আজ আমাদের মায়ের প্রয়াণ দিবস

অশোক কুমার রায় :

আমার মা প্রচন্ড রকম ভাল মানুষের পাশাপাশি বেশ রাগী ছিলেন। তার সামনে খুব একটা ভুল করা চলবে না অবাধ্য হওয়া বারণ। ছেলে বেলা হতেই উনি স্বাধীনচেতা ছিলেন ( যা আমি আমার দাদু দিদিমা বা মামা মাসিদের থেকে জেনেছিলাম)। নিজের পছন্দ অপছন্দের মতামত রাখার সুযোগ তিনি তার পিত্রালয় হতেই পেয়ে এসেছিলেন বিবাহ পরবর্তী সময়ও শ^শুরবাড়িতে তার ব্যতয় ঘঠেনি। কারণ আমাদের পরিবার বেশ গণতান্ত্রিক।

আমরা ভাই বোন সবাইই কোন পারিবারিক বিষয়ে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মতামত প্রকাশ করতে পারতাম এখনও এটা আমাদের পরিবারে চালু আছে। আমাদের ভাইবোনেদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে আমার মায়ের গুরুত্ব অপরিসীম বাবার থেকেও এটা বললে অতুক্তি হবে না।

য্ইাহোক, মায়ের রাগী মনোভাবের একটা নমুনা লেখার চেস্টা করছি। আমি ছেলে বেলায় প্রচন্ড রকম দুস্ট ছিলাম। যেকারণে মায়ের রোশানলে পড়াটা খুব স্বাভাবিক ছিল। প্রায়শই মায়ের হাতের কাছে গেলে দু’ঘা কপালে জুটে যেত। এই দু’ঘা হতে নিজেকে রক্ষার জন্য মা কোন কারণে রেগে গেলে দূরে দূরে থাকতাম। এমনি অপরাধ একটা করেই যদি ফেলেছি, তো বাড়ির দক্ষিণ দিকের রাস্তা দিয়ে দক্ষিণের প্রতিবেশীর বাড়িতে সময় কাটাতাম। মায়ের রাগ পড়া কমার অপেক্ষায়! উনি যদি কখনও ধরার চেস্টা করতেন তবে ঐ একই পথ আমার কিন্তু ধরার চেস্টায় ব্যর্থ হয়ে রেগে গিয়ে বলতেন যাও ঐ দক্ষিণ দিকেই ঘর বাঁধ আর বাড়ি আসতে হবে না । কি আশ্চার্য কথা নিজ বাড়ি ছেড়ে দখিনে বাধঁব ঘর!

আমার মায়ের কথা কাজে লেগেছে। আমার ষোল বছর চাকরী জীবনের এগার বছরই ঘর বাঁধা হলো বাড়ি হতে দখিনে । দেশের উপক’লীয় এলাকার সাতক্ষীরার আশাশুনি,বরগুনার আমতলী, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা,পরবর্তীতে আবার সাতক্ষীরার আশাশুনি,খুলনার কয়রা সর্বশেষ ভোলার মনপুরা। আমার বেশ ভালই লাগে এ ঘুরতে।

মা বেঁচে থাকতে বলতাম তুমি কত দক্ষিণের কথা ভেবে এটা বলতে। মা হাসত । আমি এখন ভাবি তুমি কেন আরো দূর সমুদ্রের ওপারের দক্ষিণের কথা ভাবনি শুধু দেশের গন্ডির দক্ষিণ ভেবেছিলে। আর এখন আমাদের কস্ট দেওয়ার জন্য আমার মত করে কোন এক দক্ষিণাকাশে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে নিজেকে লুকিয়ে রয়েছ। আমি দূর আকাশে চেয়ে তোমার রাগ দেখার বৃথা চেস্টা করি, যদি কোন ভুল করে ফেলি। আর মনে মনে অনেক কস্ট নিয়ে হাসি আর ভাবি তুমি আর রাগ করতে পারবে না। দেখ কেমন লাগে ! আমাদের ছেড়ে তোমার চলে যাওয়া আজো আমরা লাঘব করতে পারিনি মা! এটা পারা যায় না এ ক্ষত জীবনে সবার প্রাপ্য ভেবেও কস্ট যায় না। মনে মনে ভাবি হয়ত, “তুমি ও বাবা এক সাথে আছ, ভাল আছ ! আর দূর আকাশ হতে আমাদের দেখছ আর্শিব্বাদ করছ”। দক্ষিণের ঐ তারা হতেই আজকের দিনে আমাদের মা আমাদের ছেড়ে চলে যান । দেখতে দেখতে কয়টা বছর কেটে গেল মা ছাড়া আমাদের! হ্যা, আজ আমাদেও মায়ের প্রয়াণ দিবস। সবার কাছে আর্শিব্বাদ কামনা করছি মা যেন স্বর্গবাসী হন।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

আরো পড়ুন : মেহ প্রমেহ ও প্রস্রাবে ক্ষয় রোগের কার্যকরী সমাধানসমূহ

আরো পড়ুন : গেজ, অশ্ব,পাইলসের সহজ চিকিৎসা