চাঁদপুরে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

চাঁদপুর প্রতিনিধি :

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম কাজীরগাঁও গ্রামের একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. জুয়েলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আসামি মো. রিপনকে ৩২৬ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড, ৩২৩ ধারার অপরাধে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৩২৪ ধারার অপরাধে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপর আসামি ফারহান ওরফে ফেন্সীকে ৩২৩ ধারার অপরাধে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামি মো. রিপনের সকল দণ্ডসমূহের সাজা একত্রে চলবে।

http://picasion.com/

রোববার (১ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জুলফিকার আলী খাঁন এই মামলার রায় দেন। নিহত নাসির উদ্দিন মিয়াজী বাড়ির আব্দুল মতিন মিয়াজীর ছেলে।

বাদী ও বিবাদীরা একই বাড়ীর বাসিন্দা। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মো. জুয়েল, পৃথক সাজাপ্রাপ্ত রিপন ও ফারহানা মিয়াজী বাড়ির আব্দুর রহিমের ছেলে এবং মেয়ে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মামলার বাদী মো. গিয়াস উদ্দিন ও তার আপন ভাই নিহত নাসির উদ্দিন রমজানের ইফতারের পরে বাড়ির পুকুরে নামাজের জন্য অজু করতে যান। ওই সময় পুকুর পাড়ে বিবাদী রিপনদের একটি গরুর বাছুর দেখতে পায়। তখন নাসির ওই বাছুরটির রশি খুলে ছেড়ে দেয় এবং অন্যত্র নিয়ে যেতে বলে। তখন তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রিপন তাদের ঘরে থাকা শাবল দিয়ে নাসিরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এই অবস্থায় নাসির চিৎকার করলে রিপনের সঙ্গে অপর আসামি জুয়েল ও ফেন্সি ঘরে থাকা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নাসিরকে বেধম পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাকে উদ্ধার করার জন্য তার স্বজনরা আসলে তাদেরকেও মারধর করে। গুরুতর অবস্থায় নাসিরকে উদ্ধার করে প্রথমে হাজীগঞ্জে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে কুমিল্লা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় নাসির উদ্দিনের মৃত্যু হয়।

gif maker

ওই ঘটনায় নাসির উদ্দিনের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন ঘটনার দিন বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় ৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সময়ের হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদেকুর রহমান তদন্ত শেষে একই বছরের ২৭ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রনজিত রায় চৌধুরী বলেন, মামলাটি প্রায় ১৩ বছর আদালতে চলমান অবস্থায় ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহমেদ। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন রাজেশ মুখার্জি ও মো. ফারুক।