ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার উপায় এবং যেভাবে বানাবেন ভিডিও

আপনি কি চাকরি ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র ভিডিও পাবলিশের টাকা দিয়ে চলতে পারবেন? সেটা জানাতেই এ প্রতিবেদন।

আমরা অনেক ইউটিউবারদের সফলতার গল্প শুনি যে কীভাবে তারা শুধুমাত্র বাসায় বসে কাজ করে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে অনেক অনেক টাকা আয় করেছেন। হ্যাঁ! এমন ইউটিউবার আছে কিন্তু তাদের সংখ্যাটা খুবই কম।

আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা যে ইউটিউবে প্রতি মিনিটে প্রায় তিনশ ঘণ্টার ভিডিও আপলোড হচ্ছে। সুতরাং ব্যাপারটা বুঝতেই পারছেন যে আপনাকে এর মধ্যে সফল হতে হলে অনেক প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলতে হচ্ছে, আর বিষয়টি মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়।

ইউটিউব থেকে এই আয়ের মধ্যে অনেক বৈপরীত্য দেখা যায়, কেউ কেউ হয়ত ইতোমধ্যেই এত টাকা আয় করে ফেলেছেন যে সারা জীবন আর কিছু না করলেও তাদের চলছে। আবার অন্যদের দিকে তাকালে দেখা যায় তারা আয় করছেন ঠিকই কিন্তু সে আয়ের পরিমাণ এতই অল্প যে বাসা ভাড়াটাও হয়তো ঠিকমতো পরিশোধ করতে পারছেন না।

তো এখন একটা প্রশ্ন এসেই যাচ্ছে যে ইউটিউবাররা গড়ে কত টাকা আয় করে থাকেন? এই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ আপনি তখনই পাবেন যখন আপনি ইউটিউবারদের আয় করার পাঁচটি উপায় সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখবেন।

ইউটিউবারদের আয় কত?

সাধারণত ইউটিউবাররা যে পাঁচটি উপায়ে আয় করে থাকেন সেগুলো হলো বিজ্ঞাপন, অ্যাফিলিয়েট লিংক, ডোনেশন, পণ্য বিক্রয় এবং স্পন্সর ভিডিও।

তবে এই আয় করার ব্যাপারটি, ‘এডিট করলাম আর আপলোড দিলাম’ মোটেও এমন নয়। তাদেরকে কাজ করতে হয় এমনভাবে যাতে একই সঙ্গে নিজেদের নাম অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যায় এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজেদের শক্ত ভিত্তি তৈরি হয়।

তো এই ইউটিউবাররা কত আয় করে থাকেন? এর উত্তরে বলা যায়, যদি তারা অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে পরেন তাহলে আয়ও অনেক পরিমাণে হতে থাকে। সৌন্দর্য সম্পৃক্ত দুই ইউটিউবার জেফরি স্টার এবং জ্যাকলিন হিল এর বর্তমান সাবস্ক্রাইবার হলো যথাক্রমে ১২.৭ মিলিয়ন এবং ৫.৮ মিলিয়ন।

আর তাদের চ্যানেল থেকে আয়ের পরিমাণ হলো যথাক্রমে ৫ মিলিয়ন ডলার এবং ১.৫ মিলিয়ন ডলার। অপরদিকে ভিডিও গেম নিয়ে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করা ফেলিক্স কেজেলবার্গ ৮৪ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার নিয়ে আয় করছেন ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মজার ব্যাপার হলো বেশিরভাগ ইউটিউবাররাই অত পরিমাণ আয় করতে চান। ব্যাপার কিছুটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, আপনি স্কুলের একটি নাটকে অভিনয় করছেন আর মনে মনে নিজেকে ব্র্যাড পিট এর মতো ভাবতে শুরু করেছেন।

জার্মান একটি গবেষণা সংস্থার মতে, ইউটিউবের অনেক জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোর মধ্যে মাত্র তিনভাগের আয় বছরে মাত্র সতের হাজার ডলারের মতো। যদিও এই আয় একদমই সামান্য নয়, তবে এই পরিমাণও নয় যার কারণে আপনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করা শুরু করে দিতে পারেন।

আসুন দেখে নেই যে পাঁচটি উপায়ে ইউটিউবাররা সাধারণত আয় করে থাকেন।

বিজ্ঞাপন থেকে আয়

ইউটিউবার হিসেবে এটা আয় করার একদম প্রাথমিক এবং সহজ একটি উপায়। ইতোমধ্যেই আপনারা হয়তো জানেন যে বেশিরভাগ ইউটিউবাররাই ভিডিওতে দেখানো বিজ্ঞাপন থেকেই আয় করে থাকেন।

আমরা বিভিন্ন ইউটিউব ভিডিও শুরু হওয়ার আগে এবং চলাকালীন সময়ে যে বিজ্ঞাপন দেখতে পাই সেখান থেকেই মূলত এই আয় হয়ে থাকে। তবে প্রত্যেকটি বিজ্ঞাপন থেকে ঠিক কি পরিমাণে আয় হয় এই ব্যাপারটি গুগল অনেকটাই নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে।

ইউটিউবাররা জানতেও পারেন না যে নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপনটি থেকে তিনি কি পরিমাণ আয় করছেন। তবে একটা প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায় যে প্রতি এক হাজার ভিউ থেকে প্রায় তিন ডলার থেকে ১০ ডলারের মতো আয় হয়ে থাকে।

আর ইউটিউবের সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এটাই যে আপনার কোনো ভিডিও যদি একবার জনপ্রিয় হয়ে যায় তাহলে এই ভিডিও যতদিন আপনার চ্যানেলে থাকবে ঠিক ততদিন আপনার আয় হতে থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো হতে থাকবে আপনার আয় হতে থাকবে।

