শিক্ষকের স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় শিক্ষককে ধরে গণপিটুনি

জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা :

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের শিক্ষক জগবন্ধু রায় ও মৌখালী গ্রামের শিক্ষক গোলাম রহমান দুই বন্ধু। সেই সুবাদে একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত করেন। আর এই সুযোগেই জগবন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন গোলাম রহমান। রোববার রাতে হাতেনাতে ধরা পড়ে গণপিটুনি খেয়েছেন শিক্ষক গোলাম রহমান।

জগবন্ধু রায় ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের দাঁড়িয়ালা গ্রামের বাসিন্দা ও গোয়ালপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর গোলাম রহমান মৌখালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ সরদারের ছেলে ও ড্যামরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

গোয়ালপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু রায় জানান, গোলাম রহমান বন্ধুত্বের সুযোগে তার স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি সকালে স্কুলে চলে যাওয়ার পর গোলাম রহমান স্কুলে না গিয়ে আবার কখনও স্কুলে হাজিরা দিয়ে কালিগঞ্জে শিক্ষা অফিসের নাম করে তার বাসায় আসেন। তারপর আমার বৃদ্ধা মায়ের রুমে তালা দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন।

তিনি বলেন, আমি তিন মাস আগে ছুটি নিয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলাম। করোনা ভাইরাসের কারণে ভারতে লকডাউনে দুই মাস আটকে পড়ি। গত এক মাস আগে আমি বাড়িতে ফিরেছি। রোববার রাতে অসুস্থ বোধ করায় বাড়ির দ্বিতীয় তলায় রাত ৯টার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি। নিচ তলায় স্ত্রী একা থাকার সুযোগে মোবাইলে তার পরকীয়ার প্রেমিক গোলাম রহমানকে ডেকে নেয়। পরে রাত একটার দিকে ঘরের মধ্যে এলাকার লোকজন তাদের হাতেনাতে আটক করে। এ সময় গোলাম রহমানকে গণধোলাই দেয় এলাকাবাসী।

রাত ৩টার দিকে ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জী ঘটনাস্থলে এসে মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। আমি একজন শিক্ষক আর আমার সহকর্মী বন্ধু এমন কাজ করতে পারে সেটা ভাবতে অবাক লাগছে।

এ বিষয়ে ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জী বলেন, জগবন্ধু লোক পাঠিয়ে তার বাড়িতে ডেকে নেন। গিয়ে দেখি গণপিটুনি দিয়ে শিক্ষক গোলামকে বেঁধে রেখেছেন। প্রধান শিক্ষক জগবন্ধুর কথামতো মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনাটি আমি থানায় জানাব।

এদিকে ‘এ বিষয়ে সংবাদ করার দরকার নেই’ বলে অনুরোধ করেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম রহমান।

ঘটনার বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। তবে কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি।