চাঁদপুর প্রতিনিধি :
চাঁদপুরে করোনা ভাইরাস সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। বুধবার (১১ মার্চ) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, জেলার মতলব উত্তরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ইতালি ফেরত একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা বেশ উন্নতির দিকে। তার শরীর থেকে জ্বর নেমেছে। বন্ধ হয়েছে পাতলা পায়খানাও। এখন স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছেন তিনি।
প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছে, আপাতত এ রোগীর দেহে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস নিয়ে এলাকায় কেউ যেন আতঙ্ক ছড়াতে না পারে সেই জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার বিকেলে ইতালি থেকে গ্রামের বাড়িতে আসা ৬০ বছরের এই বৃদ্ধকে করোনা ভাইরাস সন্দেহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই সময় জ্বর এবং পাতলা পায়খানায় ভুগছিলেন তিনি।
ডা. মিথে ন জানান, করোনাভাইরাস সন্দেহে আলাদা একটি ইউনিটে নিয়ে রাখা হয়েছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক আইইডিসিআরকে জানানো হয়। এরপর সোমবার রাতেই ওই বৃদ্ধের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) একজন টেকনোলজিস্ট।
তিনি আরো জানান, ঢাকা থেকে আইইডিসিআর-এর প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ইতালি থেকে বাংলাদেশে ফেরেন ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধ। তার বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের ভাঙাভিটা গ্রামে। বিগত দুই দশক ইতালিতে বসবাস করছেন তিনি।
মতলব উত্তর থানার ওসি নাসিরউদ্দিন মৃধা জানান, করোনা ভাইরাস নিয়ে এলাকায় কেউ যেন আতঙ্ক ছড়াতে না পারে তার জন্য ইতালি প্রবাসির বাড়িতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আশপাশের উৎসুক লোকজন সেখানে যেন ভিড় না করে সেই বিষয়টি কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে নজরদারি করা হচ্ছে।
এদিকে চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, জেলায় করোনাভাইরাস ঠেকাতে এবং যদি কেউ আক্রান্ত হয় এমন রোগীদের জন্য এক শ শয্যার আলাদা বিশেষ ইউনিট খোলা হয়েছে। এরমধ্যে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিভিন্ন ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালে ২১টি এবং সাতটি উপজেলায় আরো সাতটি করে মোট ৪৯টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিভিল সার্জন আরো জানান, শুধু তাই নয় এই সময় জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত এমন রোগীদের এখন থেকে আলাদা রাখার বিশেষ ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান জানান, মাস্ক ও স্যানিটাইজেশন সামগ্রী যেন কোনো অবস্থায় বাজার দরের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি না করে, সেই বিষয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে বাজার মনিটরিং এবং বাড়তি দামে বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় প্রচার ও প্রচারণারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।