সাধারণত বেশিরভাগ ছোট এবং শুরুর দিকের চ্যানেলগুলো এভাবেই আয় করে থাকে এবং ঠিক এজন্যই একে বলা হয়ে থাকে ‘ইউটিউব থেকে আয় করার সহজ একটি উপায়’।

ইউটিউবে আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য আপনাকে আলাদা করে কোনো কিছু করতে হবে না। তবে এটাকে সহজ উপায় বলা হলেও যতটা সহজ মনে হচ্ছে আদতে বিষয়টি এতটাও সহজ নয়। আপনি চ্যানেল তৈরি করে ভিডিও আপলোড করার সাথে সাথেই আয় করতে পারছেন না।

কেননা এই আয়ের জন্য আপনার চ্যানেলটিকে একটি যোগ্যতার পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। আর সেটি হলো বিগত এক বছরের মধ্যে আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলো অবশ্যই চার হাজার ঘণ্টা ভিউ থাকতে হবে এবং আপনার চ্যানেলে এক হাজার সাবস্ক্রাইব থাকতে হবে। এছাড়াও ইউটিউবে আপনার আয় যতক্ষণ না পর্যন্ত একশ ডলার না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সেই আয় আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আসবে না।

অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে আয়

যেহেতু বিজ্ঞাপন থেকে আয় সবসময় অনেক আকর্ষণীয় পরিমাণে হয় না তাই ইউটিউবাররা আরো ক্রিয়েটিভ উপায়ে আয় করার উপায় বের করেছেন। কোনো কোম্পানির সাথে আপনার চুক্তিতে যেতে হবে এই জন্য, আর তাদের পণ্যের লিংক আপনার ভিডিও ডিস্ক্রিপশনে দিয়ে রাখতে হবে এবং ভিডিওর মধ্যে তাদের এই পণ্যটির কথা আপনাকে বলে দিতে হবে।

যখনই কেউ সেই লিংকে ক্লিক করে পণ্যটি ক্রয় করেন সেখান থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনি কমিশন হিসেবে পেয়ে যাবেন। এতে আপনার লাভের সাথে সাথে কোম্পানিটিরও লাভ হচ্ছে, কেননা তাদের পণ্য বিক্রয়ের পাশাপাশি তাদের কোম্পানির মার্কেটিংও এর সাথে হয়ে যাচ্ছে।

ডোনেশন

চ্যানেলের ফ্যানরা আপনার ভিডিও দেখে আপনাকে কিছু অর্থ নিজের পকেট থেকে ডোনেট করার প্রক্রিয়াটিও ইউটিউবে আছে। প্যাট্রেয়ন নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই বিষয়টি হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়াটি তৈরি করা হয়েছে নতুন ইউটিউবাররা যাতে করে ভিউয়ারদের কাছ থেকে তাদের চ্যানেলের জন্য অর্থায়ন পায়।

ধরুন আপনি একটা চ্যানেল খুলেছেন এবং সেখান থেকে আপনার তেমন কোনো আয় হচ্ছে না। কিন্তু এদিকে আপনার চ্যানেলের ফ্যানরা চায় আপনি যাতে ভিডিও তৈরি করা চালিয়ে যান।

আর সেক্ষেত্রে তারা আপনাকে একটা ডোনেশন দিয়ে যাবে যাতে করে আপনি ভিডিও তৈরি চালিয়ে যেতে পারেন। তবে সাধারণত এই ডোনেশনের মাধ্যমে অনেক আয় করা সম্ভব হয় না। আর তাই এই ডোনেশন সিস্টেমটি রাতারাতি কাউকে বড়লোকও বানিয়ে দিতে পারে না।

নিজেদের পণ্য বিক্রয় করে আয় করা

এটা সাধারণত হয়ে থাকে যে সব ইউটিউবারদের অনেক ফ্যান থাকে। তখন সেই চ্যানেলের লোগো দিয়ে টি-শার্ট, চাবির রিং, ব্যাগ ইত্যাদি তৈরি করে সেটা চ্যানেলের ফ্যানদের কাছে বিক্রি করা যেতে পারে। এভাবেও বর্তমানে অনেক ইউটিউবাররা প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করছেন।

স্পন্সরশিপ এর মাধ্যমে আয় করা

যে সকল ইউটিউবারদের চ্যানেলে ইতোমধ্যেই বেশ ভিউয়ার এবং ফ্যান রয়েছে তাদের জন্য এটা আয় করার অন্যতম একটি উপায়। কোনো কোনো কোম্পানি তখন আপনাকে টাকা দিবে যাতে করে আপনার ভিডিওতে আপনি সেই কোম্পানির কথা উল্লেখ করেন। আবার কখনো কোম্পানি আপনাকে অনেক পরিমাণেই টাকা দিবে যাতে করে আপনি এমনভাবে ভিডিও তৈরি করেন যেখানে সেই কোম্পানির কথা ফলাও ভাবে প্রচার হয়ে থাকে। এটা কিছুটা এমন যে আপনার একটি টিভি চ্যানেল আছে এবং সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেউ আপনাকে অর্থায়ন করছে।

তবে এভাবে আয় করার জন্য আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিউ থাকতে হবে, কেননা কেবলমাত্র তাতে করেই কোনো কোম্পানি নিজেদের প্রচার প্রচারণার জন্য আপনাকে অর্থায়ন করার জন্য ইচ্ছুক হবে।

