পঞ্চগড়ে সন্তান হত্যার দায়ে মায়ের ১০ বছর জেল

এন এ রবিউল হাসান লিটন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড়ে আট মাস বয়সী ছেলে ইমরান হাসানকে হত্যার দায়ে শিশুটির মা হামিদা আক্তার (২২)কে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

২৬ অক্টোবর (বুধবার) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আনিছুর রহমান এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন।

মামলার বিবরণ ও আদালত সুত্র জানায়, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার লতিফগঞ্জ এলাকার আক্তারুল হক (২৮) বিয়ের দুই বছরের মাথায় পারিবারিক কলহের জেরে তার স্ত্রী হামিদা আক্তারকে খোলা তালাক দেন। ২০১৭ সালে ৮ এপ্রিল তালাকপ্রাপ্ত হামিদা আক্তার আট মাস বয়সী ছেলে ইমরান হাসানকে নিয়ে আটোয়ারী উপজেলার দোহসুহ গ্রামে তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এর চারদিন পর ১২ এপ্রিল দুপুরে হামিদা আক্তারের বাবার বাড়িতেই শিশু হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শিশুর চাচা মো. মজনু হক বাদী হয়ে হামিদা আক্তার এবং তার বাবা হাসান আলী ও মা খোদেজা বেগম (৪৫) কে আসামী করে আটোয়ারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত শেষে নিহত শিশুটির মা হামিদা আক্তারকে অভিযুক্ত করে তিনজনের নামে একই বছরের ১৬ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর একাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন এবং দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত হামিদা আক্তার তার আট মাস বয়সী ছেলের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেন।

গতকাল বুধবার আদালতের এজলাসে প্রধান আসামী হামিদা আক্তারের উপস্থিতিতে আদালতের বিচারক এই দন্ডাদেশ দেন। অপর দুই আসামী হামিদা আক্তারের মা ও বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় বিচারক তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলার প্রধান আসামী হামিদা আক্তার তার আট মাস বয়সী ছেলের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

অভিযোগটি আদালতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হয় এবং এক পর্যায়ে হামিদা আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। বিজ্ঞ আদালত প্রধান আসামীকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।