প্রেমিক হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন প্রেমিকা

জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী :

পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে প্রেমিক নিপুণকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন প্রেমিকা সুমি। পরকীয়ার জেরে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ফাঁসের ব্ল্যাকমেইল করায় তাকে হত্যা করা হয়।

পরকীয়া প্রেমিক নিপুণকে হত্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমি। নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় ঘটে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। নিহত আল-কাইয়ুম নিপুণ নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে।

আদালতে সুমির জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিপুণের বাবা বিদেশে থাকায় পরিবার নিয়ে নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় মা, ভাই, স্ত্রী ও তার ১১ মাসের মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। ২০১২ সালে নিপুণের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাগ্যেরপাড়া গ্রামের মোকারমের স্ত্রী জেসমিন আক্তার সুমির পরিচয় হয়।

gif maker

পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরকীয়া সম্পর্ক চলাকালে নিপুণ তার মোবাইলে তাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করেন। ওই ভিডিও পরিবারকে দেখানো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ছয় মাস ধরে সুমির কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেয়া শুরু করেন নিপুণ।

ভিডিও নিয়ে নিপুণের ব্ল্যাকমেইলে দিন দিন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন সুমি। পরে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ মার্চ রাত সাড়ে ৯টায় সুকৌশলে নিপুণকে বাড়িতে ফোন করে শারীরিক সম্পর্ক ও টাকা নেয়ার কথা বলেন সুমি। এ সময় সুমি পানির সঙ্গে পাঁচটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ালে অচেতন হয়ে পড়েন নিপুণ।

এরপর রাত আড়াইটার দিকে বিছানার চাদর গলায় পেঁচিয়ে নিপুণকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন সুমি। পরে মরদেহ চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে বস্তাবন্দি করে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন।

http://picasion.com/
বিষয়টি নিশ্চিত করে পলাশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসিরউদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ভাই জাহিদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে সোমবার রাতে প্রেমিকা সুমির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে রোমহর্ষক বর্ণনা দেন সুমি।

এর আগে গত ৩ মার্চ সন্ধ্যায় নিপুণ নিখোঁজ হলে তার ছোট ভাই ৪ মার্চ নরসিংদী মডেল থানায় একটি জিডি করেন। পরে মোবাইলের কললিস্ট বের করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সুমির মোবাইলের একাধিক যোগসূত্র পায় পুলিশ।

পরে সুমিকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেয়া তথ্যমতে সোমবার সন্ধ্যায় সুমির বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে নিপুণের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।