ইউটিউবে ভিডিও দেখার ১২ টিপস ও ট্রিকস

ভিডিও দেখার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে, ইউটিউব।

প্রায় সব ধরনের ভিডিও দেখার জন্য সবাই খোঁজ চালায় ইউটিউবে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ থেকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ভিডিও আপলোড করা হয় ইউটিউবে। গান, নাটক, সিনেমা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, টিভি শো, শিক্ষা, কমেডি সহ নানা ধরনের ভিডিওর জন্য বিখ্যাত ইউটিউব।

ইউটিউবে ভিডিও দেখার সুবিধার্থে নানা কৌশল রয়েছে। অনেকেই হয়তো সেগুলো জানা না থাকায় ব্যবহার করি না। তাই ইউটিউবে ভিডিও দেখার ১২টি টিপস ও ট্রিকস জেনে নিন।

একই ভিডিও বারবার দেখা

ইউটিউবে কোনো একটি ভিডিও যদি বারবার দেখতে চান, তাহলে ভিডিওটি দেখাকালীন সময়ে তাতে মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করে ‘Loop’ অপশনটিকে ক্লিক করুন। এর ফলে ওই ভিডিওটি শেষ হওয়ার পর আবারো তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বারংবার চলতে থাকবে। বন্ধ করার জন্য মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করে ‘Loop’ অপশনটি অফ করে দিন।

লগ-ইন না করেই age-restricted ভিডিও দেখা

ইউটিউবে age-restricted ভিডিও দেখার জন্য লগ-ইন করতে বলা হয়। অন্যথায় age-restricted ভিডিও দেখা যায় না। তবে লগ-ইন না করেই এ ধরনের ভিডিও দেখা যাবে লিংকে একটু পরিবর্তন এনেই। যে ভিডিওটি দেখতে চাচ্ছেন তার লিংক থেকে /watch?v= অংশটি বাদ দিয়ে সেখানে /v/ যোগ করলেই সরাসরি দেখা যাবে ভিডিওটি।

কিবোর্ড শটকার্ট

ইউটিউবে ভিডিও দেখার সময় মাউস ব্যবহারে না করে কিবোর্ড শর্টকার্ট ব্যবহার করতে পারেন। কিবোর্ডের K এর মাধ্যমে পজ/প্লে, J এর মাধ্যমে ১০ সেকেন্ড করে রিওয়াইন্ড, L এর মাধ্যমে ১০ সেকেন্ড করে ফার্স্ট ফরওয়ার্ড, M এর মাধ্যমে মিউট করা এবং কিবোর্ডের 1 থেকে 9 পর্যন্ত কিগুলোর সাহায্যে ভিডিওর ১০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত এগিয়ে যাওয়া যাবে (যেমন 7 নম্বরটি চাপলে ভিডিওটির ৭০ শতাংশে যাওয়া যাবে) এবং শূন্য (0) এর মাধ্যমে ভিডিওটি প্রথম থেকে চালু করা যাবে। F চাপলে পুরো ডিসপ্লে জুড়ে ভিডিও দেখা যাবে এবং Esc চাপলে ফুলস্ক্রিন মোড বন্ধ হবে। কিবোর্ডের লেফট/ রাইট অ্যারো চাপলে ভিডিও ৫ সেকেন্ড ফরওয়ার্ড হবে। আপ/ডাউন অ্যারো চাপলে ভলিউম কমানো কিংবা বাড়ানো যাবে।

ডিফল্ট ভিডিও রেজল্যুশন

ইন্টারনেট যদি ধীরগতির হয়ে থাকে, তাহলে ইউটিউবে ভিডিও দেখা খুবই বিরক্তিকর। কেননা ভিডিওটি বারবার বাফার হতে থাকে, আর অপেক্ষায় থাকা লাগে। সুতরাং ধীরগতির ইন্টারনেট হয়ে থাকলে ডিভিও রেজল্যুশন নির্ধারণ করে দিতে পারেন। এজন্য অ্যাকাউন্টে সাইন-ইন থাকা অবস্থায় www.youtube.com/account_playback লিংকটিতে গিয়ে ‘I have a slow connection. Never play higher-quality video’ অপশনটি চালু করুন। তাহলে ইউটিউব উচ্চ রেজল্যুশনের ভিডিও প্রদর্শন করবে না।

আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, ইউটিউবে যদি আপনি কেবল এইচডি কোয়ালিটির ভিডিওগুলোই চলুন এমনটা চান, তাহলে ফায়ারফক্স বা ক্রোম ব্রাউজারে ‘Magic Actions’ এক্সটেনশনটি ব্যবহার করতে পারেন।

পছন্দের শিল্পীর ভিডিওগুলো একসঙ্গে খোঁজা

ইউটিউবে যদি আপনার পছন্দের কোনো একজন শিল্পীর মিউজিক/ভিডিও একসঙ্গে খুঁজে পেতে চান, তাহলে ইউটিউব সার্চ বার-এ গিয়ে ওই শিল্পীর নামের আগে হ্যাশ (#) দিন। যেমন আপনার পছন্দ যদি অ্যাডেল হয়ে থাকে তাহলে #adele লিখুন, এর ফলে অ্যাডেল সম্পর্কিত যাবতীয় ভিডিওগুলো চলে আসবে।

নিদির্ষ্ট করে কিছু খোঁজা

ইউটিউবে নির্দিষ্ট করে কিছু খুঁজতে চাইলে, কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করুন। যেমন কোনো ভিডিও খোঁজার ক্ষেত্রে তার শিরোনামের শেষে ‘HD’ লিখে দিলে, এইচডি কোয়ালিটির ভিডিও চলে আসবে। আবার ধরুন আপনি একটি ভিডিও দেখেছিলেন, সেটার শিরোনামটা মনে আছে কিন্তু এখন খুঁজে পাচ্ছেন না, এক্ষেত্রে ‘allintitle:’ লিখে শিরোনামটি দিয়ে সার্চ করলে ভিডিওটি সহজেই পেয়ে যাবেন। কোনো শিরোনামের শেষে long লিখলে ২০ মিনিটের চেয়ে বড় দৈর্ঘ্যের, short লিখলে চার মিনিটের চেয়ে কম এমন ভিডিও খুঁজে পাওয়া যাবে।

