মুগদা হাসপাতালের ‘অব্যবস্থাপনার’ ভিডিও ফেসবুকে, থানায় জিডি

নিউজ ডেস্ক :

রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে একের পর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আলোচনায় এক ব্যক্তি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অজ্ঞাত এই ব্যক্তি প্রোপাগান্ডা ছড়াতেই করেছে এমন ভিডিও। এ তথ্য উল্লেখ করে মুগদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে, অনুসন্ধানে ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে সময় সংবাদ। নিজেকে হাসপাতালটির রোগী জানিয়ে ওই ব্যক্তির দাবি, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, তবে ব্যবস্থাপনাগত কিছু ত্রুটি চোখে পড়েছে তার। আর এজন্য অনুতপ্ত তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মুগদা হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন কয়েকজন। এদের মধ্যে এক ব্যক্তি হাসপাতালটির সেবার মান নিয়ে তুলছেন নানা প্রশ্ন।

ভিডিওটির ৫০ সেকেন্ডে সংযুক্ত আরেকটি ক্লিপসে দেখা যায় হাসপাতালের বিছানায় পড়ে আছেন এক রোগী। পিপিই পরিহিত একজন এগিয়ে এসেছেন তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য। তবে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে এক ব্যক্তির দাবি, অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন ওই রোগী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হলে গত ৬ মে রাজধানীর মুগদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন হাসপাতালটির পরিচালক। জিডিতে ওই ব্যক্তিকে অজ্ঞাত উল্লেখ করা বলা হয়েছে, চিকিৎসা সেবা প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই অপতৎপরতা। তবে জিডির চারদিন পার হলেও এখনো ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

মুগদা থানার (ডিএমপি) ইন্সপেক্টর অপারেশন পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান জানান, আমরা তাকে চিনতে পারছি না, তবে বিষয়টা খতিয়ে দেখছি।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. শাহ গোলাম নবী তুহিন জানান, কেউ চিনতে পারছে না তাকে। সে বলেছে ৩শ’ রোগীর মধ্যে ফেইস মনে রাখা কঠিন।

এদিকে, সময় সংবাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে অভিযোগকারী ব্যক্তির। ওই ব্যক্তির সরবরাহকৃত নথিতে দেয়া যায়, করোনা শনাক্ত হওয়ার পর গত ২৪ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। আর সুস্থ হয়ে গত ০৪ মে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেন।

অভিযোগকারী ব্যক্তি বলেন, আমি কোনো অজ্ঞাত ব্যক্তি নই। আমি সাত তলায় ৭০৩ নম্বর রুমের ৬০নং বেডে চিকিৎসাধীন ছিলাম। ওই ভিডিওটি আসলে আমার করা নয়, কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নয়, তবে ম্যানেজমেন্ট আরেকটু ভালো হলে বেটার হয়। হাসপাতালে আমাকে যতটুকু সেবা দিয়েছে তাতে তো আমি সুস্থ।

তবে চিকিৎসা সেবায় গাফিলতি নেই জানিয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, এমন অভিযোগ চিকিৎসকসহ রোগীদের মাঝে ফেলতে পারে নেতিবাচক প্রভাব।

ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. শাহ গোলাম নবী তুহিন জানান, করোনা ডেডবডি সঙ্গে সঙ্গে ডিসপোজ করা যায় না। একটু সময় নিতে হয়। এছাড়া একটি প্রসিডিউর আছে। ৩২০ জন রোগী ডিল করছি প্রতিদিন ইনডোরে। এরমধ্যে কেউ ক্রিটিক্যাল, কেউ সিভিয়ার। এসি ছাড়া রুমে পিপিই পরে কতক্ষণ থাকা যায়। সবাই ৮ থেকে ১১ ঘণ্টা ডিউটি করছে। স্বাভাবিকভাবে এমন নেগেটিভ প্রোপাগান্ডা হলে সবাই প্রেসারের মধ্যে পড়ে।

সংক্রমণ আইনে হাসপাতালের ভিডিও প্রকাশ গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলছে কর্তৃপক্ষ।