মায়ের দশম প্রয়াণ দিবস!

অশোক কুমার রায় :

আজ আমাদের মায়ের দশম প্রয়াণ দিবস! আমার শুধু না জগতে সব সন্তানদের মায়ের প্রতি একটা আলাদা দূর্বলতা থাকে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু ভাইবোন বেশ কয়েকজন থাকলে কারো কারো এই দূর্বলতা প্রায়শই ধরা পড়ে। আবার উল্টোও হয়। মা-বাবা তাদের সন্তানদের কাউকে একটু ভরসা করে , কাউকে একটু বেশি কেয়ার করে আবার কাউকে বেশি ভালবাসে। ভাল প্রতিজনকেই বাসে তবে ধরণটা আলাদা হয় আর কি।

আমার মা আমার নাম কোন দিন একবারে ডাকেনি না ডাকতে পারেনি! আমার নাম অশোক কিন্তু এটা ডাকতে গিয়ে সে আগে ডাকবে অসীম , অনুপ তারপর বলবে না অশোক–। অসীম ও অনুপ কিস্তু আমার নাম না ও দুটি নাম আমার শ্রদ্ধেয় অগ্রজ ও প্রিয় অনুজের নাম। বুঝতে পারছেন আমার মা আমাকে কেমন ভালবাসত। এটা নিয়ে আমার বিস্তর অভিযোগ ছিল মা-বাবা দু’জনের প্রতিই কিন্তু তার উত্তর হাসিতে সব শেষ।

আমি মাকে খুব একটা মনে করতে চাইনা কিন্তু কিছুদিন আমার কণ্যা অরুন্ধীর খুব আক্ষেপ ছিল কেন তার ঠাকুরমা নেই। সে খুব বেশি গল্প করতে পারেনা, বাসায় সে একা । অবশ্য সে জায়গাটা তার দিদা-দাদুকে একটু বেশি থেকে পূরণ করতে হচ্ছে। যাইহোক, মায়ের উপর আমার অনেক অভিমান রয়েছে বলেই মনে করতে চাইনা। আমার বিয়ে ঠিক করলেন গ্রীষ্মে আমার আর্শিবাদও হয়ে গেল বর্ষায় বটে, দুই মা (মা ও শ^াশুড়ী) মিলে শীতে বিয়ের দিন ধার্য করে শরতের সাদা কাশফুলে মতো শরতেই পূজোর আগে উনি উড়ে গেলেন দূর আকাশে আমাদের ৪ ভাইবোনকে এতিম করে। খুব স্বাভাবিকভাবে মায়ের উপর একটা অভিমানেই মনে করতে চাইনা।

তারপর আরো কত ছোট খাট অভিমান রয়েছে তাঁর উপর! সেকারণ তো রয়েছে তাছাড়া মায়ের কথা মনে হলে মনও বেশ খারাপ হয় এজন্য তবে, মায়ের কথা মনে হলে আমার মায়ের গায়ের ঘ্রাণ আমি পাই ।

এছাড়া মা পান খেতেন সুরভী জর্দা দিয়ে সেই জর্দার ঘ্রাণটা পেতে মাঝে মাঝে রাতে খাওয়ার পর সিঁিড়তে মায়ের পাশে বসে গল্প করার দিনটা বেশ অন্তরে ধারণ করে স্মৃতি রোমহ্নন করতে বেশ লাগে। আমরা মায়ের প্রতি জাগতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালেনের পূর্বেই তিনি আমাদের ছেড়ে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তে দূর আকাশে পাড়ি জমান।

ভগবানের নিকট প্রার্থনা আমাদের মাকে তাঁর পাদপদ্মে স্থান দিক।