ভিডিও প্লেব্যাকের স্পিড পরিবর্তন

যদি মনে করেন যে ভিডিওটি ইউটিউবে দেখছেন, সেটা আরো ধীরগতিতে কিংবা দ্রুতগতিতে দেখবেন, তাহলে ভিডিওটির Settings বাটনে ক্লিক করে Speed অপশনটিতে গিয়ে তা নির্ধারণ করে দিতে পারেন। ভিডিওটির স্পিড কমানোর ক্ষেত্রে (0.25X কিংবা 0.5X) এবং স্পিড বাড়ানোর ক্ষেত্রে (1.25X, 1.5X কিংবা 2X) করে দিতে পারেন।

ইউটিউব অ্যাকটিভিটি গোপন রাখা

আপনি যদি মনে চান যে ইউটিউবে আপনি কোন ভিডিওটি লাইক দিয়েছেন, কোন চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছেন বা আপনার প্লেলিস্ট, এসব অন্যরা কেউ না দেখুন, তাহলে আপনার ইউটিউব অ্যাকাউন্টের তথ্যগুলো প্রাইভেট করে দিতে পারেন। এজন্য অ্যাকাউন্টে সাইন-ইন থাকা অবস্থায় www.youtube.com/account_privacy লিংকে গিয়ে প্রাইভেসি সেট করুন।

পরে দেখার জন্য ভিডিও সংরক্ষণ

ইউটিউবে কোনে ভিডিওর হয়তো কিছুটা দেখেছন, কিন্তু বাকিটা পরবর্তীতে দেখতে চাচ্ছেন, এক্ষেত্রে ইউটিউবের ওয়াচ লেটার ফিচারটি ব্যবহার করুন। এর ফলে ওই ভিডিওটি সংরক্ষিত হয়ে থাকবে এবং আপনি পরবর্তীতে দেখতে পারবেন। এমনকি আগে যতটুকু দেখেছিলেন, তার পরের অংশটুকু থেকে দেখার সুবিধা পাওয়া যাবে। এজন্য ‘+ Add To’ অপশনটিতে ক্লিক করুন।

কোনো ভিডিও নির্দিষ্ট সময় থেকে শেয়ার করা

ইউটিউবে কোনো ভিডিও দেখার সময় যদি চান ওই ভিডিওটি কেউ আপনার নির্ধারিত অংশ থেকে দেখুন, তাহলে চলমান ভিডিওতে মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করে Copy video URL at current time অপশনটিতে ক্লিক করে লিংকটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করুন। ফলে যখন কেউ ভিডিও দেখার জন্য লিংকটিতে ক্লিক করবেন, তখন ঠিক ওই সময় থেকেই সেটি চালু হবে। এছাড়া ভিডিওটির শেয়ার অপশনটিতে ক্লিক করে সেখানে সময় নির্ধারণের মাধ্যমেও এই কাজটি করা যাবে।

অটো প্লে বন্ধ করা

ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখা শেষ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরেকটি ভিডিও চালু হয়ে যায়। এই অটো প্লে পদ্ধতিটা না চাইলে তা বন্ধ করে দিতে পারেন। ইউটিউবে ডান দিকে ওপরে Autoplay বাটন রয়েছে। এতে ক্লিক করলেই তা বন্ধ হয়ে যাবে।

সেরা সব ভিডিওর সংকলন দেখা

ইউটিউবে সর্বকালের সেরা সব ভিডিওর সংকলন দেখতে চাইলে http://youtube-trends.blogspot.com/search/label/%2310YearsofYouTube লিংকটি যেতে পারেন। এখানে অক্ষর অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা সব ভিডিও একসঙ্গে সংকলিত রয়েছে।

তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 

ইউটিউবের জন্য যেভাবে ভিডিও বানাবেন

সৃজনশীলতা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যমে হলো ইউটিউব। ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করে ভিউয়ারদেরকে জানাতে পারেন যে আপনি কতটা সৃজনশীল। আপনি ইউটিউব থেকে আয়ও করতে পারেন।

শখের বশে হোক কিংবা আয়ের উদ্দেশ্যে হোক, ইউটিউব আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে অথবা সমৃদ্ধ করতে পারে। কিন্তু ইউটিউবার হিসেবে সফল হতে হলে আপনাকে ভিডিও তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। এ প্রতিবেদনটি আপনার জন্য সহায়ক হতে পারে, যদি আপনি ইউটিউব ভিডিও তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছুই না জানেন। নতুনদের জন্য এ সংক্রান্ত পরামর্শ নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

* উপযুক্ত বিষয় নির্ধারণ করুন

আপনার প্রথম ইউটিউব ভিডিও তৈরি করার পূর্বে আপনার নির্বাচিত বিষয়টিকে বুঝতে হবে। আপনি কি বলতে চাচ্ছেন এবং কাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাচ্ছেন তা নিয়ে ভাবুন। আপনার ভিডিও কি বিনোদনের উদ্দেশ্যে বানানো হবে? আপনার ভিডিও কি প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য? আপনি কি কোনো বিষয়ে লোকজনকে শিক্ষা দিতে চান?

