ২ হাজার মানুষের মাঝে চাল, ডাল এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। ৬০ টি পূজা মণ্ডপে ৩ হাজার করে সর্বমোট ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বিতরণ করেছে।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট সুব্রত দে ভানু বলেন, এবছর পূজার শুরু থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ছানুয়ার হোসেন ছানু হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পূজা মণ্ডপ এলাকায় স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। ৬০ টি পূজা মণ্ডপে নগদ ৩ হাজার করে অর্থ সহায়তা প্রদান করছেন। এর আগে কোন ব্যাক্তি বা রাজনৈতিক নেতা ব্যাক্তিগত ভাবে পূজা মণ্ডপে এমনভাবে অর্থ সহায়তা প্রদানের নজির নেই। আমরা জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ছানুয়ার হোসেন ছানুর অসাম্প্রদায়িক এমন কর্মকাণ্ডে আনন্দিত।

জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা আলহাজ্ব মোঃ ছানুয়ার হোসেন ছানু বরাবরই আমাদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সকলের খোঁজ রাখেন এবং দেখভাল করেন। কিন্তু এবছর সরকারী দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ড সত্যিই অতুলনীয়। তিনি সারা শেরপুরের সকল হিন্দুদের জন্য এই উৎসবের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে সম্প্রদায়ের পিছিয়েপড়া হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন।

এতেই বোঝা যায় তিনি সমাজের সকল পর্যায়ের সাধারণ মানুষের জন্য কতটা ভাবেন। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল মানুষের মাঝে নতুন আশার সঞ্চালন ঘটেছে। তিনি পূজাতে ঘুরতে আসা পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাংবাদিক এবং দলীয় নেতাকর্মীদের একটি টিম নিয়ে প্রতিটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে ঘুরে সকলের খোঁজ নিচ্ছেন। শুধু তাই নয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের জন্য তিনি পূজা উপলক্ষ্যে উপহারও পাঠিয়েছেন। আমরা মনেকরি তার এই উদ্যোগগুলো মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই দেশের তৃণমূল পর্যায়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটাবে।

বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন (বিডিএফ) এর ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব সমাজকর্মী, বিতার্কিক শাহ্ মুহাম্মদ ইমতিয়াজ চৌধুরী শৈবাল বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি যিনি সরকারি দলের একটা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং একই সাথে একজন হাজি। তিনি যখন এভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে দাঁড়ান, তখন সমাজের সকলের কাছে একটা ইতিবাচক বার্তা পৌঁছায়। যা সমাজের কুসংস্কার এবং ধর্মান্ধতা ভাঙ্গতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

একই সাথে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সকলে এদেশের নাগরিক এবং আমাদের সকলের অধিকার সমান এই বার্তাও সমাজের সকলের কাছে পৌঁছায়। যা একটি মেধাভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি মুসলিম এবং যুব সমাজের একজন প্রতিনিধি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ ছানুয়ার হোসেন ছানু সাহেবের এমন উদ্যোগের জন্য তাকে সাধুবাদ জানাই। আমি বিশ্বাস করি সামাজিক এবং দলীয়ভাবে তার এই কল্যাণমূলক কাজগুলোর ইতিবাচক মূল্যায়ন হবে এবং তাকে দেখে আরো অনেকে এমন কাজে এগিয়ে আসবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ ছানুয়ার হোসেন ছানু বলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি। আমি মনে করি জননেত্রী শেখ হাসিনা’র একজন কর্মী হিসেবে যে কোন সম্প্রদায় বা ব্যক্তির পাশে দাঁড়ানো আমার পবিত্র দায়িত্ব। জননেত্রী যেহেতু আমাকে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন, সুতরাং শেরপুরের প্রতিটি মানুষ এবং সম্প্রদায়ের সুখে, দুঃখে এবং উৎসবে তাদের পাশে থাকা আমার কর্তব্য। শেরপুরের উল্ল্যেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের।

তাদের ধর্মীয় উৎসব তাদের কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, একজন মানুষ হিসেবে তাদের উৎসব যেন তারা নির্বিঘ্নে আনন্দঘন পরিবেশে পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করা আমার কাছেও ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মুসলিম হিসেবে আমি জানি ইসলাম শান্তির ধর্ম। যার যার ধর্ম সে সে নির্বিঘ্নে পালনের মধ্য দিয়েই সমাজে, দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি হিন্দু ভাইদের এই পূজার শুরু থেকেই তাদের সাথে আছি, অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ। পূজার শুরুতেই ঐক্য পরিষদ এবং পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজিত ভিন্ন ভিন্ন ২ দুটি র‍্যালিতেই অংশগ্রহণ করেছি।

আমার সকল হিন্দু ভাই-বোনেরা যেন আনন্দের সাথে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করতে পারে সেজন্য আমার সাধ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের হতদরিদ্র পিছিয়েপড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমি জানি যে সকলের সাধ্য সমান নয়, অনেকের হয়ত সাধ থাকা সত্যেও পূজাতে একটা নতুন কাপড় কেনার সাধ্য নেই। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশে ২৫০০ পরিবারের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গি এবং থ্রি পিছ বিতরণ করেছি। ২ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছি এবং ৬০ টি মণ্ডপে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছি।

তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলছি। আমার উদ্যেশ্য তৃণমূল পর্যায়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটানো এবং এই চেতনাকে ছড়িয়ে দেয়া। আমরা দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি তারা যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে থেকে নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনে সহযোগিতা করেন। পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা স্থানীয় এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে যদি আমি আরো বড় দায়িত্ব পাই আরো বড়ো পরিসরে সমাজের সকলের পাশে দাঁড়াবো।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ ছানুয়ার হোসেন ছানুর এই সমস্ত উদ্যোগ শেরপুর সহ আশেপাশের জেলা সমূহের মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। বিশেষ করে শেরপুরের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং জনসাধারণ ছানুয়ার হোসেন ছানুর ভূয়সী প্রশংসা করছেন।