ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে পড়ে আছে শীতের কম্বল, ত্রাণের চাল খাচ্ছে ইঁদুরে

স্বরূপকাঠিতে কোটিপতি ইউপি চেয়ারম্যানের দরিদ্রদের প্রতি অবজ্ঞা

স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি :
স্বরূপকাঠির বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কোটিপতি চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ এর অবহেলায় দরিদ্রদের মাঝে ত্রানের কম্বল ও ভিজিডির চাল যথাসময় বিতরণ করা হয়নি। গত জানুয়ারী মাসে উত্তোলন করা শীতের কম্বল ও বিভিন্ন সময়ের বেশ কিছু ত্রাণের চাল পরিষদের গোডাউনে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গোডাউনে স্তুপাকারে থাকা কম্বল ও চাল ইঁদুরে খেয়ে ফেলছে। গত ঈদুল ফিতরের জন্য সরকারের ভিজিএফ এর টাকা বিতরণ করা হয় ৩০ রমজান। বাকী টাকা ঈদের পর রোববার ও সোমবার বিতরণ করা হয়েছে।

ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম, বাবুল মিয়াসহ ইউনিয়নের ৮ জন সদস্যের করা অভিযোগের সূত্রে সরেজমিন জানাযায় বলদিয়া ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাজ ব্যবসায়ী মো. শাহীন আহমেদ বেশীরভাগ সময় ঢাকায় থাকেন। জানুয়ারী মাসে পাওয়া ১১৫ পিস কম্বলের ৮০ পিস এখনো বিতরন না করে গোডাউনে ফেলে রাখা হয়েছে। পরিষদের সদস্যদের কাছ থেকে নেওয়া তালিকার কোন গুরুত্ব না দিয়ে চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছা মাফিক সকল প্রকার সরকারী সাহায্য বিতরন করেন বলে এমন অবস্থা। আম্ফানের বন্যার সময়ের ৪০০ কেজি জি আর চাল গোডাউন থেকে তুলে এখনও বিতরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এসময় চেয়ারম্যান উপস্থিত না থাকায় ইউপি সচিব চাঁদ নারায়ন চক্রবর্তীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান বেশির ভাগ সময় এলাকায় থাকেন না। সদস্যদের সাথে সমন্বয়ের অভাব থাকায় বিতরন করা হয়নি। তিনি জানান জানুয়ারী মাসের শেষের দিকে উপজেলা পরিষদ থেকে ৮০ পিস কম্বল দেওয়া হয়েছে। কিন্ত কোন তালিকা বা চেয়ারম্যানের নির্দেশ না পেয়ে বিতরন করা হয়নি। সচিব গোডাউনে নিয়ে গেলে কক্ষের মধ্যে দেখা যায় ত্রানের কম্বলগুলো স্তুপাকারে পড়ে আছে। যার ওপর ধুলার পাহাড় জমেছে। আর বস্তার গায়ে ২০১৯ লেখা বেশ কিছু চালের বস্তায় পোকা মাকরে বাসা বেধেছে। এ সময় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম, বাবুল মিয়া, জাহারুল ইসলাম, আব্দুর রহিম বলেন, চেয়ারম্যান মাসে সময় পেলেএকবার পরিষদে আসেন। নয়ত আসেন না।

এসব বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, মেম্বাররা কোন কাজ না করে কেবল খাওয়ার ধান্দায় থাকে। আমি কম্বলগুলে সদস্যদের তালিকা করে বিতরণ করতে বলেছি। তারিখ মত চাল বিতরণ করার সময় অনেকে নিতে আসতে পারে না বলে কিছু চাল থেকে যায় এবং পরে সেগুলো সচিবকে বিতরণ করার নির্দেশ দেয়া আছে। গত ২/১ মাসের সে চালগুলো রয়ে গেছে। জিআর প্রকল্পের চাল সমন্বয়হীনতার অভাবে উত্তোলন করা হয়নি। তিনি বলেন আমি বিএনপি করি বিধায় সরকার দলীয় ইউপি সদস্যরা আমাকে চাপের মধ্যে রাখেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানস কুমার দাসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ত্রানের মালামাল তৎক্ষনিক ভাবে বিতরন করতে হবে। না করে থাকলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। টাকা বিতরনের বিষয়ে অনেক কাহিনী শুনেছি। শেষ পর্যন্ত কঠোর নির্দেশে টাকা বিতরনে বাধ্য হয়েছেন। অনিয়ম পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।