আপনি যে কনটেন্ট নিয়েই ভিডিও নির্মাণের কথা ভাবেন না কেন, নিজেকে ভিউয়ারের অবস্থানে দাঁড় করিয়ে কি দেখতে চান তা নিয়ে ভাবুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন যে কেন আপনি একটি ইউটিউব ভিডিওতে ক্লিক করবেন? ভিডিওতে কি থাকলে আপনি তা বন্ধ না করে দেখতে থাকবেন?

আপনি কি জনপ্রিয় ইউটিউবারদের অনুকরণ করে ভিডিও বানাবেন? নাকি সৃজনশীলতার পরিচয় দেবেন? কাউকে অনুকরণ করবেন নাকি নিজস্ব চিন্তাভাবনা থেকে ভিডিও বানাবেন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সকল ভিডিওতে একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় না। আপনার ভিডিও শব্দবহুল হলে স্ক্রিপ্ট লেখার প্রয়োজন হতে পারে। এটি সময়সাপেক্ষ কাজ হলেও আপনার ভিডিওর মান বেড়ে যাবে।

আপনি মূল স্ক্রিপ্টের পূর্বে রাফ স্ক্রিপ্টও লিখতে পারেন, অর্থাৎ আপনি ভিডিওতে যা যা দেখাতে চান তার মূল পয়েন্টগুলো লিখে রাখা ভালো। আপনি স্ক্রিপ্ট ছাড়াই সাবজেক্টকে উপস্থাপন করতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলে স্ক্রিপ্ট এড়িয়ে যেতে পারেন, কিন্তু এটা মনে রাখা ভালো- স্ক্রিপ্ট ছাড়া কাজ করলে ভিউয়ার হারাতে পারেন, কারণ মুখ ফসকে স্পর্শকাতর বা অবান্তর কথা বেরিয়ে যেতে পারে।

যথাসম্ভব ইউটিউবে নিজের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করুন, এমনকি আপনি স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করলেও। সময়ের ধারায় আপনার কণ্ঠস্বর ও স্টাইল ডেভেলপ হবে। ভিডিওর সূচনা ও সমাপ্তিতে কিভাবে ভিন্নতা আনা যায় তা নিয়ে মাথা খাটান। মনে রাখতে হবে, ভিউয়াররা এমন কিছু দেখলে খুশি হন যা আগে দেখেননি।

* ভিডিওর দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করুন

আপনার ভিডিওর দৈর্ঘ্য কত হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। ভিডিওর দৈর্ঘ্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিতে ভিউয়ারদের পছন্দ বুঝতে হবে। যদি আপনি ভিডিও জনপ্রিয় করতে চান, তাহলে ভিউয়ার কি চায় তা বুঝতে হবে। ভিউয়ারদের মনোভাব বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভিডিওর দৈর্ঘ্য কতটুকু হবে। আপনি যে বিষয়ের ওপর ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন সে বিষয়ে অন্য ইউটিউবারদের ভিডিওগুলো দেখুন এবং এসব ভিডিওতে যারা কমেন্ট করেছেন তাদেরকে প্রশ্ন করুন যে তারা কত মিনিটের ভিডিও পেতে চান। তাদের প্রত্যুত্তর থেকে একটা ধারণা পাবেন যে ভিডিওর দৈর্ঘ্য কত হলে ভালো হবে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে অল্পই ভালো। আমাদের অধিকাংশই ওয়েব ব্রাউজিংয়ের সময় বড় পোস্ট, আর্টিকেল ও ভিডিও এড়িয়ে চলেন। তাই ইউটিউবে সফলতার জন্য ভিডিওর দৈর্ঘ কম হওয়াই ভালো। বেশিরভাগ ভিউয়ার স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও দেখতে পছন্দ করেন। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, ভিডিওর দৈর্ঘ্য বেশি হলে সফল হওয়া যাবে না। অনেক ইউটিউবার ৪৫ থেকে ৯০ মিনিটের ভিডিও আপলোড করেন- এসব ভিডিও হাজার হাজার লোকে দেখে থাকেন।

এটা ঠিক যে লম্বা ভিডিও বানাতে বেশি সময় ও শ্রম দিতে হয়, কিন্তু ভিডিওটি তথ্যবহুল হলে নির্দিষ্ট ভিউয়ারদের প্রশংসা পাবেন এবং তারা প্রবল আগ্রহ নিয়ে আপনার পরবর্তী ভিডিওর জন্য অপেক্ষা করবেন। ভিডিওর দৈর্ঘ্য এক ঘন্টার হতে পারে, কিন্তু ভ্লগ লম্বা দৈর্ঘ্যের না হওয়াই ভালো। সাধারণত ইউটিউবের রেসিপি, রিয়্যাকশন ও ক্যাট ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য ১০ মিনিটের কম হয়ে থাকে। আপনার ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড না হওয়া পর্যন্ত ভিডিওর দৈর্ঘ্য ১৫ মিনিটের বেশি না হওয়াই ভালো। কমস্কোর রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি অনলাইন ভিডিওর গড় দৈর্ঘ্য হলো ৪.৪ মিনিট।

 

সৃজনশীলতা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যমে হলো ইউটিউব। ইউটিউবে ভিডিও পাবলিশ করে ভিউয়ারদেরকে জানাতে পারেন যে আপনি কতটা সৃজনশীল। আপনি ইউটিউব থেকে আয়ও করতে পারেন।

শখের বশে হোক কিংবা আয়ের উদ্দেশ্যে হোক, ইউটিউব আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে অথবা সমৃদ্ধ করতে পারে। কিন্তু ইউটিউবার হিসেবে সফল হতে হলে আপনাকে ভিডিও তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। এ প্রতিবেদনটি আপনার জন্য সহায়ক হতে পারে, যদি আপনি ইউটিউব ভিডিও তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছুই না জানেন। নতুনদের জন্য এ সংক্রান্ত পরামর্শ নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* ভিডিও তৈরির বেসিক শিখুন

