বরিশালে আ.লীগ-ছাত্রলীগের ৩০ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রিয় সময় |
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ৩০ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে দুটি মামলা হয়েছে। মামলার পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ ওরফে বাবুসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ ও ইউএনও বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ৩০ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ ওরফে বাবু, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে ফিরোজ, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি অলিউল্লাহ অলি প্রমুখ আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।

বরিশাল সদরের ইউএনও মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে গতকাল বুধবার রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। গতকাল রাতে দুই দফায় জেলা ছাত্রলীগের কয়েক শ নেতা-কর্মী ইউএনওর বাসভবনে হামলা চালান বলে অভিযোগ ইউএনওর। হামলায় ইউএনওর বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। ছাত্রলীগের দাবি, এ সময় তাদের অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারী নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার শুভেচ্ছা ব্যানার অপসারণের কাজ শুরু করেন। এ সময় ইউএনওর কার্যালয় ও সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাদের সকালে এসে কাজ করার জন্য বলেন। এ দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

খবর পেয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান আহেমদ ওরফে বাবুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের জেলা কমিটির সহসভাপতি আতিকুল্লাহ খান মুনিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব খান, সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতসহ শতাধিক নেতা-কর্মী সেখানে গেলে নেতা-কর্মীরা ইউএনওর বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

ইউএনও মুনিবু্র রহমান অভিযোগ করেন, ‘উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার ও পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসেন। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তাদের সকালে আসতে বলা হয়। এ কারণে তাঁরা আমাকে গালিগালাজ করে। আমার বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালান।’

পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইউএনওর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর তারা পুলিশের ওপরও চড়াও হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন করা হয়। করা হয় লাঠিপেটা।

প্রিয় সময়/১৯আগস্ট/এমআর