বখাটেদের পায়ে ধরে ‘বড় ভাই’ ডেকেও রক্ষা পাননি তরুণী

সম্পাদকীয় …

নিজের জীবন ও সম্মান বাঁচার জন্যে মানুষ অনেক কিছুই করে। পরিস্থিতির শিকার হয়ে কেউ কারো পায়েও ধরে। সে সে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু একটি মেয়ে যখন তার সম্মাান বাঁচানোর জন্যে পায়ে ধরে; এমনকি তাদের বড় ভাই বলেও ডাকে তখন তো তাকে নিজের বোনের আসেন বসানো উচিত। কিন্তু বখাটে লোকগুলো সেই মেয়েটিকে ছেড়ে দেয়নি। আর মেয়েটিও সেই অমানুষদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। সুতরাং প্রশ্নটা আমাদের প্রত্যেকের মনে বার বার উঁকি দেয় যে, আমরা কি অধপতনের দিকে চলে যাচিছ?

প্রিয় সময়ে ‘বখাটেদের পায়ে ধরে ‘বড় ভাই’ ডেকেও রক্ষা পাননি তরুণী : ভিডিও ভাইরাল’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিতে এক অসহায় মেয়ের বাঁচার করুণ আবেদনের কথা আমরা দেখতে পাই। যে কিনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পুনিয়াউট এলাকার একটি কাশবনে ঘুরতে যায়। আর সেখানে স্থানীয় বখাটেদের কাছে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে সেই তরুণী! এমনকি ওই তরুণীর শ্লীলতাহানির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এতে শহর জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে। পুলিশ তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে বলে আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।

আমরা প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, সেই তরুণী কাশবনে যখন ঘুরতে যায়; তখন সেখানে স্থানীয় ৩/৪ জন বখাটে উত্যক্ত করতে শুরু করে। ওরা তরুণীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে টাকাও নিয়ে যায় তারা। অসহায় হয়ে পড়ে ওই বখাটেদের কাছে সেই তরুণী। তখন তাদের পায়ে ধরে বড় ভাই ডেকে কাকুতি মিনতি করা শুরু করে। তবুও তাদের মন গলে যায়নি একটুও। তারা মেয়েটির বোরকা খোলার চেষ্টা করে এবং তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করতে থাকে।

ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, সেই বখাটেরা অত্যন্ত দুঃসাহসী বটে। প্রকাশ্য দিবালোকে তারা এক তরুণীর উপর এভাবে অমানবিক আচরণ করেছে। মেয়েটির প্রতি তারা কোনো মায়ামমতা দেখায়নি। সেই মুহূর্তে আশপাশে কোনো মানুষ ছিলো কিনা সে ধরনের বিষয় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি নাই। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে কেনো মানুষ এগিয়ে আসলো না। অথবা, এগিয়ে আসলেও হয়তো ওই বখাটের লালসা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হতো না। হতে পারে, সেই বখাটেরা অনেক শক্তিশালী, অথবা আশপাশের লোকজন বাড়তি ঝামেলা নিতে চায় না বিধায় এমন পরিস্থিতিতে কেউ এগিয়েও আসেনি।

যদি এমনটি হয় যে, জায়গাটি নির্জন। তাহলে সেখানে মেয়েটিকে একা মেয়ে সুযোগ নিয়েছে বখাটেরা। এসব ঘটনা প্রকাশ করে যে, মেয়েরা মোটেও স্বাধীনভাবে চলতে পারবে না ঐসব বখাটের মানুষদের কারণে। কিন্তু কেনো, আমাদের সমাজ কেনো আজো মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলতে দিতে পারে না। কেনো এ ধরনের বখাটেদের কঠিন শাস্তি হয় না! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে সেই শ্লীলতাহানির ভিটিও প্রকাশ করা তো আরো বেশি দুঃসাহসের বিষয়।

আমরা বলতে চাই যে, ওইসব বখাটে নিশ্চয় কোনো শক্তিশালী মানুষের মদদে বেঁচে আছে। অন্যথায় তাদের এতো সাহস কোথা থেকে আসে। আমরা এ ধরনের বখাটে লোকদের শাস্তির প্রত্যাশা করি। আমরা চাই, তাদেরকে অতি দ্রুত ধরে এনে আইনের মাধ্যমে কঠিন শাস্তি দেয়া হোক।

আমরা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, প্রিয় সময় গুজব প্রচার করে না

০৪ অক্টোবর ২০২০ খ্রি. ১৯ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৬ সফর ১৪৪২ হিজরি, রোববার