আপনি যে ভিডিও তৈরি করতে যাচ্ছেন তার ওপর ভিত্তি করে ভিডিও তৈরির দক্ষতা অর্জন করতে হবে, অর্থাৎ আপনাকে ভিডিও তৈরির বেসিক বা মূল বিষয়গুলো শিখতে হবে। এখানে ব্যতিক্রম হলো ফুটেজ ব্যবহার করে বানানো ভিডিও, যা আপনি নিজে শুট করবেন না, যেমন- রিয়্যাকশন ভিডিও, গেম রিভিউ ও মুভি সমালোচনা।

আপনি শুরুর দিকে স্মার্টফোন ব্যবহার করে ভিডিও বানাতে পারেন। কিন্তু আপনি মিররলেস ক্যামেরা অথবা ডিএসএলআর কিনলে আপনার ভিডিও আরো ভালো দেখাবে। আলোক স্বল্পতার ক্ষেত্রে এ ধরনের ক্যামেরার প্রয়োজন রয়েছে।

ভিডিও তৈরি শুরু করতে টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। সবচেয়ে চমৎকার হলো ৪কে শুটিং, কিন্তু এখনো ইউটিউবের অধিকাংশ কনটেন্ট ১০৮০পি অথবা এর নিচে। শাটার স্পিড ও কালার প্রোফাইলের মতো টেকনিক্যাল দিকগুলো জানার পর ভিডিও কেমন করে ভালোভাবে শুট করতে হয় তা সম্পর্কে জানুন।

* সাউন্ডের গুরুত্ব বুঝুন

ভিডিওর মানে কেবলমাত্র দৃশ্যধারণ করবেন তা নয়। একটি ভিডিও তৈরির মানে হলো একটি গল্প বলা। আপনি শুনে বিস্মিত হবেন- অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভিডিওতে দৃশ্যধারণের চেয়ে অডিওর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কোনো গল্পের মূল ভিত্তি হলো অডিও, যেখানে ভিডিও প্রায়ক্ষেত্রে সম্পূরক। অনুসরণ করার জন্য এটি কোনো ধরাবাধা নিয়ম নয়, কিন্তু আপনাকে সবসময় অডিও ও ভিডিওর মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে চিন্তা করতে হবে।

নিম্নমানের ভিডিওকে আকর্ষণীয় করতে অনেক কিছু করা যেতে পারে, কিন্তু নিম্নমানের সাউন্ডের ক্ষেত্রে তেমন কিছু করা যায় না। একারণে এটা নিশ্চিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ যে আপনার সাউন্ড কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো। আপনার অডিওর কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো রাখতে একটি উন্নতমানের মাইক্রোফোন কেনার কথা বিবেচনা করতে পারেন।

যদি আপনি ক্যামেরায় সরাসরি কথা বলতে চান, তাহলে ইন-ক্যামেরা মাইক্রোফোনের ওপর নির্ভর করবেন না, এর পরিবর্তে অন-ক্যামেরা শটগান মাইক্রোফোন ব্যবহার করুন। অন-ক্যামেরা শটগান মাইক্রোফোন ক্যামেরার ওপর বসানো থাকে এবং এটিকে যেদিকে তাক করা হয় সেখান থেকে অডিও ধারণ করে। আরেকটি বিকল্প হলো ল্যাভালিয়ার মাইক্রোফোন- মুখের কথা স্পষ্টভাবে ধারণ করতে এটি গায়ের কাপড়ে লাগানো থাকে। কণ্ঠস্বর রেকর্ড করতে পিসি বা ম্যাকে এসব মাইক্রোফোন ব্যবহারে কোনো ভুল নেই, কিন্তু আপনি পিস টু ক্যামেরার ওপর নির্ভরশীল না হলে এর পরিবর্তে ডেস্ক-মাউন্টেড মাইক্রোফোন অধিক সুবিধাজনক হতে পারে। যদি আপনি সরাসরি কম্পিউটারে রেকর্ড করেন, তাহলে আপনার জন্য সেরা অপশন হলো অডাসিটি নামক অডিও সফটওয়্যার- এটি হলো শক্তিশালী অডিও সফটওয়্যার যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

* ভিডিও এডিটরের ব্যবহার জানুন

ভিডিও ও অডিও ফাইল প্রস্তুতের পর আপনাকে ভিডিও এডিট করতে হবে। ভিডিও এডিটের জন্য প্রয়োজন একটি ভিডিও এডিটর। কোন ধরনের ভিডিও এডিটর ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করছে আপনার বাজেটের ওপর। এছাড়া বিনামূল্যের ভিডিও এডিটরও রয়েছে।

ম্যাকে আপনি আইমুভি দিয়ে শুরু করতে পারেন- এটি একটি বিনামূল্যের ভিডিও এডিটর, যেখানে ভিডিও এডিটিংয়ের প্রক্রিয়া খুব সহজ। উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা ওয়ান্ডারশেয়ার ফিল্মোরা নামক ভিডিও এডিটর ব্যবহার করতে পারেন। এটি সুলভে পাওয়া যায়। যদি আপনি প্রফেশনাল ভিডিও এডিটরের খোঁজ করেন, তাহলে ডা ভিঞ্চি রিসলভ ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ভিডিও এডিটরের পেছনে অর্থব্যয় করার মতো সামর্থ্য না থাকলে বিনামূল্যের ভিডিও এডটিরই ব্যবহার করুন।

আপনি যে ভিডিও এডিটরই নির্বাচন করেন না, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানা। মজার বিষয় হলো, আপনি ইউটিউবের জন্য ভিডিও তৈরি করতে ভিডিও এডিটরের ব্যবহার শিখতে অন্য ইউটিউবারদের ভিডিও এডিটিং সংক্রান্ত ভিডিওগুলো দেখতে পারেন। এছাড়া ভিডিও এডিটিংয়ের কোর্স করতে পারেন অথবা ভিডিও এডিটরের ব্যবহার জানে এমন কারো কাছ থেকে শিখে নিতে পারেন।

ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ শেষ হলে ভিডিওটি ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে দিন ও পাবলিশ করুন। প্রথম ভিডিও পাবলিশের জন্য আপনাকে অভিনন্দন। অধিকাংশ সফল ইউটিউবার একটি কথা বারবার বলেন, ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন। মনে রাখবেন, সফলতার চাবিকাঠি হলো ধারাবাহিকতা। আপনার সামর্থ্য, দক্ষতার মাত্রা ও সময়ের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিন- কতদিন পরপর ভিডিও আপলোড করবেন। শুভ কামনা।

 

ইউটিউবার হতে চাইলে যা জানা প্রয়োজন

ভিডিও কনটেন্টের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম ইউটিউব। ইউটিউবে চ্যানেল তৈরি করে আপনি যেমন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, তেমনই আয় করতে পারেন। তবে ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে ধৈর্য্য ও মনোবল নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আপনি যদি ইউটিউবার হতে চান তাহলে কিছু বিষয় আগেই জেনে রাখা উচিত।

ইউটিউবারের যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন

ইউটিউব চ্যানেলকে সফল করতে ভালো মানের ভিডিও আপলোড করতে হবে। ভালো মানের ভিডিও তৈরি করতে কিছু যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হবে। কিন্তু দুশ্চিন্তা করবেন না, ভিডিও তৈরির কাজ শুরু করতে আপনাকে খুব বেশি খরচ করতে হবে না। এখানে একজন ইউটিউবারের যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা উল্লেখ করা হলো।

* ক্যামেরা : শুরুতেই আপনাকে ডিএসএলআর অথবা মিররলেস ক্যামেরা কিনতে হবে এমন কোনো কথা নেই। ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও তৈরি শুরু করতে ভালো মানের ওয়েবক্যামই যথেষ্ট। অথবা আপনার স্মার্টফোনও ব্যবহার করতে পারেন। বছরখানেক পর ইউটিউব থেকে কিছু আয় করতে পারলে আরো উন্নতমানের ক্যামেরা কেনার কথা ভাবতে পারেন।

* ট্রাইপড : আপনার ক্যামেরা অথবা স্মার্টফোনকে ধরে রাখা ও স্থির রাখার জন্য একটি ট্রাইপড (ক্যামেরার স্ট্যান্ড) প্রয়োজন হবে।

* মাইক্রোফোন : ক্যামেরার সঙ্গে যে বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন থাকে তা সুবিধাজনক নয়। একটি আলাদা মাইক্রোফোন কিনুন ও পৃথকভাবে অডিও রেকর্ড করুন। অডিওটি পরে ভিডিওটির সঙ্গে জুড়ে দিন। আপনার কন্টেন্টের ধরনের ওপর ভিত্তি করে উপযুক্ত মাইক্রোফোন কিনতে কনডেনসার মাইক্রোফোন ও ডাইনামিক মাইক্রোফোন সম্পর্কে জেনে নিন।

* গ্রিন স্ক্রিন : আপনার ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করতে একটি গ্রিন স্ক্রিনের প্রয়োজন রয়েছে। একটি গ্রিন স্ক্রিন কিট কিনতে ৫০ ডলারের বেশি খরচ হতে পারে। কিন্তু প্রথম প্রথম আপনি সাধারণ কোনো সবুজ কাপড় দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।

* স্ক্রিন ক্যাপচার সফটওয়্যার : আপনার ভিডিওর সঙ্গে স্ক্রিন ক্যাপচারের সম্পর্ক থাকলে স্ক্রিন ক্যাপচার সফটওয়্যার প্রয়োজন হবে, যেমন- এক্সেল ভিডিও টিউটোরিয়ালস অথবা পিসি গেমপ্লে। একটি বিনামূল্যের স্ক্রিন ক্যাপচার সফটওয়্যার হলো ওবিএস স্টুডিও- এটি এমপি৪ ভিডিও ফাইল হিসেবে স্ক্রিন রেকর্ড করতে পারে।

ইউটিউব চ্যানেলের প্রচার কিভাবে করবেন?

ইউটিউবে চ্যানেল খুলে প্রতিদিন নতুন নতুন ভিডিও আপলোড করলেই আপনি কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন না, আপনার সৃষ্টিকর্মকে মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রচার করতে হবে। প্রচার না করলে বছরের পর বছর চলে গেলেও আপনি ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার পাবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। আপনার চ্যানেলকে জনপ্রিয় করতে নিয়মিত ভিডিও আপলোডের পাশাপাশি প্রচারও করতে হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে প্রচারেই প্রসারে। কিন্তু কিভাবে প্রচার করবেন? এখানে এ সম্পর্কে কিছু ধারণা দেয়া হলো।

* সোশ্যাল মিডিয়া : আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে? তাহলে আপনার জন্য সুখবর। আপনার ভিডিওর লিংক ফেসবুকে শেয়ার করলে বন্ধুদের কাছে আপনার সৃষ্টিকর্ম পৌঁছবে। অ্যাকাউন্ট না থাকলে তৈরি করে নিন ও ফেসবুক বন্ধুর তালিকা লম্বা করুন। একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ৫,০০০ পর্যন্ত বন্ধু বানানো যায়। এছাড়া অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার চালাতে পারেন।

* ফোরাম : ভিডিও শেয়ারের জন্য অন্যতম চমৎকার মাধ্যম হলো ফোরাম, বিশেষ করে রেডিটের মতো বড় ফোরাম। এমন কমিউনিটি খুঁজুন যা আপনার কন্টেন্টের জন্য প্রাসঙ্গিক, তারপর সবচেয়ে ভালো ভিডিওটি শেয়ার করুন। কিন্তু অতি ঘনঘন শেয়ার করবেন না, কারণ স্প্যামিংয়ের জন্য ব্যান হতে পারেন।

* অন্যের সঙ্গে কাজ করুন : অন্যের সঙ্গে কাজ করলে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়। নেটওয়ার্ক বড় হলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও ভিউয়ের সংখ্যা বাড়বে, এর ফলে সাবস্ক্রাইবারও বাড়তে থাকবে- কারণ ভিডিও দেখে ভালো লাগলে বা উপকৃত হলে লোকজন আপনার চ্যানেলকে সাবস্ক্রাইব করবে। অন্য ইউটিউবারের অডিয়েন্স দ্বারা আপনার ভিডিওগুলো এক্সপোজের জন্য তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। অন্যের সঙ্গে কাজ করলে আপনারও উপকার হবে, যার সঙ্গে কাজ করবেন তারও উপকার হবে। এটা মনে রাখতে হবে যে প্রমোশন হলো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আপনার চ্যানেলকে জনপ্রিয় করতে অনেকগুলো মাস অথবা কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। ইউটিউবে সফল হতে অধ্যবসায়ের বিকল্প নেই।

ইউটিউব থেকে আয়

অনেকের ধারণা ইউটিউব থেকে আয় করা খুব সহজ, কিন্তু বিষয়টি আসলে তা নয়। ইউটিউব থেকে আয় করতেও আপনাকে ধৈর্য্য ধরে পরিশ্রম করে যেতে হবে। আপনি ভিডিও তৈরি থেকে শুরু করে প্রচারকার্য ঠিকঠাক চালাতে পারলে একটা সময় ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন। আপনার ভিডিও যত বেশি ভিউ হবে, আয় তত বাড়তে থাকবে। ২০১৬ সালে ইউটিউবে প্রতি ১,০০০ ভিউয়ের জন্য ইউটিউবারদের গড় আয় ছিল ১.৫০ ডলার। সেই হিসেবে আপনার ভিডিও ১ মিলিয়ন ভিউ হলে পকেটে ১,৫০০ ডলার পর্যন্ত আসতে পারে। ইউটিউবারদের অভিযোগ হলো, ২০১৭ সালে গড় আয় আরো কমেছে। সারকথা হলো, ইউটিউব চ্যানেল খুলেই রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখবেন না, এমনকি আপনার চ্যানেলটি জনপ্রিয় হলেও। তাহলে শীর্ষ ইউটিউবাররা কিভাবে আয় করে? তারা বিভিন্ন মনিটাইজেশন মেথডের মাধ্যমে অর্থোপার্জন করেন, যেমন-

* অ্যাফিলিয়েট সেলস ও প্রোডাক্ট প্রমোশন

* কনসালটেন্ট সার্ভিস

* সরাসরি বিজ্ঞাপন (অ্যাডসেন্স নয়)

* পাবলিক স্পিকিং ইভেন্ট

* ফ্যানস থেকে ডোনেশন।

অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

একজন ইউটিউবার হিসেবে নিজের প্রতি আস্থা ধরে রাখতে নিজেকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করবেন না। আপনার প্রথম ভিডিওর কাজ শুরু করার পূর্ব থেকেই অর্জনযোগ্য লক্ষ্য ঠিক করুন, যা আপনি করতে চান। এসবকিছু আপনাকে নিজের কাজে ফোকাস করতে ও উত্তরোত্তর উন্নয়নের জন্য প্ররোচিত করবে। অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করলে সহজে মনোবল হারায় না। একটি কার্যকর লক্ষ্যে তিনটি মূল উপাদান থাকে: সংখ্যা, সময় ও নিয়ন্ত্রণ।

* সংখ্যা : একটা নির্দিষ্ট সময়ে কতটি ভিডিও তৈরি করবেন, যেমন- ৩০ দিনে ১০টি ভিডিও তৈরি করা। একটা নির্দিষ্ট সময়ে আপনার পক্ষে যতগুলো ভিডিও বানানো সম্ভব ততটি ভিডিও বানানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।

* সময় : আপনার ভিডিওগুলো কতদিনের মধ্যে তৈরি করবেন তা নির্ধারণ করতে হবে, যেমন- ৩০ দিনে ১০টি ভিডিও তৈরি করা। এমনভাবে সময় নির্ধারণ করুন যেন নির্ধারিত সময়েই ভিডিওগুলো তৈরি করা যায়। যদি মনে করেন যে ৩০ দিনে ১০টি ভিডিও বানাতে পারবেন না, তাহলে ভিডিওর সংখ্যা কমিয়ে ফেলুন।

* নিয়ন্ত্রণ : এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন যেটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য। কাজকে লক্ষ্য বানান, ফলাফলকে নয়। আপনি প্রতি তিন দিনে একটি ভিডিও তৈরির লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন, কিন্তু ভিডিওটি কতজনে দেখবে সেটি নয়। ঠিক তেমনি আপনি এ মাসে কত আয় করবেন তা লক্ষ্য হতে পারে না, কিন্তু এটা আপনার লক্ষ্য হতে পারে যে স্পন্সর খুঁজে আলোচনার মাধ্যমে কিছু আয়ের চেষ্টা করা।